‘আপনি তো মায়ের মতো’, বানারহাটে বাড়িতে ঢুকে চা খেলেন মুখ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিনিধি: তিনি এমনি এমনি বাংলার অগ্নিকন্যা হননি। এমনি এমনি বাংলার জনমানসের জনপ্রিয়তম নেত্রী হননি। তিনি বাংলার মেয়ে হয়ে ওঠেননি এমনি এমনি। তাঁর এই সব কিছু হয়ে ওঠার মূলে রয়েছে নিবিড়তম জনসংযোগ। মুহুর্তের মধ্যে ভিড়ে মিশে যেতে পারেন তিনি। চোখের পলকে অতি অপরিচিতকেও আপন করে নিতে জানেন তিনি। তাঁর এই জনসংযোগের(Public Relations) ক্ষমতাকে ইর্ষা করেন তাঁর বিরোধীরাও। দেশের শাসক গেরুয়া শিবিরও মেনে নেয় জনসংযোগে বাংলার অগ্নিকন্যাকে হারাবার ক্ষমতা কারোর নেই। সেই জনসংযোগেই বেড়িয়ে নয় কীর্তি গড়লেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। আলিপুরদুয়ারে সভা সেরেই তিনি চলে আসেন জলপাইগুড়ি জেলার(Jalpaiguri District) বানারহাটে(Banarhat)। সেখানে এসেই তিনি পায়ে হেঁটে বেড়িয়ে পড়েন জনসংযোগ সারতে। সেই সূত্রেই এক বৃদ্ধার বাড়িতে ঢুকে তাঁর সঙ্গে বসে চা খেলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।
জেলা সফরে গিয়ে জনসংযোগকেই সবচেয়ে গুরুত্ব দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। উত্তরবঙ্গে কয়েকদিনের কর্মসূচিতে গিয়েও সেই কাজই করে চলেছেন তিনি। রবিবার জলপাইগুড়ির বানারহাট পৌঁছেই রাস্তায় হাঁটতে বেড়িয়ে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। পথে বড়দের দেখতে পেয়ে তাঁদের হাতে যেমন শীতবস্ত্র তুলে দেন, তেমনি ছোটদের হাতে টেডিবিয়ার উপহার তুলে দেন তিনি। এর পরই রাস্তার ধারে একটি বাড়িতে ঢুকে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে থাকা বয়স্কা মহিলাকে দেখে বলে ওঠেন – ‘আপনি তো মায়ের মতো’। তারপর সেই বাড়িতে ঢুকে চা খান মমতা। ঘরের খাটে বসে সকলের সঙ্গে জমিয়ে গল্প করেন। বাড়ির মেয়ে-বউরা মুখ্যমন্ত্রীকে এভাবে আপনজনের মতো কাছে পেয়ে কার্যত হাতে আকাশের চাঁদ হাতে পাওয়ার মতো উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠেন।
আলিপুরদুয়ারে জনসভা, সরকারি পরিষেবা সেরে বানারহাটে হেলিকপ্টার থেকে নেমেই প্রশাসনিক আধিকারিকদের নিয়ে পায়ে হাঁটা শুরু করেন মুখ্যমন্ত্রী। এর পরই তিনি আদর্শ পল্লির শীতলা মন্দিরে পুজো দেন। পুজো দিয়ে বেরিয়ে তিনি রাস্তার পাশে এক বৃদ্ধাকে দেখে প্রণাম করেন। তার শারীরিক খোঁজখবর নিতে প্রতিভা ভদ্র(Prativa Bhadra) নামে মহিলার কাঠের বাড়িতে ঢুকে পড়েন মুখ্যমন্ত্রী। ঢুকেই তিনি ঠাকুরঘর, রান্নাঘর ঘুরে দেখেন। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের জানান, চা খেতে চান। প্রতিভা ভদ্রের পুত্রবধূ মুখ্যমন্ত্রীকে চা বানিয়ে দেন। সকলের সঙ্গে খাটে বসে সবুজ কাপে চা পান করেন তিনি। তাঁদের শীতের চাদর উপহার দিয়েছেন। সকলে বলছেন, ‘আজ একটা স্বপ্ন পূরণ হলো।' প্রতিভাদেবী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন, 'প্রথমে দেখা হওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী আমাকে প্রণাম করেন। এর পর আমার শরীরের খোঁজখবর নেন। আমার বাড়ির ঠাকুর ঘর, রান্নাঘর ঘুরে দেখেন। কী রান্না হয়েছে, তাও জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। আমার অনেকদিনের ইচ্ছে ছিল মুখ্যমন্ত্রীকে দেখব। সেই স্বপ্ন এদিন পূরণ হল। এটা আমার কাছে স্বপ্নেও অতীত।’