পুজোয় ব্যবসা ৮২ হাজার কোটি টাকার, বড় বার্তা মমতার
নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার(Bengal) ১২ মাসে ১৩ পার্বণ। সেই সব পার্বণকে ঘিরে রাজ্যে মেলার সংখ্যাও কিছু কম নয়। পার্বণ ও মেলার সমন্বয়ে রাজ্যের আনাচে কানাচে উৎসবের রেশ লেগেই থাকে। রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকারও এই সব পার্বণ ও মেলাগুলিকেও উৎসবের আকারে তুলে ধরার কাজ শুরু করেছে। কেননা, ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’। আর তাই ওই সব উৎসবকে ঘিরে রাজ্যের অর্থনীতির বাড়বৃদ্ধিও ঘটে চলেছে। রাজ্য সরকার সেই ক্ষেত্রে লোকশিল্পীদেরও ওই সব উৎসবে নিজেদের শিল্পকলা তুলে ধরার সুযোগ করে দেওয়ার পাশাপাশি তাঁদের মাসিক ভাতার ব্যবস্থাও করে দিয়েছে। রাজ্যের এই সব উদ্যোগের জেরেই UNESCO কলকাতার দুর্গাপুজোকে Intangible Cultural Heritage of Humanity হিসাবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এবার সেই পুজোকে(Durga Puja 2023) ঘিরে বাংলার অর্থনীতি কতটা সমৃদ্ধ হয়েছে তা এদিন অর্থাৎ সোমবার রাজ্য বিধানসভায় তুলে ধরলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতা ক্ষমতায় আসার পরে পরে রাজ্যের বারোয়ারি দুর্গাপুজো কমিটিগুলিকে সরকারি আর্থিক অনুদান দেওয়া শুরু করেন। সেই অনুদান নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে যেমন মামলাও হয়েছে তেমনি তা নিয়ে সরব হয়েছে বিরোধীরাও। এদিন মুখ্যমন্ত্রী সেই সবের জবাব দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, পুজোর অনুদান বাবদ যে অর্থ খরচ করা হয়েছে রাজ্যের তরফে, তার থেকে পুজোকে কেন্দ্র করে বাণিজ্য হয়েছে বহুগুণ বেশি। তাতে উপকৃত হয়েছেন সাধারণ ব্যবসায়ী থেকে শিল্পীরা। পুজোয় কেমন ব্যবসা হয়েছে, সেই হিসাব আগেও এক বার দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। গত মাসেই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানিয়েছিলেন, পুজোয় ব্যবসা নিয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের একটি রিপোর্ট রয়েছে। সেই রিপোর্টের কথা বলতে গিয়ে মমতা বলেছিলেন, ‘ওদের দেওয়া প্রাথমিক হিসাব, গত বছর দুর্গাপুজোকে কেন্দ্র করে ৩৮ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছিল। এ বার তারা বলেছে, সেই পরিমাণ ৭২ হাজার কোটি টাকা।’ এরই পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, তাঁর ধারণা, এ বার ব্যবসার অঙ্ক ৮০-৮৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। এদিন বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘এ বার দুর্গাপুজোয় ৩০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। আর বাজার হয়েছে ৮২ হাজার কোটি টাকা। এর থেকেও জিএসটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে কেন্দ্র!’
এদিন মুখ্যমন্ত্রী হস্তশিল্পি থেকে লোকশিল্পী মায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের প্রসঙ্গেও বার্তা দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘আত্মনির্ভরশীলতা, আত্মসম্মান আমাদের কাজ করতে উদ্ধুদ্ধ করে। আমরা ক্ষমতায় এসে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংখ্যা বৃদ্ধি করেছি। আগের সেল্ফ হেল্প গ্রুপে যে সংখ্যক মহিলা যুক্ত ছিলেন, এখন তা আরও বেড়েছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের ২ হাজার কোটি বাম আমলে বিনিয়োগ ছিল। এখন ৯২ হাজার কোটি। সরকার সাহায্য করছে। পুরুষ ও মহিলার ভাগ দেখা হচ্ছে না। বাংলা এগিয়েছে। বাংলা মেলা দেখতে ভালোবাসে। কাল আমি নিজে দেখেছি লক্ষ লক্ষ মানুষ হস্তশিল্প মেলায়। আমাদের হাতের শিল্প আমাদের সম্পদ। যত খুচরো বিক্রি বাড়বে। তত ভাল হবে। স্বনির্ভর গোষ্ঠী আজ অনেক কাজ করছে। এটা আমাদের সেরা গ্রুপ। আমাদের ইকনমি গ্রোথ বেড়েছে। উৎকর্ষ বাংলার মাধ্যমে অনেক প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে৷ অনেক চাকরি হচ্ছে। খুব ভাল কাজ হচ্ছে৷ প্রশিক্ষণ দেওয়ায় আমরা দেশে এক নম্বর।’