For the best experience, open
https://m.eimuhurte.com
on your mobile browser.
OthersWeb Stories খেলা ছবিঘরতৃণমূলে ফিরলেন অর্জুন সিংবাংলাদেশপ্রযুক্তি-বাণিজ্যদেশকলকাতাকৃষিকাজ বিনোদন শিক্ষা - কর্মসংস্থান শারদোৎসব লাইফস্টাইলরাশিফলরান্নাবান্না রাজ্য বিবিধ আন্তর্জাতিককরোনাএকুশে জুলাইআলোকপাতঅন্য খবর
Advertisement

গঙ্গা থেকে ৫কিমি দূরে যাবতীয় নির্মাণ, মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে শিলমোহর

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিদ্ধান্তকেই শিলমোহর দিল সেচ ও জলসম্পদ দফতরের স্ট্যান্ডিং কমিটি। গঙ্গার ৫ কিমির মধ্যে নয় কোনও নির্মাণ।
12:36 PM Feb 20, 2024 IST | Koushik Dey Sarkar
গঙ্গা থেকে ৫কিমি দূরে যাবতীয় নির্মাণ  মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে শিলমোহর
Courtesy - Google
Advertisement

নিজস্ব প্রতিনিধি: চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের একদম শেষ দিকে মালদা(Malda) ও মুর্শিদাবাদ(Murshidabad) জেলা সফরে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সেই সময় তিনি জানিয়েছিলেন দুই জেলার জন্য গঙ্গা-পদ্মা ভাঙন ঠেকাতে ১৮০ কোটি টাকার কাজ শুরু হচ্ছে এবং সেই কাজের জন্য তিনি রাজ্য সরকারের তরফে আরও ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করছেন। একই সঙ্গে তিনি জানিয়েছিলেন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গঙ্গার ধার থেকে ১০ কিমির মধ্যে যেন বাড়ি তৈরির অনুমোদন না-দেওয়া হয়। রাজ্য বিধানসভায় মুর্শিদাবাদ, মালদা ও নদিয়া(Nadia) জেলায় গঙ্গা ভাঙনের(Ganga River Erosion) ভয়াবহ রূপ উঠে এসেছে রাজ্যের সেচ ও জলসম্পদ দফতরের স্ট্যান্ডিং কমিটির রিপোর্টে। সেখানে জানানো হয়েছে, ওই ৩ জেলায় গঙ্গার ভাঙনে গত ১৮ বছরে মোট ৩৩৭৫ হেক্টর জমি নদীগর্ভে চলে গিয়েছে। শুধু মুর্শিদাবাদে ১৫ বছরের ভাঙনে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ১ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি ধ্বংস হয়েছে। ৩ জেলার ১৫টি ব্লক ও একটি পুর এলাকার ৪০০ বর্গ কিমি এলাকা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Advertisement

রাজ্য বিধানসভার সেচ ও জলসম্পদ দফতরের স্ট্যান্ডিং কমিটির সদস্যরা সম্প্রতি মালদা, মুর্শিদাবাদ ও নদিয়া জেলার গঙ্গা ভাঙন এলাকাগুলি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে ফিরেই তাঁরা রিপোর্ট দাখিল করেছেন রাজ্য বিধানসভায়। সেখানেই জানানো হয়েছে ২০০৫ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ৩ জেলায় কী পরিমান ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে গঙ্গার ভাঙনের জন্য। সেখানকার পরিস্থিতি এমনই দাঁড়িয়েছে যে সরকারের কাছে কমিটি সুপারিশ করেছে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গঙ্গার ধার থেকে ৫ কিমির মধ্যে যেন বাড়ি তৈরির অনুমোদন না-দেওয়া হয় যা কার্যত মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেরই ওপর বাড়তি শিলমোহর দিয়েছে। একই সঙ্গে কমিটি সুপারিশ করেছে যে, ৩ জেলায় গঙ্গা ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলিকে রাজ্য সরকার যেন দ্রুত পুনর্বাসন দেয় এবং কেন্দ্র সরকার তথা বিহার ও ঝাড়খন্ডের রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে ভাঙন প্রতিরোধে উদ্যোগী হয়।   

