OthersWeb Stories
খেলা | অন্যান্যক্রিকেটফুটবল
ছবিঘরতৃণমূলে ফিরলেন অর্জুন সিংবাংলাদেশপ্রযুক্তি-বাণিজ্যদেশকলকাতাকৃষিকাজ
বিনোদন | ধারাবাহিকটলিউডবলিউডহলিউড
শিক্ষা - কর্মসংস্থান
শারদোৎসব | মহালয়াবনেদিবাড়ির পুজোপুজো ভ্রমণপুজো বাজারতাহাদের কথাতারাদের পুজোগ্রামবাংলার পুজোআজকের দশভূজা
লাইফস্টাইলরাশিফলরান্নাবান্না
রাজ্য | হুগলিহাওড়ামুর্শিদাবাদমালদহবীরভূমবাঁকুড়াপূর্ব মেদিনীপুরপূর্ব বর্ধমানপুরুলিয়াপশ্চিম মেদিনীপুরপশ্চিম বর্ধমাননদিয়াদার্জিলিংদক্ষিণ দিনাজপুরদক্ষিণ চব্বিশ পরগনাঝাড়গ্রামজলপাইগুড়িকোচবিহারকালিম্পংউত্তর দিনাজপুরউত্তর চব্বিশ পরগনাআলিপুরদুয়ার
বিবিধ | আনন্দময়ী
আন্তর্জাতিককরোনাএকুশে জুলাইআলোকপাতঅন্য খবর

শুভজিৎ ক্যান্সারে একটি হাত হারিয়ে এবার মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী

04:23 PM Feb 05, 2024 IST | Subrata Roy

নিজস্ব প্রতিনিধি,শান্তিপুর: ক্যান্সারে কেড়ে নিয়েছে ডান হাত, মাত্র দু মাসেই বাঁহাতকে লেখাপড়ায় বস মানিয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শুভজিৎ(Shubhojit)। সোমবার ক্যান্সার দিবসে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াইকে কুর্নিশ জানাই আমরাও। সোমবার বিশ্ব ক্যান্সার দিবস। ক্যান্সারে আক্রান্ত এক মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই তুলে ধরলাম আমরা।কথায় বলে ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। মনের জোর শারীরিক অক্ষমতাকেও যে হার মানায় তা আরো একবার প্রমাণ করে দেখালো শান্তিপুর (Shantipur)হরিপুর পঞ্চায়েতের বাসিন্দা এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শুভজিৎ বিশ্বাস। ক্যান্সারের কারণে আগেই ডান হাত হারিয়ে বাম হাত দিয়েই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে সে। ডান হাতে চলে যেতে ই দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই শুরু করে এই খুদে পড়ুয়া । বাঁ হাতে লেখা অভ্যাস গড়ে তোলা মাত্র তিন মাসে । মাঝেমধ্যে রাত্রে ঘুমের মধ্যে চিৎকার করে বলতো, আমি পারবো , আমাকে পারতেই হবে । ঘুম ভাঙতেই ভেঙে পড়তো সামনে পরীক্ষার কথা ভেবে, এবার কি হবে ? কখনো ইটের টুকরো দিয়ে দেয়ালে লিখতো কখনো বা পেন্সিল দিয়ে ভাইয়ের স্লেটে।

