রাজ্যজুড়ে টানা ৩ দিনের বেসরকারি বাস ধর্মঘট, নজরে ১৮-২০ মার্চ
নিজস্ব প্রতিনিধি: কলকাতা হাইকোর্ট(Calcutta High Court) এবং National Green Tribunal বা জাতীয় পরিবেশ আদালত আগেই নির্দেশ দিয়ে দিয়েছে, ১৫ বছরের মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া যাবতীয় বাস, মিনিবাস, লরি, চার চাকার গাড়ি বা ২ চাকার বাইকও সরিয়ে দিতে হবে। সেই সব যানবাহন মেয়াদ ফোরানোর পরে আর কোনও ভাবেই রাস্তায় নামানো যাবে না। ব্যক্তিগত গাড়ির ক্ষেত্রে এই নিয়ে এখনও পর্যন্ত কোনও সমস্যার কথা সামনে না এলেও রাজ্যের বেসরকারি একাধিক বাস মালিকদের সংগঠনের তরফে তা নিয়ে আপত্তি তোলা হয়েছে। তাঁরা রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানান, কোভিডের জন্য লকডাউনের সময়ে যেহেতু বাস ২ বছর বসে ছিল তাই ১৫ বছরের মেয়তাদ বাড়িয়ে যেন ১৭ বছর করা হয়। যদিও রাজ্য সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, কলকাতা হাইকোর্ট ও জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ না মানা তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাঁরা এই দুই আদালতে এহেন কোনও আপিলও জানাবেন না। আর তারপরেই ‘গণ পরিবহণ বাঁচাও কমিটি’র নামে ৩টি বাস মালিকদের সংগঠনের তরফে আগামী ১৮ থেকে ২০ মার্চ টানা ৩ দিনের বেসরকারি বাস ধর্মঘটের(Private Bus Strike) ডাক দেওয়া হয়েছে বাংলার(Bengal) বুকে।
ধর্মঘট প্রসঙ্গে গণ পরিবহণ বাঁচাও কমিটির নেতা তথা Joint Council of Bus Syndicate’র সাধারণ সম্পাদক তপন বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ১৫ বছরের গেরোয় হাজার হাজার বাস বসে যাচ্ছে। তার ফলে আর্থিক সঙ্কট তৈরি হবে। ১৫ বছরের মেয়াদ অবিলম্বে দু’বছর বাড়িয়ে ১৭ বছর করা হোক। করোনাকালে দু’বছর গাড়ি বসেছিল। পরিবহণমন্ত্রী স্নেহাশিস চক্রবর্তীর কাছে এই সংক্রান্ত দাবিপত্রও দেওয়া হয়েছে। রাজ্য ওই দাবি না-মানলে ১৮ থেকে ২০ মার্চ রাস্তা থেকে বাস-মিনিবাস তুলে নেওয়া হবে। তবে ঘটনা হচ্ছে, ভোটের মুখে এই ধর্মঘটে সামিল হতে চাইছে না রাজ্যের সব বেসরকারি বাস মালিক সংগঠন। কেননা তাঁদের দাবি, এমনিতেই ভোটে বাস তুলে নেওয়া হয় রাস্তা থেকে। তাতে মানুষের দুর্ভোগ বাড়ে। ৩ দিনের ধর্মঘট আদালতের নির্দেশ বদলাতে পারবে না। বরঞ্চ এই ধর্মঘট তাঁদের আদালত অবমাননার মুখে ফেলে দিতে পারে। সেই সঙ্গে বকেয়া কর, সিএফ এবং পারমিটের ওপর রাজ্য সরকার ৩১ মার্চ পর্যন্ত যে ঢালাও ছাড়ের ওয়েভার স্কিম চালু রেখেছে তার সুবিধা নেওয়া যাবে না।
এই প্রসঙ্গে City Suburban Bus Services’র সাধারণ সম্পাদক তথা Joint Forum of Transport Operators নেতা টিটু সাহা জানিয়েছেন, ‘কোভিড পরবর্তীকালে রাজ্য সরকার পরিবহণ শিল্প বাঁচাতে একাধিক কল্যাণকর প্রকল্প কার্যকর করেছে। এই মুহূর্তে বকেয়া কর, সিএফ এবং পারমিটের ওপর ঢালাও ছাড়ের ওয়েভার স্কিম চলছে। এই সুবিধা গ্রহণের মেয়াদ ৩১ মার্চ পর্যন্ত বৃদ্ধিরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্যের পরিবহণ দফতর। দাবি-দাওয়া আদায়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা করা যেতেই পারে। কিন্তু আম জনতাকে বিপাকে ফেলে পরিষেবা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তটি সমর্থন করা যায় না। রাস্তায় গাড়ি নামলেই বাস মালিক কিংবা শ্রমিকদের রুটি-রুজি নিশ্চিত হয়। ধর্মঘট কোনওভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়।’ ধর্মঘটের বিরোধিতা করেছে Sub Urban Bus Services সংগঠনও। তাঁদের দাবি, বাস ধর্মঘট করে যাত্রীদের ভোগান্তি বাড়িয়ে সুরাহা হবে না। সেক্ষেত্রে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করার রাস্তা খুঁজতে হবে।