পানিহাটিতে পুরপ্রধান বদল করতে পারে তৃণমূল, শনিবার বৈঠক
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের A Grade তকমাপ্রাপ্ত পুরসভা(A Grade Municipality)। অথচ সেখানেই কিনা নাগরিক পরিষেবা কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। নিট রেজাল্ট, লোকসভা নির্বাচনে শহরের বুকে একুশের ভোটের তুলনায় ১৫ হাজার ভোট কমে গিয়েছে। শহরের জনতা তো বটেই, খোদ শাসক দলের নেতাকর্মীদের দাবি, বেহাল নাগরিক পরিষেবার কারণেই শহরে ভোট কমেছে শাসকের। অগ্যতা আগামিকাল শহরের শাসক দলের সব কাউন্সিলরদের নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম(Firhad Hakim)। আর সেই বৈঠকের প্রাক্কালে শহরে জোর গুঞ্জন ছড়িয়েছে, বৈঠকের পরেই প্রায় বিরোধীহীন পুরসভায় পুরপ্রধান বদলের পথে হাঁটতে পারে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস(TMC)। নজরে উত্তর ২৪ পরগনা(North 24 Pargana) জেলার ব্যারাকপুর মহকুমার পানিহাটি পুরসভা(Panihati Municipality)। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্ভবত এবার আর মলয় রায়কে পুরপ্রধান পদে রাখা হবে না। কেননা তাঁর দ্বারা যে কাজ হচ্ছে না, সেটা মেনে নিচ্ছেন খোদ স্থানীয় তৃণমূল বিধায়ক নির্মল ঘোষও। যদিও বিধায়কের দাবি, পুরপ্রধান অসুস্থ। তাই পুরপরিষেবায় নজরদারি চালাতে পারেন না।
লোকসভা ভোটের আগে থেকেই বিভিন্ন বিষয়ে পানিহাটির বাসিন্দাদের অভিযোগের তিরে বিদ্ধ শতাব্দীপ্রাচীন এই পুরসভা। অভিযোগের সুর শোনা গিয়েছিল খোদ শাসকদলের পুরপ্রতিনিধিদের গলাতেও। কেন এই হাল, তা খতিয়ে দেখতে আগামিকাল সমস্ত পুরপ্রতিনিধি ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের বৈঠকে ডেকেছেন ফিরহাদ। পানিহাটি পুরসভাতেই এই বৈঠক হবে। রাজ্যের পুরমন্ত্রীর এই পর্যালোচনা বৈঠক ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন জল্পনা। স্থানীয় বাসিন্দা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক মহল, পুরপ্রধান বদল নিয়ে চলছে চাপা গুঞ্জন। কিন্তু সেই চেয়ারের দখল কে নেবেন, তা নিয়েও তৈরি হয়েছে সংশয়। পুরপ্রতিনিধিদের অনেকেই বলছেন, ‘এটা পুরপ্রধান বদলের বৈঠক নয়। আর, যদি তা শেষ পর্যন্ত হয়ও, সে বিষয়ে দলের শীর্ষ নেতৃত্বই সিদ্ধান্ত নেবেন।’ তবে, মাসকয়েক আগে পানিহাটির পুরপ্রধানের বদল চেয়ে শাসকদলের যে ৩২ জন পুরপ্রতিনিধি দলের শীর্ষ স্তরে চিঠি দিয়েছিলেন, তাঁরা এবার আশাবাদী।
জানা গিয়েছে, বিগত ৬ মাস ধরে পানিহাটি পুরসভায় বোর্ড মিটিং বন্ধ। তার ফলে কার্যত থমকে রয়েছে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ। অনিয়মিত পানীয় জল সরবরাহ, নিকাশির সংস্কারের অভাবে জল জমা, বাসিন্দাদের আন্দোলনের জেরে ভাগাড়ে আবর্জনা ফেলা বন্ধ থেকে শুরু করে ভাঙাচোরা রাস্তাঘাট, এলাকার বাতিস্তম্ভে আলো না থাকার মতো একাধিক সমস্যায় জর্জরিত পানিহাটি। অন্য দিকে, ঠিকাদারদের কয়েক কোটি টাকা বকেয়া থাকায় তাঁরা নতুন করে কাজ করতে চাইছেন না। মিউটেশন ফি এবং অন্যান্য রাজস্ব আদায় বন্ধ থাকায় পুরসভার নিজস্ব কোনও আয় নেই। ফলে, ব্যাঙ্কের স্থায়ী তহবিলে হাত পড়েছে। সেই তহবিল ফুরিয়ে এলে চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের বেতন ও অবসরপ্রাপ্তদের প্রাপ্য টাকা কী ভাবে দেওয়া হবে, তা নিয়ে সংশয়ে পুর আধিকারিকেরাই। যদিও আগে থেকেই পুরপ্রধান দাবি করে আসছেন, তিনি কোনও ভাবেই এই ব্যর্থতার দায় নেবেন না। বরং তাঁর অভিযোগ, কেউ কেউ ব্যক্তিগত স্বার্থে দলকে ব্যবহার করে পুরসভায় অচলাবস্থা তৈরি করেছেন।