চড়কাণ্ডে বারাসত জেলা আদালতে সোহম, আগাম জামিনের আর্জি
নিজস্ব প্রতিনিধি: অভিনেতা-বিধায়ক সোহম চক্রবর্তীর চড়কাণ্ড নিয়ে রাজ্য-রাজনীতি এখন সরগরম। এর জল দিন দিনে বাড়ছে। রেস্তরাঁর মালিককে চড় মারার ঘটনার মামলা করতে বুধবার (১২ জুন) কলকাতা হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয়ে ছিলেন ওই রেস্তরাঁর মালিক। তাঁর অভিযোগে পুলিশ এখনও কোনও পদক্ষেপে না নেওয়ায় কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন বিতর্কিত রেস্তরাঁর মালিক। তাঁর আইনজীবীর দাবি ছিল যে, তাঁর মক্কেল এবং পরিবারকে হুমকি দিচ্ছেন ওই জনপ্রতিনিধি। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও কাজ হয়নি। তাই নিরাপত্তা ও তদন্ত চেয়ে সোহমের বিরুদ্ধে কলকাতায হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছেন ওই রেস্তোরাঁর মালিক। এই মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন খোদ বিচারপতি অমৃতা সিংহ। আগামী শুক্রবার শুনানি হওয়ার কথা। সুতরাং জল অনেকদূর গড়াবে হলেও আশঙ্কা। তাই আগেভাগেই শান্ত মাথায় আত্মসমর্পণ করে আগাম জামিনের আর্জি জানাতে বৃহস্পতিবার বারাসত জেলা আদালতে পৌঁছলেন সোহম চক্রবর্তী। যদিও এ নিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি সোহম।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহে নিউটাউনের একটি বিলাসবহুল রেস্তরাঁয় শুটিংয়ে গিয়েছিলেন অভিনেতা-বিধায়ক সোহম চক্রবর্তী। আর সেখানেই তাঁর শুটিং ইউনিটের গাড়ি রাখা নিয়ে সোহমের নিরাপত্তারক্ষীদের সঙ্গে ওই রেস্তোরাঁর মালিকের বচসা বাধে। বচসার সময় সোহম কে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলেও দাবী করা হলে মেজাজ বিগড়ে যায় ওই রেস্তরাঁর মালিকের। বিষয়টি পাত্তা না দিয়ে ঝামেলা চালিয়ে যান রেস্তরাঁর মালিক। আর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হোটেলের ভেতর থেকে ছুটে আসেন সোহম চক্রবর্তী। ঘটনায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে রেস্তোরাঁর মালিক কথা বলায় সোহম খুবই ক্ষুব্ধ হয়ে যান। এবং রেগে গিয়ে রেস্তরাঁর মালিককে চড় মেরে বসেন তিনি। এমনকী সোহমের বিরুদ্ধে তাঁকে লাথি মারারও অভিযোগ আনেন ওই রেস্তরাঁর মালিক। এই ঘটনাটি ভাইরাল হতেই সোহমের আচরণ নিয়ে অনেকেই নিন্দা করেন। জনপ্রতিনিধি হয়ে সোহমের আচরণ মোটেও ন্যায়সঙ্গত নেয় বলে দাবি করেন বিরোধীরা।
যদিও অভিনেতা পরে ঘটনাটি নিয়ে লজ্জিত বোধ করেন। এবং ভিডিও বার্তায় তাঁর এই আচরণের জন্যে ক্ষমা চান। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। বরং সোহমের এই চড়কাণ্ড নিয়েই রাজ্য-রাজনীতি উত্তপ্ত। ওই রেস্তরাঁর মালিক গত শুক্রবার সোহমের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। টেকনো সিটি থানায় FIR-এর ভিত্তিতে ৫০৬, ৩৪১, ৩২৩ ও ৩৪ নম্বর ধারায় মামলা রুজু হয়।কিন্তু ঘটনার ৪ দিন হয়ে গেলেও পুলিশকে কোনও হস্তক্ষেপ করতে না দেখায় গতকাল (১২ জুন) সেই মামলা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ওই রেস্তরাঁর মালিক। সোহমের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মারধরের ঘটনা সম্পর্কে সোহম জানিয়েছিলেন, অভিষেককে (বন্দ্যোপাধ্যায়) নিয়ে গালাগালি করেছে তিনি মেনে নিতে পারেননি। তাই চারটে চড় মেরেছেন। ধাক্কা দিয়েছেন। অভিনেতারাও মানুষ। তাঁদেরও আবেগ আছে। এ ব্যাপারে ক্ষমা চেয়ে সোহম বলেন, একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে এমন কাজ করা উচিত হয়নি তাঁর। তবে সোহম আরও দাবি করেছেন যে, ফুটেজ প্রকাশ্যে এনেছেন ওই রেস্তরাঁ কর্তৃপক্ষ, তাতে শুধু তাঁর মারমুখী চেহারাটাই দেখা যাচ্ছে। রেস্তরাঁর মালিক অভদ্র ব্যবহারের দৃশ্য একেবারেই ফুটে ওঠেনি সেখানে। বরং রেস্তরাঁর মালিক তাঁর দেহরক্ষীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছিলেন এবং মারধর করেছিলেন।