কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি পদের জন্য সুপ্রিম কোর্টে গেল ৮জনের নাম
নিজস্ব প্রতিনিধি: এক আধ বছর নয়। ৬ বছর বাদে কলকাতা হাইকোর্টে(Calcutta High Court) বিচারপতি পদের জন্যে নাম(Name for the post of Judges) গেল সুপ্রিম কোর্টে। সেই নাম পাঠিয়েছে কলকাতা হাইকোর্টের কলেজিয়াম। মোট ৮ জনের নাম পাঠানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। এদের মধ্যে সকলেই যে বিচারপতি হওয়ার জন্য ছাড়পত্র পেয়ে যাবেন সেটা বলা একদমই ভুল হবে। আবার কেউ নাও পেতে পারেন ছাড়পত্র। আসলে শেষ পর্যন্ত ঠিক কতগুলি নামে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নয়া সরকার শিলমোহর দেবে সেটার ওপরেই সব কিছু নির্ভর করবে। যে ৮জনের নাম পাঠানো হয়েছে তাঁরা সকলেই কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী। ৬ বছর আগে কলকাতা হাইকোর্টের কলেজিয়াম ৯জনের নাম পাঠিয়েছিল সুপ্রিম কোর্টের কলেজিয়ামে(Supreme Court Collegium)। সেখানে মাত্র ২জনের নামে ছাড়পত্র দিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দেখা যায় ওই ২টি নামেও সবুজ সঙ্কেত দেয়নি কেন্দ্র সরকার। সেই দুই নামও এখনও পড়ে কেন্দ্রের(Government of India) আইন মন্ত্রকে(Ministry of Law)। তাই এবার কলকাতা হাইকোর্টের কলেজিয়াম ৮ জনের নাম পাঠালেও শেষ পর্যন্ত কটি নামে চূড়ান্ত ছাড়পত্র মিলবে তা নিয়ে ঘোর সংশয় রয়েছে।
কলকাতা হাইকোর্টে অনুমোদিত ৭২টি বিচারপতি পদের মধ্যে এখন ২৭টি পদ ফাঁকা অবস্থায় রয়েছে। আবার তার মধ্যে আইনজীবী থেকে বিচারপতি পদে যাওয়ার মতো শূন্যপদের সংখ্যা ২১টি। এ দেশে কোনও রাজ্যের হাইকোর্টে বিচারপতি পদে ৩ রকম ভাবে নিয়োগ হয়। Lower Judiciary ও Higher Judiciary থেকে Promotion পেয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি হতে পারেন। কলকাতা হাইকোর্টে এমন বিচারপতিদের জন্য ২৪টি পদ সংরক্ষিত আছে। আর বাকি ৪৮টি পদে সরাসরি বার থেকে আইনজীবীদের নাম সুপারিশ করে কলেজিয়াম। আবার নিম্ন আদালত থেকে প্রোমোশন পেয়ে বিচারপতি হওয়ার সব পদই প্রায় ভর্তি। গত ৬ বছর ধরে আইনজীবী থেকে বিচারপতি পদের জন্যে নাম পাঠানোর ক্ষেত্রে কলকাতা হাইকোর্টের গড়িমসি নিয়েও বিরক্ত বর্ষীয়ান আইনজীবীরা। আবার যে সব নাম কলকাতা হাইকোর্ট সুপারিশ করেছিল আগে, তার বড় অংশ ছাড়পত্র পায়নি সুপ্রিম কোর্টে। আবার সুপ্রিম কোর্টের ছাড়পত্রে আপত্তি জানিয়ে কেন্দ্র ঠান্ডা ঘরে ফেলে রেখেছে নাম।
ফলে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবী থেকে বিচারপতি পদে নিয়োগ নিয়ে বঞ্চনার অভিযোগ বহু দিনের। এই অবস্থায় যে ৮ জনের নাম সম্প্রতি পাঠানো হয়েছে, তাঁরা ১৯৯৩ থেকে ২০০৩-এর মধ্যে আইনজীবী হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। কলকাতা হাইকোর্ট সূত্রে খবর, প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম, বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় এবং সদ্য অবসর নেওয়া বিচারপতি চিত্তরঞ্জন দাসকে নিয়ে গড়া ৩ সদস্যের কলেজিয়াম প্রাথমিক ভাবে জমা পড়া ২৫টি নামের মধ্যে দক্ষতা, যোগ্যতা, পেশা থেকে আয়, আচার-আচরণ, মর্যাদা, সুনাম বিবেচনা করে ১৬ জনকে বেছে নিয়েছিল। পরবর্তীতে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ মতো প্রথম দফায় ৮ জনের নাম পাঠানো হয়। এখন কত জনের নাম চূড়ান্ত ছাড়পত্র পাবে, পেলে কত দিনে--তা নিয়ে জল্পনা চরমে।