For the best experience, open
https://m.eimuhurte.com
on your mobile browser.
OthersWeb Stories খেলা ছবিঘরতৃণমূলে ফিরলেন অর্জুন সিংবাংলাদেশপ্রযুক্তি-বাণিজ্যদেশকলকাতাকৃষিকাজ বিনোদন শিক্ষা - কর্মসংস্থান শারদোৎসব লাইফস্টাইলরাশিফলরান্নাবান্না রাজ্য বিবিধ আন্তর্জাতিককরোনাএকুশে জুলাইআলোকপাতঅন্য খবর
Advertisement

মমতার সভায় ভিড় দেখে মাথায় হাত গেরুয়ার, পরিবর্তনের ঝলক জঙ্গলমহলে

এদিন রায়পুরে দেখা গিয়েছে মমতার সভাস্থল কানায় কানায় পূর্ণ, আশেপাশের বাড়ির ছাদে, পাঁচিলেও উপচে পড়ছে ভিড়। আর এটাই উদ্বেগ বাড়িয়েছে বিজেপির।
03:19 PM Apr 08, 2024 IST | Koushik Dey Sarkar
মমতার সভায় ভিড় দেখে মাথায় হাত গেরুয়ার  পরিবর্তনের ঝলক জঙ্গলমহলে
Courtesy - Facebook
Advertisement

নিজস্ব প্রতিনিধি: গতকাল অর্থাৎ রবিবার সভা শুরু হওয়ার কথা ছিল বেলা ১২টা থেকে। কিন্তু যার জন্য সভায় অপেক্ষা আমজনতার, তিনি এলেনই ২ ঘন্টা বাদে। জনতা কিছু সভা ছেড়ে চলে যাননি। এদিন অর্থাৎ সোমবার তিনি নির্ধারিত সময়েই সভায় এলেন। কানায় কানায় ভর্তি সেই সভা দেখে কপালে ভাঁজ পড়ে গেল গেরুয়া কর্তাদের। মনে তাঁদের ঘুরছে প্রশ্ন, ‘এত ভিড় কেন’। আসলে এই ভিড় বলে দিচ্ছে, ২৪’র ভোটে(Loksabha Election 2024) জঙ্গলমহলের(Jungalamahal) ৫ আসনেই পরিবর্তন ঘটতে চলেছে। পদ্মফুল সরিয়ে ঘাসফুলের প্রত্যাবর্তন শুধুই সময়ের অপেক্ষা মাত্র। নজরে জঙ্গলমহল। নজরে ২৪’র নির্বাচন। নজরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। গতকাল এবং এদিন, পর পর দুই দিন ছিল তাঁর দুই সভা জঙ্গলমহলের বুকে। আর সেই দুই সভায় আমজনতার ঢল দেখে উদ্বেগ ছড়িয়েছে গেরুয়া শিবিরে। কেননা ৫ বছর আগে এই জনতার ঢলই তো তাঁরা দেখেছেন পদ্মের সভায়। ৫ বছরেই সেই ছবি গিয়েছে উল্টে।

Advertisement

জঙ্গলমহলের ৫টি লোকসভা কেন্দ্রেই একসময় ছিল লালদুর্গ। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, বিষ্ণুপুর, মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রাম এই ৫টি লোকসভা কেন্দ্রে দশকের পর দশক আধিপত্য কায়েম রেখেছিল বামেরা। কিন্তু কালের নিয়মে বামেরা বাংলার ক্ষমতা থেকে সরে যেতেই এই ৫টি লোকসভা কেন্দ্র চলে এসেছিল তৃণমূলের(TMC) দখলে। ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এই ৫ কেন্দ্রই গিয়েছিল তৃণমূলের দখলে। কিন্তু ঠিক তার ৫ বছর বাদে উনিশের লোকসভা নির্বাচনে এই ৫ কেন্দ্রেই ফুটেছিল পদ্মফুল। কিন্তু এবারে জঙ্গলমহলের বুকে ফের ফিরে এসেছে পুরাতন ছবি। তৃণমূলকে ঘিরে, জোড়াফুলকে ঘিরে, সর্বোপরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ঘিরে জঙ্গলের জনতার উচ্ছ্বাস। এদিন রায়পুরে দেখা গিয়েছে মমতার সভাস্থল কানায় কানায় পূর্ণ, আশেপাশের বাড়ির ছাদে, পাঁচিলেও উপচে পড়ছে ভিড়। এই ভিড়ই বলে দিচ্ছে, জঙ্গলমহলের জনতা শুধু প্রহর গুণছে পরিবর্তনের পক্ষে তাঁদের মত তুলে ধরতে। আর সেটাই উদ্বেগ বাড়িয়েছে বিজেপির(BJP)। উদ্বেগ বাড়িয়েছে মমতার বক্তব্যও। এদিনের সভা থেকে মমতা সরব হয়েছে সারি আর সারনা ধর্মের স্বীকৃতি নিয়ে, সরব হয়েছেন CAA নিয়ে, সরব হয়েছেন, অভিন্ন দেওয়ানি বিধি নিয়েও।

