সায়ন্তিকাদের ধর্না অব্যাহত, বজায় থাকল শপথ জটিলতাও
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্য রাজনীতিতে অব্যাহত তৃণমূলের দুই নবনির্বাচিত বিধায়কের শপথ বিতর্ক। এখনও রাজ্যপাল(Governor of West Bengal) সি ভি আনন্দ বোস(C V Anand Bose) রাজ্য বিধানসভা ভবনে এসে দুই বিধায়ককে শপথ বাক্য পাঠ করাতে রাজি হননি। আবার দুই বিধায়কও রাজভবনে গিয়ে শপথ বাক্য পাঠ করতে চাইছে না। এদিন অর্থাৎ সোমবার রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ড বিধান চন্দ্র রায়ের জন্ম-মৃত্যুদিন উপলক্ষে নির্দিষ্ট কর্মসূচি থাকা সত্ত্বেও বিধানসভা ভবন চত্বরে বি আর আম্বেদকারের মূর্তির পাদদেশে ধর্না চালিয়ে যাচ্ছেন তৃণমূলের(TMC) দুই নবনির্বাচিত বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রেয়াত হোসেন সরকার। আবার রাজ্যপাল যাতে বিধানসভা ভবনে(West Bengal State Legislative Assembly) এসে নতুন দুই বিধায়ককে শপথ বাক্য পাঠ করান তার জন্য রাজ্যপালকে চতুর্থবারের জন্য চিঠি দিয়েছেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ(Speaker) বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়(Biman Banerjee)। এদিকে এদিনই আবার বিধানসভা ভবনের বাইরের সিঁড়িতে ধর্নায় বসেছেন বিজেপির(BJP) বিধায়কদের একাংশ। কিন্তু তাঁদের সেই ধর্নায় অনুমতি দেননি অধ্যক্ষ।
দুই দলের দুই বিধায়কদের ধর্না নিয়ে এদিন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘অনুমতি ছাড়া বিজেপি বিধায়করা বিক্ষোভ করছেন। আমি ওদের অনুমতি দিইনি। কেন বসেছে জানি না। ব্যবস্থা নেওয়া যায় কী ভাবে, দেখছি। মার্শালকে বলব বিষয়টি দেখতে। আজ বিধান চন্দ্র রায়ের জন্মদিন। আজকের দিনে মাল্যদান অনুষ্ঠানে না এসে ওনারা ধর্না করছেন। আসা উচিত ছিল। তৃণমূল কংগ্রেসের দুই বিধায়ক আগে আবেদন করেছিলেন তাই ওদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।’ একই সঙ্গে অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, ‘রাজ্যপাল আজ আসুন দুই বিধায়কের শপথ গ্রহণ করান রাজ্যপাল অযথা জেদাজেদি করছেন শপথ নিয়ে। গণপিটুনি নিয়ে আইন বিধানসভায় পাশ হয়েছে কিন্তু রাজ্যপাল সেই বিল সই করেননি। আমি চাই আজই শপথ হোক বিধায়কদের। সারা রাজ্যের মানুষ এটা দেখছেন। তামাশার জায়গা করে দিচ্ছেন। রাজ্যপালের এটা বোঝা উচিত। এখনও আমি তাঁর কাছে সৌজন্যের সঙ্গে আবেদন করব, আপনি আসুন ওদের শপথবাক্য পাঠ করান। আমি আপনাকে গেট থেকে রিসিভ করে বিধানসভায় নিয়ে আসব।’
রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের অনড় অবস্থানের মুখে তৃণমূলের দুই বিধায়কেরও বক্তব্য, ‘উনি বিধানসভায় আসুন। আর বিধানসভাতেই শপথবাক্য পাঠ করান।’ এদিনও দুই বিধায়ক রাজ্যপালের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন। সে চিঠির জেরে আবার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘ওদের চিঠির প্রেক্ষিতে আমিও আজ চিঠি লিখব। আমি আগেই বলেছি আবারও বলছি, রাজ্যপাল আসুন বিধানসভায় এবং ওদের শপথবাক্য পাঠ করান। আর যদি ওনার এখানে আসতে অসুবিধা থাকে তাহলে পরিষদীয় গণতন্ত্রের কনভেশন অনুযায়ী স্পিকারের ওপর দায়িত্ব দিন শপথবাক্য পাঠ করানোর।’ অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনা নিয়ে আক্ষেপ করে নিজে রাজ্যপালকে চিঠি লিখে বিধানসভায় আসার আবেদন করেছেন।
এছাড়া বিকল্প কোনও পথ খুঁজে পাওয়া যায় কি না তা নিয়ে ভাবনা রয়েছে তাঁর। আইনি পরামর্শ নেওয়া চলছে বলেও খবর। ইতিমধ্যেই রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের সঙ্গে কথা বলেছেন অধ্যক্ষ। বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, ‘ওরা বিধানসভার সদস্য তাই এখানেই ওদের শপথ নেওয়া বাঞ্ছনীয়। এটা এর আগেও একাধিকাবার হয়েছে। রাজ্যপাল থাকাকালীন জগদীপ ধনখড় বিধানসভায় এসে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় –সহ আরও দু’জনকে শপথবাক্য পাঠ করিয়েছিলেন। ওর অসুবিধা কোথায়? এটা তো জেদাজেদির বিষয় নয়। সাংবিধানিক প্রধান হিসাবে নিজের দায়িত্ব নিয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত।’