ফ্ল্যাট কেনার ক্ষেত্রে প্রতারণা ঠেকাতে বাড়তি নজরদারি রাজ্যের
নিজস্ব প্রতিনিধি: দেশের যে সব রাজ্য রীতিমত জনবহুল তার মধ্যে ওপরের দিকেই আছে বাংলার(Bengal) নাম। বছর বছর বাংলায় বেড়ে চলেছে জনসংখ্যা। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ফ্ল্যাট(Flat) বা বাড়ির চাহিদা। সেই চাহিদা পূরণের জন্য কলকাতা সহ রাজ্যের বড় বড় শহরগুলিতে তো বটেই, শহর লাগোয়া পঞ্চায়েত এলাকাতেও দেদার ফ্ল্যাট ওঠা শুরু হয়ে গিয়েছে। আর সেই সঙ্গে বাড়ছে প্রতারণার(Falsehood) ঘটনাও। সেই সব ক্ষেত্রে আবার দেখা যাচ্ছে, বড় আবাসন নির্মাতা সংস্থার বিরুদ্ধে যত না অভিযোগ উঠছে তার থেকে ঢের বেশি অভিযোগ উঠছে পাড়ায় পাড়ায় অল্প পুঁজির মাধ্যমে ফ্ল্যাট নির্মাণ করা ছোট প্রোমোটারদের(Small Promoters) বিরুদ্ধে। বহু ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে এই সব ছোট প্রোমোটাররা , ফ্ল্যাট বুকিংয়ের সময় ক্রেতাদের যেসব সুবিধার কথা বলে ফ্ল্যাট বিক্রি করছেন, সেই সব সুযোগ সুবিধার অনেক কিছুই মিলছে না ফ্ল্যাট হাতে পাওয়ার সময়। কোথাও গাড়ির জন্য গ্যারাজ দেওয়া হবে বলে তা দেওয়া হচ্ছে না তো কোথাও তার পরিমাপ এতই ছোট করে দেওয়া হচ্ছে যে সেখানে গাড়ি রাখা যাবে না। আবার কোথাও ঘর বা ব্যালকনির পরিমাপ ছোট করে দেওয়া হচ্ছে। এবার এই ধরনের ঘটনা ঠেকাতে কোমর বেঁধে মাঠে নামছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে ফ্ল্যাট কেনা পরিবারগুলিকে প্রতারণার হাত থেকে বাঁচাতে মাঠে নামছে রাজ্যের আবাসন দফতর(Housing Department)। আবাসন প্রকল্প যেমনই হোক না কেন, তাদের তরফে দেওয়া প্রতিশ্রুতি ঠিকভাবে পালিত হচ্ছে কি না, এবার তা যাচাই করা হবে রাজ্যের প্রতিটি জেলা প্রশাসনের তরফে। বিডিও অফিস থেকে যেমন সেগুলির তদারকি চলবে, তেমনই পুরসভাগুলিকেও সেই দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি চলবে সাধারণ মানুষকে সুরাহা দেওয়ার ব্যাপারে সচেতন করার কাজও, জানিয়েছেন আবাসন দফতরের আধিকারিকেরা। রাজ্যের আবাসন শিল্পকে নিয়ন্ত্রণ করতে রাজ্যে চালু হয়েছে Real Estate Regulation and Development Act বা RERA। ক্রেতা-বিক্রেতাসহ সব পক্ষের সুবিধার্থে এই আইন চালু হয়েছে। তবে আবাসন সংস্থাগুলি প্রতিশ্রুতি মতো পরিষেবা না দিলে তার সুরাহার ব্যবস্থা করা হয়েছে এই আইনে। ইতিমধ্যেই সেই আইনকে বাস্তবে নামিয়ে আনতে ও সচেতনতার প্রচারে উদ্যোগ শুরু হয়েছে আবাসন দফতরের।
বাংলায় RERA অনেক আগেই চালু হলেও, তাকে সর্বস্তরে প্রচারে আনা এবং ক্রেতাদের সচেতন করার কাজটি জোর কদমে শুরু হয়েছে এখন। বড় আবাসন সংস্থাগুলি সাধারণত যে প্রতিশ্রুতি ক্রেতাদের দেয়, তা মেনে চলার চেষ্টা করে। কিন্তু ছোট আবাসন প্রকল্পগুলির নির্মাতারা অনেক ক্ষেত্রেই সেসবের তোয়াক্কা করে না। তাই সেখানে নজর দেওয়া জরুরি। কিন্তু সর্বত্র নজরদারি চালানোর উপযোগী নিজস্ব লোকবল রাজ্যের আবাসন দফতরের নেই। সেই কাজটিই এবার করবে মূলত জেলা প্রশাসন এবং পুরসভাগুলি। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জেলায় শিবির করে আইনটি সম্পর্কে অবগত করা হয়েছে সরকারি আধিকারিকদের। বৈঠক হয়েছে বিভিন্ন পুরসভার সঙ্গেও। জেলা প্রশাসন ঠিক করে দেবে, কারা নির্মীয়মাণ প্রকল্পগুলিতে নজরদারি চালাবেন এবং সেইমতো পদক্ষেপ করবেন। অভিযোগ প্রমাণিত হলে জরিমানা করা হবে প্রকল্পগুলিকে। ইতিমধ্যেই সেই কাজ শুরু হয়েছে।