Advertisement

এদিনের সভা থেকে মমতা বলেন, ‘আগে বাঁকুড়া ছিল অশান্তির জায়গা। জঙ্গলমহল ছিল সন্ত্রাসের জায়গা। মানুষ বেরোতে পারত না, আর গুন্ডাদের দৌরাত্ম্য চলত। আমরা জঙ্গলমহলকে শান্ত করেছি। এটা আপনাদেরই অবদান। আদিবাসীদের জমি যাতে না কাড়া যায় তার জন্য আমরা আইন করেছি। বিষ্ণুপুরকে স্বাস্থ্যজেলা। বাঁকুড়ার চারটি মাল্টি স্পেশালিটি হাসপাতাল, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক করে দিয়েছি। রঘুনাথপুরে ৭৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। দেড় লক্ষ ছেলে মেয়ে চাকরি পাবে। বরজোড়াতেও হচ্ছে। স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের জন্য জেলায় জেলায় মার্কেট করে দেব। আমাদের বাজেটে বলা আছে। আপনাদের জিনিস মার্কেটে বিক্রি করতে পারবেন। ২৫ হাজার টাকা দেওয়া হয় সেলফহেল্প গ্রুপ চালু করার জন্য। কেন্দ্রের নীতির ফলে আদিবাসীদের ওপর অত্যাচার হচ্ছে। মণিপুর, হাথরস, বিলকিসের পরিবারকে দেখেছেন সকলে। সাক্ষী ভারতকে সোনা এনে দিয়েছে। তাঁর সঙ্গেও বিজেপির নেতারা খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে। সারি আর সারনা ধর্মের স্বীকৃতি কেন্দ্রকে দিতে হবে। আমরা চিঠি দিয়েছি, যা করার করেছি। তারপরও করছে না। আমরা কুরুক ভাষা, অলচিকিকে স্বীকৃতি দিয়েছি। জয় জোহার নামে পেনশন করেছি, তফশিলি বন্ধু পেনশন দিচ্ছি। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার দিচ্ছি। ৬০ বছর হয়ে গেলেও টাকা পাচ্ছেন। সারা জীবন টাকা পাবেন। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার সবার জন্য। শিক্ষাবন্ধুদের মাইনে বেড়েছে, এমনকী সরকারি কর্মীদের ৪ শতাংশ ডিএ বাড়িয়েছি। মে মাসে আরও ৪ শতাংশ দেব। কেন্দ্র আমাদের টাকা দেয় না। ৬ লক্ষ ৬৫ হাজার কোটি আমাদের টাকা নিয়ে গিয়েছে। ১ লক্ষ ৮৪ হাজার কোটি টাকা দেয়নি। তারপরও সবার মাইনে বাড়ানো হয়েছে। লক্ষ্মীর ভাণ্ডার ৫০০ থেকে ১ হাজার করা হয়েছে। এটা চলবে।’

এর পাশাপাশি মমতা বলেছেন, ‘১১ লক্ষ বাড়ির তালিকা দিয়েছিলাম। কোথাও কালির দাগ ছিল না। দিল না টাকা। টিম এল, জিজ্ঞাসা করল, রিপোর্ট দিল, আমি প্রধানমন্ত্রীকে তিনবার মিট করলাম কই টাকা এল না। এখন বিজেপির কল সেন্টার থেকে ফোন করে বলছে ঘর চাইছে দরখাস্ত করতে। আমাদের লিস্ট নিয়ে এসব করছে। বলছে দুর্নীতি। কোথায় সেটা প্রমাণ করে দেখাও। কেন গরু আসে উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান থেকে টাকা খেতে খেতে। বাংলায় কেন ঢোকে। চাই না বাংলা দিয়ে আসুক। ওটা বিএসএফের আওতায়। কেন্দ্রের আওতায়। নিজেরা সামলাতে পার না? ক্যা আর এনআরসি। মাছের মাথা আর লেজু। মাথাটা হল ক্যা, লেজুটা হল এনআরসি। যেই আবেদন করলেন সঙ্গে সঙ্গে এনআরসিতে পড়ে গেলেন। আপনাকে ডিটেনশন ক্যাম্পে থাকতে হবে। আপনার সব পরিচয় বন্ধ। আপনি তখন বিদেশি হয়ে গেলেন। ভুল করেও ক্যাতে নাম লেখাবেন না। আমরা ক্যা করতে দেব না, মানুষের পরিচয় কাড়তে দেব না। আমরা সবাই নাগরিক। আরেকটা বিলও পাশ করিয়ে নিয়েছে কি না কে জানে। ১৪৭ জন সাংসদকে বাদ দিয়ে অভিন্ন দেওয়ানি। আপনারা জানেন হিন্দুদের মধ্যেও অনেক সাবকাস্ট আছে। ব্রাহ্মণ আছেন, শূদ্র আছেন, কায়স্থ আছেন। আদিবাসীদের বিয়ের ধরন অন্য। খ্রিস্টানদের, মুসলিমদের ধরন আবার অন্য। এটার মানে হচ্ছে আপনার নিজস্বতা বলে কিছু থাকবে না, আইডেনটিটি থাকবে না।’

Advertisement
Tags :
Advertisement