‘উত্তরবঙ্গের জন্য ওরা কোনও কাজ করেনি’, মোদি-শাহকে নিশানা মমতার
নিজস্ব প্রতিনিধি: উনিশের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরবঙ্গের ৮টি আসনের মধ্যে ৭টিতেই জয়ী হয়েছিল বিজেপি(BJP)। তার মধ্যে ছিল কোচবিহার লোকসভা(Coachbehar Constituency) কেন্দ্রটিও। সেখানে জয়ী হন বিজেপির প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক। তিনি জিতেছিলেন প্রায় ৬০ হাজার ভোটের ব্যবধানে। পরে নিশীথকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীও করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi)। সেই সূত্রে নিশীথ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের(Amit Shah) ডেপুটি। এবার সেই নিশীথকেই কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করেছে বিজেপি। তাঁর বিরুদ্ধে তৃণমূল(TMC) প্রার্থী করেছে সিতাইয়ের তৃণমূল বিধায়ক জগদীশ্চন্দ্র বর্মা বসুনিয়াকে। এদিন অর্থাৎ শুক্রবার সেই জগদীশের হয়েই কোচবিহার জেলার দিনহাটায় একটি দলীয় প্রচারসভা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সেই সভা থেকেই তিনি এদিন নিশীথের পাশাপাশি নিশানা বানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে।
এদিন মমতা প্রথমেই অমিত শাহকে নিশানা বানান। তারপরে নিশানা বানান প্রধানমন্ত্রীকে। তিনি বলেন, ‘বড় হোম মিনিস্টার আবার কী বলেছেন? বুনিয়াদপুরকে বলেছেন, বেলুড়ঘাট। নামটাও জানে না। বালুরঘাট বল অন্তত। বালুরঘাটের নাম বলছে বেলুরঘাট। উনি বড় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। জায়গার নামটুকুও জানেন না। আবার এসে বলছেন, ‘উল্টে ঝুলিয়ে রেখে দেব।’ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখে এ কথা শোভা পায়? কাকে ঝোলাবেন? এতটা সোজা খেলা নয়। নিজেদের দেখুন প্রথমে। আগে নিজেদের চেহারা দেখুন। সব থেকে বড় চোর আপনার প্রার্থী। ওকে ধরুন। মানুষের ভাষায় শোভনীয়তা থাকা দরকার। প্রধানমন্ত্রী বক্তৃতায় কী বললেন? ২০২৬-এ চুন চুনকে সব কো অ্যারেস্ট করেঙ্গে। এই দেশ জেলখানা নয়। আগে নিজেদের লোককে ধরুন। আর সন্দেশখালি নিয়ে খেলছেন? যে যে অভিযোগ এসেছে সব সমাধান হয়েছে। ভোটের সময় ভোট চাইতে চলে আসে দিল্লি থেকে। ভোট হয়ে গেলে আর মনে রাখে না। ভোটের পর ওদের কাউকে আর দেখা যায় না। উত্তরবঙ্গের জন্য ওরা কোনও কাজ করেনি।’
এর পাশাপাশি মমতা বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নাগরিকত্ব নিয়ে বলতে গিয়ে বলছেন, ও হ্যায় কাহা। মানে আমরা নাগরিক নই। তুমি বাইরে থেকে এসে তুমি নাগরিক? আমি বাংলায় বাস করে আমি নাগরিক নই? আমি রাজবংশী বুঝি। ভাল বলতে পারি না। মাছ বোঝেন মাছ? ফিস-ফিস। মাছের মাথা ক্যা। মাছের ল্যাজা এনআরসি। জীবন দেব তবু ক্যা করতে দেব না। কারও গায়ে হাত দিতে দেব না। উনি ৩ হাজার কোটি টাকা জনগণকে ফিরিয়ে দেব বলছেন। আপনারা ভাগে কত পাবেন? ২১ টাকা করে। এক কেজি পেঁয়াজও হয় না। সারা দেশে বেকারের সংখ্যা বেড়েছে। কেন্দ্রের কোনও মাথাব্যথা নেই। প্রধানমন্ত্রী কোভিডে একটা ইঞ্জেকশন দিয়েছে তাতেও ছবি লাগিয়েছে। আত্মপ্রচার করতে ভালোবাসেন তো সিনেমায় নামুন। উনি তো সিনেমায় নামতে পারেন। সত্যিকারের ফ্লিম জগতকে উন্নত করুন। আমরা খুশি হব। যখন পুলওয়ামা হল তখনকার রাজ্যপাল তো বলে দিয়েছে কে করেছে। তাই তাঁর বাড়িতে রেইড হয়েছে।’
একইসঙ্গে মমতা বলেন, ‘বলছে সব টাকা চুরি হয়ে গিয়েছে। একশো দিনের টাকা দিয়েছ তিন বছর? আবাস যোজানার টাকা দিয়েছো? টাকাই যেখানে দাওনি সেখানে চুরিটা করবে কোথা থেকে? ১ লক্ষ ৬৪ হাজার কোটি টাকা বকেয়া আছে। দুর্নীতি হলে শ্বেতপত্র প্রকাশ করুন। তৃণমূল কে বলছে চোর। এরা ডাকাত। দেশ বেচেছে। নির্লজ্জ বেহায়া একটা রাজনৈতিক দল। নির্বাচন কমিশন কে বলবো নিরপেক্ষ ভাবে নির্বাচন করুন আমরা সেলুট করবো। বিজেপির কথায় দয়া করে শুনবেন না। আবার বলছে ৪০০ সিট পাবে। আমি বলি আগে ২০০ পাও, তারপর ৪০০র কথা ভেবো। আগে ২০০ সিট পেয়ে দেখাক বিজেপি।’