Advertisement

কমিটির বক্তব্য, ৩ জেলার গঙ্গা তীরবর্তী এলাকাগুলি আদতে নদীর নিম্ন অববাহিকায় অবস্থিত। তাই গঙ্গার বিপুল জলরাশির ধাক্কাতেই ভাঙন সেখানে অনিবার্য হয়ে উঠেছে। তাছাড়া ফারাক্কা ব্যারেজ চালু হওয়ার পর গঙ্গার মধ্য ও নিম্ন প্রবাহে ভাঙনের প্রবণতা বেড়েছে। সেখানে গঙ্গার গতিপথ পরিবর্তন হওয়ায় বিপজ্জনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। মালদার মানিকচক ব্লক এবং বিলমারিতে গঙ্গা ও ফুলহার নদীর মধ্যে দূরত্ব ৪ হাজার মিটার থেকে কমে দেড় হাজার মিটার হয়েছে। নিম্নপ্রবাহে গঙ্গার ডানদিকে ভাঙন শুরু হওয়াটা খুবই উদ্বেগের ব্যাপার। কারণ ডানদিকে রয়েছে রাজ্য সড়ক, জাতীয় সড়ক, রেলপথ, ফারাক্কা ফিডার কাম নেভিগেশন ক্যানাল, জঙ্গিপুর ব্যারাজ প্রভৃতি। শঙ্কপাড়া হল্ট স্টেশনের কাছে গঙ্গা থেকে রেলপথের দূরত্ব কমে মাত্র ৫২০ মিটারে চলে এসেছে। কেন্দ্রের জলসম্পদ মন্ত্রক ফরাক্কা ব্যারেজের দু’দিকে মোট ১২০ কিমি এলাকায় ভাঙন প্রতিরোধের দায়িত্ব আগে নিয়েছিল। কিন্তু ২০১৭ সালের পর সেটা মাত্র ১৯.৪ কিলোমিটারে নামিয়ে এনেছে। ২০০৫ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত কেন্দ্র মাত্র ৩৪২ কোটি টাকা খরচ করেছে কেন্দ্র। প্রতি কিলোমিটার এলাকার ভাঙন প্রতিরোধে খরচ পড়ে ১৫-২০ কোটি টাকা। আর্থিক সীমাবদ্ধতার মধ্যেও রাজ্য সরকার নিজের টাকায় গত ৪ বছরে ৫৫টি জায়গায় মোট প্রায় ৩৮৯ কোটি টাকা খরচ করেছে।

উল্লেখ্য, মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলা সফরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘যারা ঘরবাড়ি হারিয়েছেন, তাঁদের পাট্টা দিয়ে দেবেন। গঙ্গা ভাঙনে যাদের ঘর বাড়ি চলে গিয়েছে বা ভেঙে যেতে পারে তাঁদের দূরে সরে যেতে হবে। ভাঙন কবলিত এলাকার জন্য স্পেশ্যাল ব্যবস্থা নিয়ে দরকার হলে বাড়ি বানিয়ে দিতে হবে। জমি তো আমরা দেব, দরকার পড়লে বাড়িও বানিয়ে দিতে হবে। ভাঙন এলাকা থেকে ১০ কিমি দূরে সরকারি জমিতে বাড়ি বানিয়ে দিন। গঙ্গা ভাঙন এখানে বড় সমস্যা, কেন্দ্র সব টাকা বন্ধ করে দিয়েছে। আমার যেটুকু সাধ্য আমি সেটাই করবো।’ মুখ্যমন্ত্রীর সেই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়ে ভাঙন দুর্গতরা বলেছিলেন, ‘দিনের পর দিন আমরা অবহেলিত। গঙ্গা ভাঙনে আমাদের ভিটে, জমি সব হারিয়েছি। কেন্দ্রীয় সরকার উদাসীন। মুখ্যমন্ত্রী আমাদের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছিলেন। উনি যে পাশে আছেন সেটা আমরা জানি। এবার তিনি যে ভাঙন রোধের জন্য কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে কাজ করতে উদ্যোগী হয়েছেন তাতে আমরা খুশি। তাড়াতাড়ি কাজ শুরু হোক, এটাই চাই। গঙ্গা আমাদের জমি বাড়ি সব গিলে খেয়েছে। আমরা চাই এবার নদীতে পোক্ত বাঁধের ব্যবস্থা করুন। তাহলে আর কারও জমি, বাড়ি গঙ্গায় তলিয়ে যাবে না। পদ্মা বিশাল নদী। সামান্য বাঁধে তো আটকে রাখা যাবে না। তাই অল্প অল্প করে যেটুকু কাজ হবে, যেন ভালো করে হয়।’

Advertisement
Tags :
Advertisement