বাংলার সব গ্রাম পঞ্চায়েতকে দিতে হবে ৮ বছরের সব খরচের হিসাব
নিজস্ব প্রতিনিধি: কেন্দ্রে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফিরেই ফের বাংলার(Bengal) প্রতি কড়া মনোভাব নিতে শুরু করে দিয়েছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi) সরকার। রাজ্যের ক্ষমতাসীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকারকে চিঠি পাঠানো হয়েছে কেন্দ্রের তরফে। সেই চিঠিতে বলে দেওয়া হয়েছে, বাংলার সব গ্রাম পঞ্চায়েতকে(Gram Panchayats) গত ৮ বছরের আর্থিক হিসেব(Financial Accounting) জমা দিতে হবে। শুধু তাই নয়, পঞ্চায়েত ধরে ধরে কত জনসংখ্যা, যেখানে নির্বাচন হয়েছে, সেখানে বর্তমানে বোর্ড আছে কি না, ইত্যাদি জানাতে হবে। কেন্দ্রের এই চিঠি পাওয়ার পর রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর(Panchayat Department) থেকেও প্রতিটি জেলাকে যাবতীয় তথ্য জমা দিতে বলেছে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের(15th Finance Commission) টাকা খরচ নিয়ে এখন জেলায় জেলায় তৎপরতা চলছে। কেননা ২০২৬ সালের মার্চ মাসে এই কমিশনের মেয়াদ ফুরিয়ে যাবে। আর তার জেরে এখন থেকেই কেন্দ্র সরকার ষোড়শ অর্থ কমিশনের প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছে। সেই সূত্রেই আগের টাকার হিসাব চাওয়া হয়েছে।
নবান্ন সূত্রের খবর, চতুর্দশ ও পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের টাকার হিসেবই মূলত দেখতে চাইছে কেন্দ্র। তারা যে ফরম্যাট পাঠিয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, ২০১৫-১৬ থেকে ২০২৩-২৪ সাল পর্যন্ত প্রতিটি পঞ্চায়েত কত টাকা পেয়েছে ও তার মধ্যে কত খরচ করেছে, তা উল্লেখ করতে হবে। পাশাপাশি তাদের নিজস্ব আয়ের পরিমাণও জানাতে হবে। রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের আধিকারিকদের দাবি, পুরনো টাকার কতটা খরচ হয়েছে, তার ওপরই হয়তো ভিত্তি করে রাজ্যের জন্য ষোড়শ অর্থ কমিশনের বরাদ্দ ঠিক করা হবে। রাজ্য বর্তমানে এই খাতে যে টাকা পাচ্ছে, তা বাড়বে নাকি একই থাকবে, সবটাই নির্ভর করছে পঞ্চায়েতগুলির পাঠানো তথ্যের ওপর। বর্তমানে চতুর্দশ অর্থ কমিশনের কোনও টাকা আর পড়ে নেই। সব জেলাই তাদের প্রাপ্য টাকা খরচ করেছে বলে জানা গিয়েছে।
অন্যদিকে, পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের ৩০০০ কোটিরও বেশি টাকা অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এখনও পর্যন্ত খরচ হয়েছে ৭০০ কোটির কাছাকাছি। ফলে এখনও বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করা বাকি। এর মধ্যে আগামী দিনে ধাপে ধাপে আরও টাকা ঢুকবে। তাই প্রতিটি জেলাকে গ্রামোন্নয়নের কাজে বেশি করে টাকা খরচের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতর। কেন্দ্রের পাঠানো টাকা যাতে সঠিক ভাবে খরচ হয় তার জন্য নবান্ন থেকে যেমন জেলা, ব্লক মায় গ্রাম পঞ্চায়েত স্তর অবধি কড়া নজরদারি চালানো হচ্ছে। ঠিক তেমনি রাজ্যের পঞ্চায়েত দফতরের আধিকারিকেরা প্রতিনিয়ত জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করে যাতে দ্রুত টেন্ডার ডেকে ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া যায়, সেই সব দেখভাল করছেন।