ঢেউচা-পাঁচামির রায়ের দিকে তাকিয়ে তৃণমূল, চাকরি প্রদানে জোর পুজোর আগেই
নিজস্ব প্রতিনিধি: বীরভূম জেলার(Birbhum District) সিউড়ি সদর মহকুমার মহম্মদবাজার ব্লকের(Muhammad Bazaar Block) ঢেউচা-পাঁচামি(Deucha Pnachami) এলাকায় হতে চলছে খোলামুখ কয়লা খনি প্রকল্প(Coal Mine Industry)। এর জন্য স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে জমির বদলে চাকরি দেওয়ার প্রক্রিয়াও চলছে। প্রায় ১২ দফাতে এই এলাকার প্রায় দেড় হাজার জমিদাতা পরিবারের একজন করে সদস্য সরকারি চাকরিতে নিযুক্ত হয়েছেন। এখন বহু মানুষ জমি দিয়ে চাকরির অপেক্ষায় রয়েছেন। শুধু চাকরি নয়, জমিদাতাদের বিপুল পরিমাণ টাকা ক্ষতিপূরণও দেওয়া হয়েছে। এছাড়া এই এলাকার সার্বিক উন্নয়নও করা হয়েছে। কয়লা খনি প্রকল্পে প্রচুর নিয়োগ ও সরকারি সুযোগ-সুবিধা প্রদানের পর এবার লোকসভা নির্বাচনে(Loksabha Election 2024) তার প্রভাব কীরকম পড়ে সেদিকে তাকিয়ে রাজ্যের রাজনৈতিক দলগুলি।
উল্লেখ্য, গত বছর ঢেউচা-পাঁচামি প্রকল্পকে সামনে রেখেই বীরভূম জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে মহম্মদবাজার ব্লকের ১২টি পঞ্চায়েতে লড়াইয়ে নেমেছিল তৃণমূল(TMC)। কিন্তু সেই নির্বাচনে ২টি গ্রাম পঞ্চায়েত গিয়েছিল বিজেপির দখলে। ঢেউচা-পাঁচামি কয়লা খনি প্রকল্পে প্রথম থেকেই স্থানীয় জমিদাতাদের চাকরি দেওয়া থেকে শুরু করে এলাকার সার্বিক উন্নয়ন সবকিছুই বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে করছিল তৃণমূল সরকার। কিন্তু তারপরেও দু’টি পঞ্চায়েত কেন বিজেপির দখলে গেল তা নিয়ে দলের অন্দরে প্রশ্ন উঠেছিল। তবে লোকসভা নির্বাচনে ওই ২টি গ্রাম পঞ্চায়েতেই দলীয় প্রার্থী বিপুল ভোটের লিড পাবে বলে মনে করছে তৃণমূল নেতৃত্ব। অন্যদিকে ২টি গ্রাম পঞ্চায়েত দখলের পর লোকসভা নির্বাচনে এই শিল্পাঞ্চল থেকে বিপুল ভোটের লিড পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী বিজেপিও। বিজেপির দাবি, ঢেউচা-পাঁচামি প্রকল্পে এলাকার জমিদাতাদের চাকরি হলেও এই প্রকল্প নিয়ে স্থানীয় মানুষের অনেক ক্ষোভ রয়েছে। তাছাড়া এলাকার সার্বিক উন্নয়ন নিয়েও মানুষের অনেক অভিযোগ রয়েছে। তাই পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই এলাকায় বিজেপির ভোট বেড়েছিল এবং রামপুর ও কাপিষ্ঠা পঞ্চায়েত দু’টি দখল করেছিল বিজেপি(BJP)। বাকি পঞ্চায়েতগুলিতেও ভোট বেড়েছিল গেরুয়া শিবিরের। তাই এবারও লোকসভা নির্বাচনে ঢেউচা-পাঁচামির মানুষ তাদের ওপরেই আস্থা রাখবে বলে মনে করছে পদ্ম শিবির।
ঢেউচা-পাঁচামি প্রকল্প এলাকার তৃণমূল নেতা দীপক মণ্ডলের দাবি, ‘ঢেউচা-পাঁচামি প্রকল্প এলাকায় প্রচুর উন্নয়ন হয়েছে। এখানে খনি প্রকল্পের কাজ দ্রুতগতিতে এগচ্ছে। বহু জমিদাতা চাকরি পেয়েছেন ইতিমধ্যেই। বিজেপি মানুষকে ভুল বুঝিয়ে ২টি পঞ্চায়েত দখল করলেও মানুষ সেই ভুল বুঝতে পেরেছে। এবার এই এলাকায় আমাদের লিড বাড়বে বলে আশা করছি।’ অন্যদিকে মহম্মদবাজারের বিজেপি নেতা ফণীরঞ্জন রায়ের দাবি, ‘এই এলাকার মানুষ তৃণমূলকে মন থেকে মুছে ফেলেছে। এবার শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে। ওরা বেশ কিছু বুথ দখলের চেষ্টা করলেও পারেনি। তাই এলাকায় আমাদের লিড থাকবে বলে মনে করছি।’ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এবারে লোকসভা নির্বাচনে বীরভূম লোকসভা কেন্দ্রের আওতায় থাকা ঢেউচা-পাঁচামি প্রকল্প এলাকায় কোন রাজনৈতিক দলের কীরকম ফলাফল হয় তার ওপর অনেকটাই নির্ভর করবে এই এলাকায় প্রকল্পের জন্য জমি নেওয়ার কাজের গতি। তৃণমূল এলাকায় ভাল লিড পেলে জমি নেওয়ার ক্ষেত্রে এবং চাকরিবভাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে গতি আসবে পুজোর আগেই। বিজেপি লিড পেলে কিছুটা হলেও সেই গতি ধাক্কা খেতে পারে।