বিশ্বকাপ জিতিয়ে টি টোয়েন্টি থেকে অবসর বিরাট কোহলির
নিজস্ব প্রতিনিধি, বার্বাডোজ: এ যেন খানিকটা বিনা মেঘে বজ্রপাত। তাঁর চওড়া ব্যাটে ভর করে শনিবার রাতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের তকমা জিতেছে টিম ইন্ডিয়া। আর ১৩ বছর বাদে দেশকে ফের বিশ্বসেরার খেতাব জেতানোর পরেই টি টোয়েন্টি ফরম্যাট থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করলেন বিরাট কোহলি। ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিতে এসেই টি টোয়েন্টিতে শেষ ম্যাচ খেলার ঘোষণা করেন কিং কোহলি। আর তাঁর ওই আচমকা ঘোষণায় হতবাক হয়ে গিয়েছেন টিম ইন্ডিয়ার খেলোয়াড় থেকে শুরু করে বিশেষজ্ঞরা।
দীর্ঘদিন দরেই দেশের হয়ে টি টোয়েন্টি ক্রিকেটে তেমনভাবে জ্বলে উঠতে পারছিলেন না বিরাট কোহলি। টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের গ্রুপ লিগ, সুপার এইট এমনকি সেমিফাইনালেও তাঁর ব্যাটে তেমন রান আসেনি। ফলে সমালোচকরা সমালোচনার বাণে লাগাতার বিদ্ধ করে চলেছিলেন তাঁকে। শনিবার কেনসিংটন ওভালে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেই সব সমালোচনার জবাব দিলেন কিম কোহলি। একের পর এক সতীর্থকে ফিরতে দেখেও নিজের দায়িত্ব আর কর্তব্যে অবিচল ছিলেন। শেষ পর্যন্ত মার্কো জানসেন-কাগিসো রাবাডাদের শাসন করে ৫৯ বলে ৭৬ রানের এক অনবদ্য ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন। তাঁর ওই চওড়া ব্যাটে ভর করে ১৭৬ রান তুলতে সক্ষম হয় টিম ইন্ডিয়া। শুধু তাই নয়, দীর্ঘ ১৭ বছর বাদে টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের ক্ষেত্রে কিং কোহলির ওই ৭৬ রানের ইনিংসের যে অবদান রয়েছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন তাঁর সমালোচকরাও।
দেশকে বিশ্বসেরার সম্মান এনে দেওয়ার পরেই আন্তর্জাতিক টি টোয়েন্টি ম্যাচ থেকে অবসরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন বিরাট কোহলি। টিম ইন্ডিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ম্যাচ সেরার পুরস্কার নিতে এসে খানিকটা আবেগরুদ্ধ কণ্ঠে অবসরের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে গিয়ে বলেন, ‘ঠিক যেটা অর্জন করতে চেয়েছিলাম সেটাই করেছি। মাঝে মাঝে এটা মনে হয় যে আপনি হয়তো রান পাচ্ছেন না। তার পরেই একটা বড় রান চলে আসে। আসলে আমার কাছে ব্যাপারটা ছিল, হয় এখন, না হলে কখনও নয়। এটাই ভারতীয় দলের হয়ে আমার শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ ছিল। আমরা বিশ্বকাপ জিততে চেয়েছিলাম। বিশেষ করে আমি। এটাই সময় নতুন প্রজন্মের হাতে দায়িত্ব তুলে দেওয়ার। অসাধারণ সব ক্রিকেটার রয়েছে দলে। ওরাই দলকে সঠিক পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং দলকে আরও উঁচুতে তুলবে।’
উল্লেখ্য হারারে-তে জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে টি-টোয়েন্টিতে দেশের জার্সি গায়ে অভিষেক হয়েছিল বিরাট কোহলির। তার পর থেকে টি-টোয়েন্টিতে দেশের হয়ে ১২৫টি ম্যাচে প্রতিনিধিত্ব করেছেন। ৪৮.৬৯ গড়ে ৪১৮৮ রান করেছেন। একটি শতরানের পাশাপাশি ৩৮টি অর্ধশতরান রয়েছে তাঁর ঝুলিতে।