আধার নাগরিকত্ব বা বাসস্থানের প্রমাণ নয়, হাইকোর্টে জানাল UIDAI
নিজস্ব প্রতিনিধি: নরেন্দ্র মোদির রাজত্বকালে দেশের সব নাগরিকদের জন্য আধার কার্ড(Aadhar Card) বাধ্যতামূলক ভাবে লাগু করা এক বড় পদক্ষেপ হিসাবে গণ করা হয়। এখন আধার কার্ড ছাড়া যেমন ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্ট খোলা যায় না, তেমনি ফোনের সিম কার্ডও তোলা যায় না। একইসঙ্গে মেলে না রেশন থেকে খাদ্যসামগ্রী। মেলে না কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের কোনও আর্থদামাজিক প্রকল্পের সুবিধাও। আর এই সবের জন্য গেরুয়া শিবির থেকে দাবি করা হতো আধার কার্ডই নাকি দেশের নাগরিকত্বের প্রমাণ। কিন্তু সেই দাবি এবার ধাক্কা খেল খোদ UIDAI’র বিবৃতিতে যা তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টে(Calcutta High Court) জমা দিয়েছে। সেখানে বলে দেওয়া হয়েছে, আধার কার্ড কারও নাগরিকত্ব(Citizenship) বা বাসস্থানের প্রমাণ(Proof of Residential Address) নয়। লোকসভা নির্বাচনের আগে বাংলার নানা এলাকায় আধার বাতিলের হিড়িক বলে গিয়েছিল। সেই সম্পর্কেই মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সেখানেই মামলার শুনানিতে UIDAI এই তথ্য জানিয়েছে।
NRC’র বিরুদ্ধে যৌথ ফোরাম বাংলায় আধার কার্ড নিষ্ক্রিয়করণ নিয়ে বিভ্রান্তির দিকে ইঙ্গিত করে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেছিল। সেই মামলা শুনানির জন্য উঠেছিল কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবাজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরন্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে। মামলাটি আদতে একটি পিআইএল হিসাবে দায়ের হয়েছিল। সেই মামলার শুনানিতে ফোরামের কাউন্সিল ঝুমা সেন জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের বক্তব্যে বিভ্রান্তি এবং দ্বন্দ্ব রয়েছে। এই বিষয়ে CMO থেকে একটি চিঠি PMO-তে পাঠানো হয়েছে এবং বাংলার রাজ্যসভার একজন সদস্যও বিষয়টি কেন্দ্রের কাছে তুলেছেন। UIDAI প্রাথমিকভাবে বলেছিল যে এটি ছিল একটি প্রযুক্তিগত ত্রুটি। অর্থাৎ আধার বাতিলের ঘটনা ছিল প্রযুক্তিগত ত্রুটি। তারপরেও UIDAI কাউন্সিল যুক্তি দিয়েছিলেন যে পিটিশনটি রক্ষণাবেক্ষণযোগ্য নয় কারণ এটি এমন ব্যক্তিদের পক্ষে আবেদন করেছিল যারা ভারতের নাগরিক নয়।
তবে কলকাতা হাইকোর্টে UIDAI স্পষ্ট করেছে যে একটি আধার নম্বর জনগণের নাগরিকত্বের প্রমাণ দেয় না। আধার নম্বর বাসস্থানেরও প্রমাণ নয়। UIDAI’র সিনিয়র কাউন্সিল লক্ষ্মী গুপ্তা আদালতে জানিয়েছেন, ১৮২ দিনের বেশি দেশে থাকা বাসিন্দাদের আধার কার্ড দেওয়ার চেষ্টা করা হয় সরকারি সাহয্য দেওয়ার উদ্দেশ্যে। NRC’র বিরুদ্ধে জয়েন্ট ফোরামের দ্বারা আধার আইন, ২০২৩ এর ২৮A, যা বিশেষভাবে বিদেশী নাগরিকদের সঙ্গে সম্পর্কিত, সেই বিষয়ে জানাতে গিয়েই আদালতে এই তথ্য জমা করেন লক্ষ্মী। সেই সঙ্গে তিনি এটাও জানান যে, UIDAI চাইলে ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরে দেশে থাকা বিদেশী নাগরিকের আধার কার্ড নিষ্ক্রিয় করতে পারে। পাসপোর্ট কর্তৃপক্ষ বা ফরেনার্স অ্যাক্ট পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইনপুট পাওয়ার পরে UIDAI 29 এর অধীনে প্রদত্ত ব্যক্তিদের নথিগুলির বিষয়ে তদন্ত করতে পারে বলেই জানানো হয়েছে।