‘আজ শুধু একজন ব্যক্তিই মন্দিরে যেতে পারবেন’, খোঁচা রাহুলের
নিজস্ব প্রতিনিধি: অসমে(Assam) ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা(Bharat Jodo Nyay Yatra) চলাকালীন বারবার বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছেন রাহুল গান্ধি(Rahul Gandhi)। নওগাঁয়ের বরদোয়ায় শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের(Sreemanta Sankardev) জন্মস্থান বাটাদ্রাওয়া থানে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু এদিন অর্থাৎ সোমবার সকালে সেখানে রাহুল পৌঁছালে তাঁকে ঢুকতেই দেওয়া হল না। মন্দির কমিটির তরফে জানানো হয় দুপুর ৩টের পর প্রবেশাধিকার পাবেন কংগ্রেস সাংসদ। যা শুনেই ক্ষোভপ্রকাশ করেন রাহুল। তিনি প্রশ্ন করেন, ‘আমি কী অপরাধ করেছি যে মন্দিরে যেতে পারব না? আমরা মন্দিরে যেতে চাই।’ তিনি মন্দিরের কর্তৃপক্ষদের আরও বলেন, ‘আমরা কোনও অসুবিধা করব না, শুধুমাত্রা প্রার্থনা করে চলে যাব।’ যদিও তাঁর আর্জি না শোনায় ক্ষোভপ্রকাশ করে রাহুল বলেন, ‘আজ শুধু একজন ব্যক্তিই মন্দিরে যেতে পারবেন।’ তারপরেই সেখানে ধর্নায় বসে পড়েছেন কংগ্রেস সাংসদ।
দেশের পূর্ব থেকে পশ্চিমের পথে যাত্রা শুরু করেছেন রাহুল গান্ধি। তাঁর এই যাত্রার নাম ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রা। গত ১৪ জানুয়ারি উত্তর-পূর্ব ভারতের মণিপু্র থেকে তাঁর সেই যাত্রা শুরু হয়েছে লোকসভা নির্বাচনের আগে। কার্যত প্রথম দিন থেকেই এই যাত্রায় মানুষের ঢল নামতে দেখা গিয়েছে। আবাল বৃদ্ধবণিতা থেকে তরুণ প্রজন্ম সামিল হয়েছেন রাহুলের সঙ্গে পথযাত্রায়। একই সঙ্গে এই যাত্রা গেরুয়া শিবিরের উদ্বেগও বাড়িয়েছে। অসমের মুখ্যমন্ত্রী তো কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন রাহুলকে জেলে পোরার জন্য। তবুও সেই হুমকি উপেক্ষা করেই রাহুলের পদযাত্রা এগিয়ে চলেছে লক্ষ্যের পাণে। ৬৬ দিনে দেশের ১৫টি রাজ্যের ৮৫টি জেলা ছুঁয়ে মোট ৬,৭০০কিমি পথ পেরিয়ে এই যাত্রা শেষ হবে আরবসাগরের তীরে মুম্বইয়ের বুকে। অসমের ক্ষমতায় একাধিকবার এসেছে কংগ্রেস। তবে শেষ দুটি বিধানসভা নির্বাচনেই সেখানে জয়ী হয়েছে বিজেপি। সামনেই লোকসভা নির্বাচন। ঠিক তার আগে অসমের বৈষ্ণব ধর্মগুরু শঙ্করদেবের জন্মভিটেতে গিয়ে তাঁকে শ্রদ্ধা জানানো রাহুলের নিঃসন্দেহে এক বড় পদক্ষেপ।
কেননা অসমে বৈষ্ণব ধর্মের প্রভাব অপরিসীম। ঠিক ততটাই প্রভাব শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের। তাঁর অনুগামী ও দীক্ষিত শিষ্যের সংখ্যা কয়েক লক্ষ মানুষ। দেখার বিষয় এটাও অসমের প্রায় কোটির ওপর থাকা শঙ্করদেবের অনুগামী ও দীক্ষিতরা আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসমুখী হন কিনা। তবে ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, রাহুলকে মন্দিরে ঢুকতে না দিয়ে কার্যত এটা বুঝিয়ে দেওয়া হল যে তাঁর ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রায় উদ্বেগে ভুগছে গেরুয়া শিবির। তাঁদের মনে ভয় ঢুকেছে, রাহুলের যাত্রা অসমের বুকে সফল হলে সেখানে ক্ষমতা হারিয়ে ফেলবে পদ্মশিবির। রাহুলকে মন্দিরে না ঢুকতে দিয়ে এদিন কার্যত শ্রীমন্ত শঙ্করদেবের অনুগামীদেরই ক্ষোভের মুখে পড়ল পদ্মশিবির।