For the best experience, open
https://m.eimuhurte.com
on your mobile browser.
OthersWeb Stories খেলা ছবিঘরতৃণমূলে ফিরলেন অর্জুন সিংবাংলাদেশপ্রযুক্তি-বাণিজ্যদেশকলকাতাকৃষিকাজ বিনোদন শিক্ষা - কর্মসংস্থান শারদোৎসব লাইফস্টাইলরাশিফলরান্নাবান্না রাজ্য বিবিধ আন্তর্জাতিককরোনাএকুশে জুলাইআলোকপাতঅন্য খবর
Advertisement

উত্তরবঙ্গে হাতির হানায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬, আশ্বাস ক্ষতিপূরণের

উত্তরবঙ্গে হাতির হানায় মৃত ৬। এই ৬জনের মধ্যে ২জনকে বাড়ি থেকে টেনে বের করে এনে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে পায়ে মাথা থেঁতলে খুন করেছে হাতির দল।
10:14 AM Nov 04, 2023 IST | Koushik Dey Sarkar
উত্তরবঙ্গে হাতির হানায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৬  আশ্বাস ক্ষতিপূরণের
Courtesy - Google
Advertisement

নিজস্ব প্রতিনিধি: চলতি সপ্তাহের গত বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত উত্তরবঙ্গের(North Bengal) কোচবিহার(Coachbehar) ও আলিপুরদুয়ার(Alipurduyar) জেলায় হাতির হামলায় ৬জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। বনদফতর(Forest Department) থেকে জানানো হয়েছে, জলদাপাড়া জঙ্গল থেকে বেড়িয়ে আসা ৬টি দামাল হাতির দল এই মৃত্যুর জন্য দায়ী। কার্যত তাঁদের হানাদারিতেই ৬জনের মৃত্যুর(Death due to Elephant Attack) ঘটনা ঘটেছে। সব থেকে চমকে দেওয়ার মতো ঘটনা হলে এই ৬জনের মধ্যে ২জনকে বাড়ি থেকে টেনে বের করে এনে শুঁড় দিয়ে পেঁচিয়ে পায়ে মাথা থেঁতলে খুন করেছে হাতির দল। এই নৃশংস ঘটনার সাক্ষী এর আগে কখনওই হয়নি উত্তরবঙ্গের মানুষ। ডুয়ার্সের বুকে থাকা জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ার জেলায় হাতির হানায় মৃত্যুর খবর সামনে এলেও কোচবিহারের বুকে সেভাবে হানাদারির ঘটনা খুব কমই ঘটে। এবার শুধু যে হানাদারির ঘটনা ঘটেছে তাই নয়, একদিনে ৪জনের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। কার্যত গোটা জেলায় এখন তীব্র আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে হাতির দলের এই হামলাবাজির ঘটনায়।

Advertisement

বনদফতরের দাবি, যে ৬টি খুনী হাতি এই হামলার ঘটনা ঘটিয়েছে তারা জলদাপাড়া জঙ্গলে(Jaldapara National Park) থাকে। বুধবার সন্ধ্যায় তারা জঙ্গল থেকে বেড়িয়ে আসে। সেদিন রাতেই আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাটে তারা ভুট্টার খেতে হানা দেয়। সেই সময় তাদের তাড়াতে গিয়ে প্রাণ হারান রাজনাথ বর্মন(৫০) ও প্রেমনাথ ওরাওঁ(২৪) নামে এক যুবক। দুইজনকেই শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড় মেরে খুন করে হাতির দল। এরপর তারা রওয়ানা দেয় কোচবিহারের দিকে। বৃহস্পতিবার দুপুরের মধ্যেই তারা পৌঁছে যায় দিনহাটার মাতালহাটে। সেখানে বিভিন্ন এলাকা দাপিয়ে তারা ঘাঁটি গাড়ে স্থানীয় একটি জলাশয়ে। খবর পেয়ে বনদফতরের কর্মীরা হাতির পালকে জঙ্গলে ফেরাতে অভিযানে নামেন। সেখান থেকে তাড়া খেয়ে হাতির দল চলে আসে শীতলকুচি এলাকায়। সেখানেই শুক্রবার ভোরে বড় গদাইখোড়ায় হাতির হামলার মুখে পড়েন আব্দুল মজিত মিয়াঁ(৪২)। তাকে শুঁড়ে তুলে আছাড় মারে হাতির দল। এরপর স্থানীয় লোকজন হাতির দলকে তাড়া করলে দলটি চলে যায় মাথাভাঙা-১ ব্লকের জোরপাটকির শিবপুরে। সেখানে এক ভিক্ষুককে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছড়ে মারে একটি হাতি। তার নাম আনন্দ বিশ্বাস(৬৫)।