কখনো কখনো কেঁদেও ফেলতো শুভজিৎ, অভাবের তাড়নায় মা বাবা দীর্ঘ দুই বছর কাছে না থাকা সত্ত্বেও মামা মাসিরাই অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে তাকে।পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো নয় শুভজিতের।বাবা ইন্দ্রজিৎ বিশ্বাস আগে ছিলেন একজন হস্তচালিত তাঁতি। বর্তমানে তাঁতের অবস্থা শোচনীয় হওয়ার কারণে তিনি এখন ঢালাইয়ের নির্মাণ কর্মী হিসেবে কাজ করেন কলকাতায়(kolkata)। মা শিখা বিশ্বাস অন্যের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করেন। দুই দিদি বৈবাহিক সূত্রে থাকেন অন্যত্র। তাই বাধ্য হয়েই পার্শ্ববর্তী মাসির বাড়ি রেখা বিশ্বাসের বাড়িতে ঠাঁই হয় তার। মামা অরিজিৎ বিশ্বাস জানান, দীর্ঘ দুই বছর ধরে শুভজিৎকে চিকিৎসা করানোর কারণে ধার দেনায় জর্জরিত হয়ে কলকাতায় থেকেই কাজ করেন দিদি জামাইবাবু। তাদের সামান্য একটি ভাঙাচোরা ঘর সহ বাড়ি ছাড়া সহায় সম্বল আর কিছুই নেই। তবে আমরা আছি, শুভজিৎ এর পাশে। ঈশ্বরের প্রতি ওর বিশ্বাস অগাধ ।তাই সফলতা পাবেই।

মাসি শিখা বিশ্বাস জানান,আজ থেকে প্রায় ছয় বছর আগে একটি সাইকেল দুর্ঘটনায় আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে ক্যান্সার হয়ে গিয়ে শুভজিৎ ভর্তি হয় কলকাতার আরজি কর হাসপাতালে। এরপর পরিস্থিতি খারাপ দেখে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যাঙ্গালোরে(Bangalore)। তবে শত চেষ্টা করেও বাঁচানো যায়নি তার ডান হাত। পচন অত্যন্ত বেড়ে যাওয়ার ফলে কৃষ্ণনগরের একটি বেসরকারি নার্সিংহোম থেকে তার ডান হাত কেটে বাদ দেওয়া হয় গত ডিসেম্বর মাসে। এরপরেই শুরু হয় তার আসল লড়াই। তার কারণ হাতের অস্ত্রোপচারের আগে পর্যন্ত সে অন্যান্যদের মতো স্বাভাবিকভাবেই ডান হাত দিয়ে পরীক্ষা দেয়। দশম শ্রেণীর দ্বিতীয় পরীক্ষা দিয়েছে এভাবেই । কিন্তু ডিসেম্বর মাসে অস্ত্রপ্চার করে তার ডান হাত কেটে বাদ দেওয়া হয়। টেস্ট পরীক্ষা সে দিতে পারিনি সদ্য অস্ত্র প্রচারের কারণে । ডান হাত চলে যাওয়ার পর থেকেই চিন্তিত হয়ে ওঠে শুভজিতের পরিবার। তবে দমে যাইনি শুভজিৎ।

মাত্র দুমাস বাকি মাধ্যমিক পরীক্ষা। শুরু হয় বা হাত দিয়ে লেখার অভ্যাস । প্রথমদিকে লিখতে অসুবিধা হলেও ধীরে ধীরে ডান হাতের মতোই সাবলীল ভাবে বাম হাত দিয়ে লিখতে শুরু করে সে। এরপর মাধ্যমিক পরীক্ষাতেও ইতিমধ্যেই আর পাঁচটা স্বাভাবিক পরীক্ষার্থীর মতোই এখন সে পরীক্ষা দিচ্ছে, তবে বাম হাত দিয়ে।তার এই অদম্য জেদকে কুর্নিশ জানিয়েছেন শিক্ষক শিক্ষিকা থেকে শুরু করে সকলেই। শুধু তাই নয়, তার লেখা মুক্তাক্ষর এবং গতি দেখে তাজ্জব শুভজিৎ এর ফুল হরিপুর বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকারা সহ নৃসিংহপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে পরীক্ষকরাও। তার অদম্য ইচ্ছাকে আমরা কুর্নিশ জানাই তার মাধ্যমিক পরীক্ষার ফল শুভ হোক এই কামনা করি ঈশ্বরের কাছে ।

Tags :
Shantipur Madhyamik CandidateShantipur Shubhrojit
Next Article