নির্বাচনী প্রচারে টোটো বা ই-রিকশ ব্যবহার করলেই দিতে হবে হিসাব
নিজস্ব প্রতিনিধি: আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের(General Election 2024) জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের এবং নির্দল প্রার্থীদের(Candidates) ক্ষেত্রে এবার একটি নয়া নিয়ম লাগু করেছেন জাতীয় নির্বাচন কমিশন(ECI)। আর তা হল, এবার থেকে ভোট প্রচারে নেমে বা সেই কাজে কোনও টোটো(Toto) বা ই-রিকশ(E-Rikshaw) ব্যবহার করলে নির্বাচন কমিশনের কাছে তার হিসাব(Expenditure) দাখিল করতে হবে। এতদিন এই ধরনের হিসাব দিতে হতো প্রভারের জন্য কোনও বাস, ট্রাক বা ট্যাক্সি ব্যবহারের ক্ষেত্রে। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হল টোটো এবং ই-রিকশও। এবারের ভোটেই এই প্রথম টোটো এবং ই-রিকশ ঢুকে পড়ছে নির্বাচনী প্রচারের ক্ষেত্রে বাহণ হিসাবে। কার্যত রাজ্যজুড়ে গ্রামে ও শহরের বুকে নির্বাচনী প্রচারে টোটো এবং ই-রিকশ’র বাড়বাড়ন্তের কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
কেন নির্বাচনী প্রচারে কদর বাড়ছে টোটো ও ই-রিকশর? রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী থেকে এই সব টোটো ও ই-রিকশ চালক তথা মালিকদের দাবি, আকারে ছোট হওয়ায় কিবা গ্রাম কিবা শহর সর্বত্রই সরু রাস্তাতে অনায়াসে ঢুকে পড়ছে এই সব গাড়ি। কার্যত উনিশের লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই এই প্রবণতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে যা গত বছরের পঞ্চায়েত নির্বাচনে গ্রামবাংলার বুকে বেশ ভাল মাত্রাতেই চোখে পড়েছে। মহল্লার গলিঘুঁজির মধ্যে প্রার্থীকে নিয়ে বা প্রচারককে নিয়ে সহজেই ঢুকে পড়ছে টোটো এবং ই-রিকশ। সেই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছে প্রায় সব রাজনৈতিক দলই। সব থেকে বড় কথা চার চাকা ছোট গাড়ি ভাড়া করার চেয়ে টোটো বেশি সাশ্রয়কারী। একই সঙ্গে খোলামেলা হওয়ায় তা জনসংযোগের ক্ষেত্রে হটকেক হয়ে উঠেছে। সেকারণেই এবারের লোকসভা নির্বাচনে প্রচারের ক্ষেত্রে টোটো ব্যবহার হলে, সেই বাবদ কত খরচ হল, তার হিসাব দিতে হবে প্রার্থীকে। প্রার্থীর ভোট খরচের সঙ্গে তা যুক্ত করা হবে বলে এক নির্দেশিকায় জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। বর্তমান নিয়ম অনুযায়ী লোকসভা নির্বাচনের ক্ষেত্রে একজন প্রার্থী ভোটে ৯৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ করতে পারেন। সেই খরচে এবার যুক্ত হচ্ছে টোটো ব্যবহারের খরচও। তবে নির্বাচনী প্রচারে টোটো ব্যবহারের ক্ষেত্রেও একাধিক বিধিও আরোপ করেছে কমিশন।
প্রার্থীদের উদ্দেশে জারি করা নির্দেশিকায় জানানো হয়েছে, কোনও প্রার্থীর প্রচারে টোটো বা ই-রিকশ ব্যবহার করতে হলে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে আগে থেকে রিটার্নিং অফিসারের কাছে তার বিস্তারিত তথ্য জানাতে হবে। কতগুলি টোটো বা ই-রিকশ, কোন এলাকায়, কীভাবে প্রচারের কাজে ব্যবহার করা হবে, তার পূর্ণাঙ্গ তথ্য দিতে হবে প্রার্থীকে। এছাড়া কোনও পারমিটহীন বা অনুমোদনহীন টোটো বা ই-রিকশ প্রচারের কাজে ব্যবহার করা যাবে না। পুর এলাকায় প্রচারে টোটো বা ই-রিকশ ব্যবহার হলে সেই টোটো বা ই-রিকশকে সংশ্লিষ্ট পুরসভা থেকে অনুমোদন প্রাপ্ত হতে হবে। পঞ্চায়েত এলাকায় টোটো বা ই-রিকশর ব্যবহার হলে সেই টোটো বা ই-রিকশ চালককে আগে থেকে রিটার্নিং অফিসারের কাছ থেকে পারমিট সংগ্রহ করতে হবে বলেও ওই নির্দেশে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়াও কমিশন জানিয়েছে, কোনও টোটো বা ই-রিকশ স্বেচ্ছায় কোনও রাজনৈতিক দলের পোস্টার লাগিয়ে যাত্রী বহনের কাজ করতেই পারে, সেক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ নেই। তবে প্রচারের কাজে ব্যবহার হলেই টোটো বা ই-রিকশ চালককে আলাদা করে পারমিট সংগ্রহ করতে হবে।