Advertisement

এরপর হাতির দল ধরলা নদী পেরিয়ে বোচাগাড়িতে চলে যায়। সেখানে স্থানীয়দের তাড়া খায়ে দুটি দলে ভাগ হয়ে যায় তারা। চারটি হাতির একটি দল নদী পেরিয়ে মাঘপালা হয়ে নিশিগঞ্জের দিকে যায়। অন্য দলে থাকা দু’টি হাতি ঢোকে তেকুনিয়া বনাঞ্চলে। নিশিগঞ্জে যাওয়া হাতির পাল উনিশবিশা হয়ে চলে যায় ঘোকসাডাঙায়। তেকুনিয়ার দু’টি হাতি পৌঁছয় পাড়ডুবিতে। সন্ধ্যা নেমে আসায় পাড়ডুবির পয়েস্তিতে থেকে যায় একটি হাতি। পাটকামারি এলাকায় থেকে যায় অন্য হাতি। কার্যত দল থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় হাতিগুলি উদ্‌ভ্রান্তের মতো ছোটাছুটি করতে থাকে। তার মাঝেই উনিশবিশার রেখা বর্মন(৬৮) ও ঘোকসাডাঙার জয়ন্তী সরকারের(৬৮) ওপর হামলা চালায় হাতি। রেখা ও জয়ন্তীকে বাড়ির ভিতর থেকে টেনে এনে শুঁড়ে পেঁচিয়ে আছাড় মেরে পা দিয়ে পিষে মারে হাতি। আবার টাউরিকাটার বুধেশ্বর বর্মন(৫৯) মারা যান বিকাল বেলায় হাতির সামনে পড়ে গিয়ে। এর বাইরেও অনেকে আহত হয়েছেন হাতির হানায়।

কোচবিহারের বুকে ১ দিনের মধ্যে হাতির হানায় ৪জনের মৃত্যুর ঘটনা কার্যত নজিরবিহীন বললেও কম বলা যায়। আর তাই বনদফতরের ভূমিকা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠছে তেমনি বন্যপ্রাণীর যাতায়াতের পথে মানুষের জনবসতি গড়ে তোলা নিয়েও সরব হয়েছেন পরিবেশবিদ থেকে বন্যপ্রাণীপ্রেমীরা। নিহত ও আহতদের পরিবার এখন বন দফতরের ওপর ক্ষোভে ফুঁসছে। সেই ক্ষোভ প্রশমনের জন্য জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারার নীতি অনুযায়ী মৃতদের পরিবারকে এককালীন ২ লক্ষা টাকা করে দেওয়া হবে। সেই সঙ্গে মৃতদের পরিবারের একজনকে দেওয়া হবে রাজ্য পুলিশের হোমগার্ডের চাকরিও। শনিবার সকালে বনদফতরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হাতির হামলায় আহত ১৪জনের চিকিৎসা চলছে কোচবিহার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। চারটি হাতির দলটিকে জঙ্গলে ফেরানো হয়েছে। কিন্তু দু’টি হাতি এখনও লোকালয়ের ধারেকাছে রয়ে গিয়েছে। স্থানীয়রা চিৎকার চেঁচামেচি করাতেই হাতিগুলি বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল।

Advertisement
Tags :
Advertisement