১০ কোটির মানহানির মামলা ঠুকতেই বদলে গেল শান্তনুর সুর
নিজস্ব প্রতিনিধি: বিজেপির(BJP) আইটি সেলের ইনচার্জ তথা পদ্মনেতা অমিত মালব্যের(Amit Malabya) বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলেছিলেন বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি রাহুল সিনহার ভাই শান্তনু সিনহা(Shantanu Sinha)। নিজের ট্যুইটে শান্তনু লিখেছিলেন, ‘অমিত মালবিয়া কি এখনও কলকাতার ফাইভ স্টার হোটেলে অপেক্ষা করছেন কখন বঙ্গ নেতৃত্ব সুন্দরী ললনা সরবরাহ করবে? বঙ্গ নেতৃত্বের মধ্যে এখন কি প্রতিযোগিতা বন্ধ হয়েছে, কে কত সুন্দরী সরবরাহ করে সভাপতির পোস্টটা দখল করবে? অনুরোধ, প্রতিযোগিতা করুন কর্মী সমর্থকদের পাশে দাঁড়ানোর। অমিত মালবিয়া বা দিল্লী থেকে পাঠানো অবসারভারদের সুন্দরী ললনা সরবরাহ করে সভাপতি সম্পাদককের পোস্টটা দখলের জন্য প্রতিযোগিতা নয়। ওরা কিন্তু আপনাদের আশ্বাসে ও আপনাদের কথা বিশ্বাস করে জীবনের ঝুঁকি নিয়েছিল। বঙ্গ নেতৃত্ব ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে থাকবেন না, প্লিজ।’ সেই ট্যুইটের জেরে অমিত আদালতে শান্তনুর বিরুদ্ধে ১০ কোটি টাকার মানহানির মামলা দায়ের করেন। সেই মামলা দায়ের হতেই সুর বদলে গিয়েছে শান্তনুর। এখন তাঁর দাবি, তিনি মালব্যকে আদতে সতর্ক করেছিলেন, তাঁর মানহানি করেননি।
শান্তনুর নয়া দাবি যে, তিনি অমিত মালব্যের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেননি। বরং তাঁকে হানিট্র্যাপ করা হতে পারে বলে সতর্ক করার চেষ্টা করছিলেন। আর সেটা অন্য কোনও দলের নেতারা নন, বরং বিজেপির নেতারাই করতে পারেন বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। মঙ্গলবার সকালে ফেসবুকে পোস্ট করে এমনই দাবি করেছেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের(RSS) সদস্য শান্তনু সিনহা। তিনি দাবি করেছেন, মালব্যের ভাবমূর্তি নষ্ট করার কোনও অভিপ্রায় ছিল না তাঁর। অথচ ঘোলাজলে মাছ ধরার চেষ্টা করছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। তাঁর ফেসবুক পোস্টকে হাতিয়ার করে লোকসভা নির্বাচনে নিজেদের ব্যর্থতার দিক থেকে নজর ঘোরানোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন শান্তনু। সেইসঙ্গে তাঁর পোস্টে বঙ্গ বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথাগত রায়ের বলা ‘কামিনী-কাঞ্চন’-রও উল্লেখ করেছেন। তাঁর দাবি, তথাগতই বিষয়টি সকলের আগে জনসমক্ষে এনেছিলেন। আদতে ‘মালব্য এবং বিজেপির বিরুদ্ধে ঘৃণা ছড়াচ্ছে ভারতের নিকৃষ্টতম এবং সবথেকে দুর্নীতিবাজ রাজনৈতিক দল কংগ্রেস’। অথচ তাঁর ফেসবুক পোস্টের কোথাও মালব্যের বিরুদ্ধে তিনি যৌন হেনস্থার অভিযোগ করেননি।
শান্তবুর দাবি, লোকসভা নির্বাচনে ভরাডুবির পরে বিজেপির নেতারা নিজেদের পদ আঁকড়ে থাকতে মালব্যকে হানিট্র্যাপের জালে জড়ানোর চেষ্টা করতে পারেন। কোন কোন নেতার বিরুদ্ধে তাঁর সন্দেহ ছিল, তা অবশ্য জানাননি শান্তনু। নিজের পোস্টে শান্তনু দাবি করেছেন যে কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সিদ্ধার্থনাথ সিং, প্রদীশ জোশী, শিবপ্রসাদদের আমলে হানিট্র্যাপের এই তিক্ত অভিজ্ঞতা আছে। কৈলাস, প্রদীপ, শিবপ্রসাদের বিরুদ্ধে এখনও মামলা ঝুলে আছে। এমনকি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একাধিকবার হুমকি দিয়েছেন যে হানিট্র্যাপের ক্লিপিং ফাঁস করে দেবেন। তবে সেখানেই থেমে থাকেননি শান্তনু। তাঁর বিরুদ্ধে যে মানহানির মামলা করেছেন মালব্য এবং আইনি চিঠি পাঠিয়েছেন বিজেপির তথ্যপ্রযুক্তি সেলের প্রধান, সেটার ছবি প্রকাশ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। লোকসভা নির্বাচনে নিজের ব্যর্থতার দায় ঢাকতে তাঁর ওপর চাপ তৈরি করার কৌশল নিয়েছেন বঙ্গ বিজেপির নেতারা। তিনি দাবি করেছেন, সংবাদমাধ্যমের একাধিক প্রতিনিধি তাঁকে জানিয়েছেন যে ওই আইনি চিঠি ছড়িয়ে দেওয়ার পিছনে জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়ের হাত আছে। তাঁর কাছে অডিয়ো ক্লিপ আছে বলেও দাবি করেছেন শান্তনু।