বিট কয়েনে বিনিয়োগের টোপ গিলে ১৫ লক্ষ টাকা খোয়ালেন ব্যবসায়ী
নিজস্ব প্রতিনিধি: সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে(Social Networking Site) মাস দুই আগে পরিচয়। সেই সূত্রেই সে জানিয়েছিল, বিট কয়েনে(Bit Coin) বিনিয়োগ করলে দুই বা তিনগুন রিটার্ন মিলছে। কীভাবে টাকা বিনিয়োগ করতে হবে, সেই পরামর্শ সে দিয়ে থাকে। বিনিয়োগের অঙ্ক যত বেশি হবে, আয় সেই অনুপাতে বাড়বে। বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করতে বেশ কয়েকজনের নামের একটি তালিকাও পাঠায় সে। আর সেই সব দেখেই সেই অচেনা অজানা ব্যক্তির কথার মোহে পা দিয়েছিলেন তিনি। হুঁশ ফিরল, ১৫ লক্ষ টাকা খোয়ানোর পরে। এভাবেই বিট কয়েনে বিনিয়োগের টোপ গিলে ১৫ লক্ষ টাকা খোয়ালেন উত্তর কলকাতার(Kolkata) বড়তলা এলাকার এক ব্যবসায়ী। তাঁর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতারণার মামলা(Cyber Crime) রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ(Bartala PS)। এর পিছনে একটি চক্র জড়িত বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান তদন্তকারীদের।
জানা গিয়েছে, প্রতারিত ব্যবসায়ীর সঙ্গে মাস দুই আগে সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে একজনের পরিচয় হয়। কথায় কথায় সে জানায় বিট কয়েনে বিনিয়োগ করলে দুই বা তিনগুন রিটার্ন মিলছে। কীভাবে টাকা বিনিয়োগ করতে হবে, সেই পরামর্শ সে দিয়ে থাকে। সেই কথা শুনে ওই ব্যবসায়ীর আগ্রহ তৈরি হওয়ায় তাঁকে জানিয়ে দেওয়া হয়, কীভাবে বিনিয়োগ করতে হবে। এরপর তাঁকে একটি টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত করা হয়। সেখানে বিভিন্ন লোক মেসেজের মাধ্যমে তাদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করে। তাদের অনেকেই বিট কয়েনে টাকা ঢেলে কী পরিমাণ রোজগার করে, তা ব্যাখ্যা করায় ভরসা পান ওই ব্যবসায়ী। আসলে এগুলি যে প্রতারকদের টোপ, তা বুঝতে পারেননি ওই ব্যক্তি। জালিয়াত চক্রের লোকজন নিজেরাই মেসেজ পাঠিয়ে তাঁকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করে। প্রথমে অল্প বিনিয়োগ করে ভালো রিটার্ন পান তিনি। ফলে আস্থা বাড়ে ওই ব্যবসায়ীর। এরপর ধাপে ধাপে ১৫ লক্ষেরও বেশি টাকা বিনিয়োগ করেন তিনি। কিছুদিন পর তিনি জানতে চান, রিটার্ন কেমন আসছে? প্রতারকরা জানায় ভালোই রিটার্ন পাবেন। বিট কয়েনের রেট কী হারে প্রতিদিন বাড়ছে, তার ভুয়ো তথ্য অভিযুক্তরা তুলে ধরে ওই ব্যবসায়ীর কাছে। স্বভাবতই আশ্বস্ত হন তিনি।
এরপর চলতি মাসের শেষে তিনি রিটার্নের টাকা ফেরত চান। তারপরই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয় অভিযুক্তরা। তখন ওই ব্যবসায়ী বুঝতে পারেন, তিনি প্রতারকদের পাল্লায় পড়েছেন। অভিযোগ করেন থানায়। তদন্তে নেমে পুলিশ যে নম্বর থেকে প্রতারকরা যোগাযোগ করত, সেটি জোগাড় করেছে। অভিযোগকারীর টাকা তাঁর ব্যাঙ্ক থেকে অন্য একটি অ্যাকাউন্টে ট্রান্সফার হয়। পরে সেটি আরেকটি অ্যাকাউন্টে সরানো হয়। সেই সূত্র ধরেই অপরাধীদের পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। মনে করা হচ্ছে, ওই অ্যাকাউন্টগুলি ভাড়া নেওয়া হয়েছিল। ওই অ্যাকাউন্ট কে বা কারা ব্যবহার করে, তা জানার চেষ্টা চলছে। এর পিছনে একটি চক্র কাজ করছে বলে তদন্তকারীদের অনুমান। চক্রটি ভিন রাজ্যের। তাদের সঙ্গে এ রাজ্যের কারা জড়িত, তা জানার চেষ্টা করছেন তদন্তকারীরা।