সুকান্তের পদে শুভেন্দুর আগমনে তীব্র আপত্তি সঙ্ঘের
নিজস্ব প্রতিনিধি: নরেন্দ্র মোদি এদিন সন্ধ্যায় তৃতীয়বারের জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নিতে চলেছেন। সেই সঙ্গে শপথ নিতে চলেছেন তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরাও। বিকাল ৪টে পর্যন্ত পাওয়া তথ্য বলছে, এবার বাংলা থেকে ২জন সাংসদ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেতে চলেছেন। প্রথমজন শান্তনু ঠাকুর, যিনি আগে থেকেই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী হিসাবে কাজ করে চলেছেন এবং দুই বঙ্গ বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। শান্তনু জিতেছেন বনগাঁ থেকে আর সুকান্ত জিতেছেন বালুরঘাট থেকে। যেহেতু সুকান্ত কেন্দ্রের মন্ত্রী হচ্ছেন তাই সম্ভবত তাঁকে অপসারিত করা হবে বঙ্গ বিজেপির(Bengal BJP) সভাপতি পদ থেকে। আর সেখানেই প্রশ্ন উঠছে, সুকান্তকে সরানো হলে তাঁর পদে কে আসতে চলেছেন। বঙ্গ বিজেপিতে কান পাতলে দুটি নাম কানে আসছে, এক শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari) এবং দুই দিলীপ ঘোষ(Dilip Ghosh)। একই সঙ্গে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ বা RSS সূত্রে জানা যাচ্ছে, শুভেন্দুর বঙ্গ বিজেপির সভাপতির পদে আসা নিয়ে তীব্র আপত্তি আছে তাঁদের। সঙ্ঘ চাইছে দীর্ঘদিন ধরে সঙ্ঘের সঙ্গে যুক্ত এবং দুর্নীতির অভিযোগ মুক্ত কেউ বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হোন।
সুকান্ত কেন্দ্রে মন্ত্রী হলে বিজেপির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী তাঁকে রাজ্য সভাপতির পদ ছাড়তে হবে। কেননা বিজেপিতে কেউই দুই পদে থাকতে পারেন না। তাই খুব সম্ভবত তাঁকে দলের রাজ্য সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিতে বলা হবে। আর সেখানেই সব থেকে বড় সম্ভাবনা থাকছে, শুভেন্দুর বঙ্গ বিজেপির সভাপতি হয়ে ওঠার সম্ভাবনা। কেননা রাজ্যজুড়ে বিজেপির খারাপ ফলের মধ্যেও নিজের জেলা পূর্ব মেদিনীপুরের দু’টি আসনেই ‘পদ্ম’কে জয় এনে দিয়েছেন শুভেন্দু। তাই মোদি-শাহ(Amit Shah)-নাড্ডারা তাঁকে বেছে নিতে পারেন। কিন্তু শুভেন্দুর নামে যেমন তীব্র আপত্তি রয়েছে সঙ্ঘের তেমনি বঙ্গ বিজেপির একতা বড় অংশই চরম ক্ষুব্ধ শুভেন্দুর বিরুদ্ধে। তাঁকে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি করলে ২৬’র ভোটে বাংলায় বিজেপির ফল খারাপ হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। আর তাই দিলীপ ঘোষের নাম বঙ্গ বিজেপির সভাপতি পদের জন্য ঘোরাফেরা করছে। তাছাড়া দিলীপ দীর্ঘদিনের সঙ্ঘ কর্মী। সঙ্ঘের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই তিনি বাংলায় দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন। তার থেকেও বড় কথা দিলীপ এখনও পর্যন্ত বাংলার মাটিতে বিজেপির সব থেকে সফলতম সভাপতি। তাই তাঁর কথা একদম অগ্রাহ্যও করবে না বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।
তবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভেন্দুকে এখনই বিরোধী দলনেতার পদ থেকে সরানো হচ্ছে না। একই সঙ্গে তাঁকে বঙ্গ বিজেপির সভাপতি পদ থেকেও সরানো হচ্ছে না। তবে দিলীপ ঘোষকে মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে প্রার্থী করা হচ্ছে। তিনি জিতলে তাঁকে বিরোধী দলনেতা করা হতে পারে। সেক্ষেত্রে সেই সময় শুভেন্দু দলের রাজ্য সভাপতি পদে আসতে পারেন। আপাতত ততদিন সুকান্তই হয়তো দলের রাজ্য সভাপতি পদে থেকে যাবেন। একই সঙ্গে বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি পদেও রদবদল হতে পারে। সেখানে পুরুলিয়ার দু’বারের সাংসদ জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাতোকে আনা হতে পারে। পাশাপাশি লকেট চট্টোপাধ্যায়কে দলের মহিলা শাখার নেত্রী হিসাবে তুলে আনা হতে পারে। মনোজ টিগ্গাকেও দলের আদিবাসী সংগঠনের দায়িত্ব দেওয়া হতে পারে। কিংবা সেই পদে আনা হতে পারে জন বার্লাকে। নিশীথ প্রামাণিককে দলের তপশিলী সেলের ইনচার্জ করা হতে পারে।