বারুইপুরে তরুণীকে গণধর্ষণ করে খুন, গ্রেফতার প্রেমিক সহ ২
নিজস্ব প্রতিনিধি: প্রেমিকাকে(Girlfriend) বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ৫ বন্ধুর সঙ্গে গণধর্ষণ(Gangrape) করে খুনের অভিযোগ উঠল দক্ষিণ ২৪ পরগনা(South 24 Pargana) জেলার বারুইপুরের(Baruipur) এক যুবকের বিরুদ্ধে। গত ২ দিন নিখোঁজ ছিলেন ওই তরুণী। এরপর বাড়ির কাছাকাছি একটি জলাশয়ে তাঁর দেহ ভাসতে দেখা যায়। খবর পেয়ে এলাকায় গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে পুলিস। বারুইপুর থানায় ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ দায়ের করে মৃতার পরিবার। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই ওই তরুনীর প্রেমিক সহ দু’জনকে গ্রেফতার(Boyfriend Arrested) করেছে পুলিশ। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, নির্যাতিতার পরিবার নরেন্দ্রপুর থানা এলাকায়। তার মামার বাড়ি বারুইপুর থানা এলাকার মদনপুর এলাকায়। মামার বাড়ির পাড়াতেই থাকে তাঁর প্রেমিক অজয় মণ্ডল। দুইজনের আলাপ সোশ্যাল মিডিয়া মারফত। গত ১ জুন মামার বাড়ি যান ওই তরুণী। শুক্রবার রাত ৯টা নাগাদ তাঁকে ফোন করে ডেকেছিল অজয়। এখন অভিযোগ, অজয় আরও কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে ওই তরুণীকে গণধর্ষণ করে খুন করেছে।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে ওই তরুণী মামার বাড়িতে না ফিরলে রাতেই তাঁর খোঁজখবর শুরু করেন তাঁর মামার বাড়ির লোকজন। বার বার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে তরুণী ফোন ধরেননি। রাত ১১টা নাগাদ তরুণীর মোবাইল সুইচড অফ হয়ে যায়। তারপরেই সেই দিন রাতেই বারুইপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরিও করা হয়। রবিবার সকালে আচমকা বাড়ির কাছে জলাশয়ে তাঁর দেহ ভাসতে দেখা যায়। তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় পুলিশে। দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। দেহ শনাক্ত করে দুদিন নিখোঁজ থাকা তরুণীর পরিবারের লোকজন। পরিবারের লোকজনের অভিযোগ, অজয় ও তার বন্ধুবান্ধবরা ওই তরুণীকে ধর্ষণ করে। তার পরই খুন করে প্রমাণ লোপাটের জন্য জলাশয়ে দেহ ভাসিয়ে দেওয়া হয়। এছাড়া তরুণীর পরিবারের দাবি, অজয়ের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। সে এলাকার বেশ কয়েকজন মহিলাকে এর আগেও উত্যক্ত করে বলেও অভিযোগ। তরুণীর পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ অজয়-সহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ধৃতদের সোমবার বারুইপুর মহকুমা আদালতে তোলা হবে।
খুনের ঘটনায় অজয় ছাড়াও দেবাশিস নস্কর নামে তার এক বন্ধুও পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছে। ঘটনার সময় আরও ৪ যুবক ছিল। অর্থাৎ ৬জনে মিলে গণধর্ষণের পরে খুন করে ওই তরুণীকে। শ্বাসরোধ করে খুনের পরে তার দেহ পুকুরে ফেলা দেওয়া হয়। তরুণীর মামার বাড়ির লোকেদের দাবি, অজয়ের বিরুদ্ধে এলাকার অন্যান্য মহিলাদেরও কটুক্তি করার অভিযোগ রয়েছে। তাই ওই তরুণীকে মানা করা হয়েছিল অজয়ের সঙ্গে মেলামেশা না করতে। কিন্তু ওই তরুণী তা শোনেনি। দিনের মধ্যে দীর্ঘ সময় ফোনেও কথা হত উভয়ের। গত শনিবার সোনারপুরে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল ওই তরুণীর। তার আগে শুক্রবার রাতেই ঘটে যায় গণধর্ষণের ঘটনা। তরুণির মামার দাবি, ‘ভাগ্নীকে টেনে নিয়ে গিয়ে বাগানে ধর্ষণ করা হয়েছে। তারপর গলা টিপে মেরে জলে ভাসিয়ে দিয়েছে। মেয়ে যাকে ভালোবাসত সেই ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। তার সঙ্গে আরও লোক ছিল। শনিবার ওর বাড়ি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার ফোন করে ডাকা হয়। তারপর ওকে ধর্ষণ করে খুন করেছে। ওদের চরম শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আমরা চাই অজয়ের শাস্তি হোক। কারণ ও বাইরে থাকলে আরও মেয়েদের ক্ষতি করবে। পাড়ার সব থেকে খারাপ ছেলে ও। সারাদিন নেশা করে ঘুরে বেড়ায়। মহিলাদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করে।’