বাংলার সরকারি কর্মচারীদের DA মামলার দ্রুত শুনানির আর্জি খারিজ সুপ্রিম কোর্টে
নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলার রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের(West Bengal State Government Employees) জন্য বড়সড় ধাক্কা। আর সেই ধাক্কা দিল দেশের সর্বোচ্চ আদালত সুপ্রিম কোর্ট(Supreme Court)। রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের একাংশ কেন্দ্র সরকারের হারে মহার্ঘ্য ভাতা বা DA দেওয়ার দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয়, তা নিয়ে মামলা(DA Case) চলছে সুপ্রিম কোর্টেও। আগামী ৫ ফেব্রুয়ারি মামলাটির শুনানি হওয়ার কথা। কিন্তু সেই মামলা যাতে দ্রুত শুনানি হয় তার জন্য সুপ্রিম কোর্টে পৃথক ভাবে আর্জি জানানো হয়। কিন্তু এদিন অর্থাৎ শুক্রবার সেই আর্জি খারিজ(Speedy Hearing Application Rejected) করে দিয়েছে দেশের সর্বোচ্চ আদালত। গত ৩ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টে দশম বারের জন্য পিছিয়ে যায় DA মামলার শুনানি। সেই সময়েই জানানো হয়েছিল ৫ ফেব্রুয়ারি মামলাটির শুনানি হবে। কিন্তু রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা সেই শুনানি এগিয়ে আনতে চেয়ে আর্জি জানিয়েছিলেন। সেটাই এদিন খারিজ করে দিয়েছে শীর্ষ আদালত। সন্দেহ নেই এই সিদ্ধান্ত আন্দোলনকাড়ীদের কাছে বড় ধাক্কা।
কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলাতেই রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের পক্ষে রায় দিয়েছিল। সেই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়েই সুপ্রিম কোর্টে যায় রাজ্য সরকার। ২০২২ সালের ২০ মে রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের ৩১ শতাংশ হারে ডিএ দেওয়ার নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল রাজ্য। রাজ্যের যুক্তি ছিল, হাই কোর্টের সিদ্ধান্ত মেনে ডিএ দিতে হলে প্রায় ৪১ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। যা রাজ্য সরকারের পক্ষে এই মুহূর্তে বহন করা কঠিন। ২০২২ সালের ৩ নভেম্বর সেই মামলা দায়ের হয় শীর্ষ আদালতে। প্রথম শুনানি হয় ২৮ নভেম্বর। রাজ্যের পক্ষে সওয়াল করেন আইনজীবী মুকুল রোহতগি। সেই দিনেই সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয় পরবর্তী শুনানি ৫ ডিসেম্বরেই মামলা শেষ হবে। পরে রাজ্য আইনজীবী বদল করে অভিষেক মনু সিঙঘভিকে দায়িত্ব দেয়। এর পর থেকে একের পর এক তারিখ দেওয়া হলেও নানা কারণে শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে। গত ১৪ জুলাইয়ে নবম বার পিছিয়ে পরবর্তী শুনানির তারিখ দেওয়া হয় ৩ নভেম্বর।
বাংলায় ২০২০ সালে রাজ্য ষষ্ঠ বেতন কমিশন চালু হওয়ার পরে ৩ শতাংশ ডিএ বেড়েছিল। এর পরে চলতি বছর বাজেটের সময়ে আরও ৩ শতাংশ ডিএ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তবে এই সময়ের মধ্যে দফায় দফায় ডিএ বাড়িয়েছে কেন্দ্রও। তবে গত ২৯ তারিখই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী রাজ্য বিধানসভায় দাঁড়িয়ে মহার্ঘ্য ভাতা নিয়ে সাফ জানিয়েছিলেন, এই ভাতা বাধ্যতামূলক নয়, সম্পূর্ণ ভাবেই ঐচ্ছিক। বলেছিলেন, ‘DA বাধ্যতামূলক নয়, ঐচ্ছিক বিষয়। কারও যদি কোনও আপত্তি থাকে সেক্ষেত্রে গিয়ে কেন্দ্র সরকারি চাকরিতে যোগদান করুক। কাউকে বাধা দেওয়া হয়নি। আমরা কাউকে আটকায়নি। মনে রাখুন কেন্দ্র ৩ থেকে ৪ দিন ছুটি দেয়। আমরা সেখানে ৪০ থেকে ৪৫ দিন ছুটি দিয়ে থাকি। এই বিষয়গুলো মাথায় রাখবেন। আমরা ১০ বছরে একবার বিদেশ যাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। কেন্দ্রের কর্মীরা তাদের কাঠামো অনুযায়ী চলে। সেই অনুযায়ী বেতন বা DA পায়। আমাদের এখানে যে ৪০ দিন ছুটি পান তাও তো ভ্যালু অ্যাড করতে হবে। DA বাধ্যতামূলক নয়। বাড়িতে বাড়িতে যারা কাজ করেন এবং যাঁরা দোকানদার-তাঁদের বেতন আলাদা। পার্থক্য রয়েছে। যাদের এখানে আপত্তি রয়েছেন তাঁরা কেন্দ্রের চাকরি করুন। কেউ তো আটকায়নি। কেন্দ্রের আর রাজ্যের চাকরি তো আলাদা।’