মায়ের মৃত্যুর ভুয়ো শংসাপত্র দেখিয়ে ৮৩ লাখ টাকা আত্মসাতের চেষ্টা যুবকের
নিজস্ব প্রতিনিধি: চারিদিকে প্রতারণার সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে। সম্প্রতি মার্কিন স্কলারশিপের জন্যে বাবার ভুয়ো মৃত্যুর শংসাপত্র বানিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন একজন ভারতীয় ছাত্র। শুধু তাই নয়, সে বৃত্তি পাওয়ার জন্যে মাধ্যমিক ফলাফলও জাল করেছিলেন বলে খবর। এবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ভারতে। সম্প্রতি বিহারের রাজধানী পটনায় একটি হোটেলে দুর্ঘটনার পর বিমার টাকার জন্যে মায়ের ভুয়ো মৃত্যু শংসাপত্র বানিয়ে প্রতারণার জাল বিছিয়েছিলেন এক ব্যক্তি। একটি জাল মৃত্যু শংসাপত্রের মাধ্যমে তিনি আমেরিকান বিমা সংস্থার কাছ থেকে প্রায় ৮৩ লক্ষ টাকা নেওয়ার চেষ্টা করে ছিলেন। তবে তাঁর পরিকল্পনা সফল হওয়ার আগেই পুলিশের হাতে আটক হন অভিযুক্ত ব্যক্তি।
জানা গিয়েছে, বিমা কোম্পানির আধিকারিকরা মামলার তদন্ত করতে পটনায় পৌঁছলে অভিযুক্তের কথা ফাঁস হয়ে যায়। অফিসাররা পটনায় পৌঁছলেই আসল ঘটনা বেরিয়ে আসে। আসলে হোটেলের দুর্ঘটনার ঘটনাটি ঘটেছিল গত ২৫ এপ্রিল। জানা গিয়েছিল, পটনা কোতোয়ালি থানা এলাকার পটনা জংশনের কাছে পাল এবং অমিত হোটেলে আগুন লেগেছিল, যাতে প্রায় আটজন মারা গিয়েছিলেন। পুলিশ রেকর্ডে, এই ঘটনায় যারা মারা গিয়েছে, তাদের নাম রাহুল কুমার, দীনেশ সিং, চন্দ্রকলা কুমারী, তেজ প্রতাপ, রিতেশ কুমার, রাজ লক্ষ্মী কিস্কু, প্রিয়াঙ্কা কুমারী এবং মিলনি কিস্কু। কিন্তু যে মহিলার নামে মৃত্যু শংসাপত্র দাখিল করে বিমার টাকা পাওয়ার চেষ্টা করছিল অভিযুক্ত ব্যক্তিটি, তার নাম কোতোয়ালি থানায় বা ফায়ার সার্ভিসের মৃতদের তালিকাতেই নেই। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভিযুক্ত, উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা, তিনি পটনার মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন অফিস থেকে এই জাল মৃত্যু শংসাপত্র তৈরি করেছিলেন।
এরপর তিনি উল্লেখিত হোটেল দুর্ঘটনায় তাঁর মা মারা গিয়েছে, এমন দাবি করে আমেরিকান বীমা সংস্থার কাছ থেকে প্রায় ৮৩ লক্ষ টাকা নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। ওই মহিলার নাম ফায়ার ব্রিগেড অফিসেও ছিল না। নিহতদের সবাইকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং তাদের স্বজনরাও মৃতদেহ নিয়ে গিয়েছে। উত্তরপ্রদেশ থেকে যে ব্যক্তি তার মায়ের ভুয়ো মৃত্যু সনদ তৈরি করে বিমা কোম্পানিকে ৮৩ লাখ টাকা দেওয়ার দাবি করেছিলেন তার নাম মৃতদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত ছিল না। ভুয়ো ডেথ সার্টিফিকেটে মৃত মহিলার নাম সুমন লাল লেখা থাকলেও হোটেল দুর্ঘটনায় ওই নামের কেউ মারা যায়নি বলেই খবর পুলিশ সূত্রের। তা সত্ত্বেও অঙ্কিত নামে এক অভিযুক্ত আমেরিকান ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ন্যাশনাল লাইফ গ্রুপে জাল ডেথ সার্টিফিকেট তৈরি করে ৮৩ লাখ টাকা দাবি করেছিলেষ। দাবিকারী সুমন লালকে তার মা বলে উল্লেখ করেছেন এবং হোটেলে আগুনকে মৃত্যুর কারণেই তাঁর মা গিয়েছে তা দাবী করেছিলেন। এই দাবি বিমা কোম্পানির কাছে গেলে তারা তাদের অফিসারকে তদন্ত করতে পাঠায়। তাদের প্রতিনিধিরা যখন তদন্তের জন্য পাটনায় পৌঁছে এবং পাটনার কোতোয়ালি থানায় মৃতদের তালিকা চেক করেন, তখন প্রতারণা প্রকাশ্যে আসে। সুমন লাল নামে এক মহিলার নাম কোথাও লিপিবদ্ধ করা হয়নি।