তারাপীঠে ৫ জুন ফলহারিনী অমাবস্যা তিথিতে রাজবেশে মা তারার বিশেষ পুজোর প্রস্তুতি শুরু
নিজস্ব প্রতিনিধি,বীরভূম: ফলহারিনী অমাবস্যা।এই অমাবস্যা এক অন্য অমাবস্যা। বছরের অন্যান্য অমাবস্যার তুলনায় পৃথক একটি তিথি। তবে কেন এই ফলহারিনি অমাবস্যা গুরুত্ব রয়েছে?এই বিষয়ে হয়তো অনেকের জানা নেই। জানা যায়, এই অমাবস্যা তিথিতে মা কালী অথবা মা তারাকে ফল সহযোগে ভোগ নিবেদন করলে তাদের ইচ্ছা পূরণ হয়। এক কথায় মনস্কামনা পূরণ হয়ে থাকে। আর সেই কারণেই এই ফলহারিণী অমাবস্যার এক অন্য গুরুত্ব রয়েছে বিভিন্ন কালী তীর্থ থেকে শুরু করে তারাপীঠ(Tarapith) তীর্থে। এই বছর ফলহারিনি অমাবস্যা শুরু হচ্ছে বাংলার জৈষ্ঠ মাসের ২২ তারিখ অর্থাৎ ইংরেজির জুন মাসের ৫ তারিখে। প্রত্যেক বছরের মতন এবারও সাড়ম্বরে ফলহারিণী কালীপুজো হবে তারাপীঠে।
জ্যৈষ্ঠমাসের অমাবস্যা তিথি যা ফলহারিণী অমাবস্যা নামেও খ্যাত।সেই দিনেই পূজিত হন আদিশক্তি।এই অমাবস্যা তিথিতে মা তারাকে ফলের ভোগ নিবেদন করলে মনোস্কামনা পূর্ণ হয় বলে বিশ্বাস করেন দূর-দূরান্ত থেকে আগত পুণ্যার্থীরা। তাই ফল দিয়ে মা তারাকে পুজো করেন ভক্তরা।ফলহারিণী অমাবস্যা উপলক্ষে তারাপীঠে তারা মায়ের নিশিরাতে পুজো ও আরতি হয়। রাতে মাকে ফুল এবং ফলের মালা দিয়ে রাজবেশে সাজানো হয়। এই ফলহারিনি অমাবস্যা উপলক্ষে কথিত রয়েছে কোন পর্যটক মা তারার চরণে কোন মনস্কামনা নিয়ে কোন একটি ফল নিবেদন করলে সেই ফল আর কারোর খাওয়া হয় না। এবং যেহেতু অমাবস্যা তিথি রয়েছে এই ফলহারিনি অমাবস্যায় সেই কারণে তারাপীঠ মন্দিরে তিনবার আরতি হয়ে থাকে প্রত্যেক বছর।একটি হচ্ছে সকালবেলায় মঙ্গল আরতি, তারপর সন্ধ্যাবেলায় সন্ধ্যারতি এবং মা তারার(Maa Tara) শয়নের আগে নিশি আরতি।
তারাপীঠ মন্দির(Tarapith Temple) কমিটির এক সেবায়েত গুরুসরন বন্দ্যোপাধ্যায় তিনি জানান, এই ফলহারিনী অমাবস্যা মূলত কারণ এই দিন মা কালীকে ফল দিয়ে সাজিয়ে ফলের ভোগ নিবেদন করা হয় এবং যেহেতু ফলহারিনি অমাবস্যা সেই কারণে মা তারা কে রাজরাজেশ্বরী বেশে সাজানো হয়। দুপুরের অন্ন ভোগে মা তারা কে পাঁচ রকম ভাজা,খিচুড়ি, পোলাও ,ফ্রাইড রাইস, সবজি মাছের মাথা,শোল মাছ পোড়া,মিষ্টি এবং কারণ সহযোগে ভোগ নিবেদন করা হয় এবং সন্ধ্যার পর চলে বিশেষ পুজো। যেহেতু তারাপীঠের সব দেবীর ঊর্ধ্বে মাতারা সেই কারণে যে কোন পূজোতেই মা তারা কে সেই রূপে পূজা করা হয়। যেমন লক্ষী পূজার সময় লক্ষ্মী রূপে, কালী পূজার সময় কালি রূপে,সরস্বতী পুজোর সময় সরস্বতী রূপে এবং দুর্গাপুজোর সময় দুর্গার রূপে। বহু ভক্তের সমাগম ঘটে এই ফলহারিণী অমাবস্যা তিথিতে। তাই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হয় পুলিশকে।