১৫ আগস্টের মধ্যে বাংলায় ১ কোটি ২২ লক্ষ মহিলার জন্য শৌচাগারের বন্দোবস্ত
নিজস্ব প্রতিনিধি: মহিলাদের মাথা উঁচু করে বাঁচার স্বার্থে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার বাংলার(Bengal) বুকে একের পর এক জনমুখী প্রকল্প এনেছে। কোষাগারে টানাটানি সত্ত্বেও কখনও এসব প্রকল্পে অর্থ জোগানে খামতি হতে দেননি তিনি। এবার মহিলাদের জন্য আরও এক নজিরবিহীন সিদ্ধান্ত নিল তাঁর নেতৃত্বাধীন মা-মাটি-মানুষের সরকার। ১৫ আগস্ট বা দেশের স্বাধীনতা দিবসের(Independence Day) আগে রাজ্যের ১ কোটি ২২ লক্ষ মহিলার জন্য টয়লেট বা শৌচাগারের(Toilet for Women) বন্দোবস্ত নিশ্চিত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে মমতার সরকার। আর তার জন্য কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় Mission Mode-এ কাজ করে ১৫ আগস্টের মধ্যে এই লক্ষ্যে পৌঁছনোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই মর্মে চিঠিও পৌঁছে গিয়েছে প্রতিটি জেলায়। পাহাড়েও যাতে এই কাজ হয় তার জন্য নবান্নের তরফে চিঠি দেওয়া হয়েছে GTA সচিবকেও।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, রাজ্যের ১ কোটি ২২ লক্ষ মহিলার জন্য টয়লেট বা শৌচাগারের বন্দোবস্ত করতে রাজ্য সরকার প্রত্যেক উপভোক্তাকে শৌচাগার তৈরির জন্য ১২ হাজার টাকা করে দেবে। বাংলাকে উন্মুক্ত শৌচ মুক্ত করার লক্ষ্যে আগে থেকেই গ্রামে গ্রামে শৌচাগার তৈরির কাজ করেছে রাজ্য সরকার। তবে এবার ন্যায্য প্রাপক বেছে নেওয়া হবে ভিন্ন পদ্ধতিতে। মহিলাদের সমস্যা মহিলারাই বেশি ভালো বোঝেন। তাই মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নেত্রীদের মাধ্যমে উপভোক্তা বেছে নেওয়ার কাজ হবে এবার। মহিলাদের সম্ভ্রম এবং সুস্বাস্থ্যের জন্য উন্মুক্ত শৌচকর্ম বিপজ্জনক। বাংলাকে কেন্দ্র সরকার ইতিমধ্যে উন্মুক্ত শৌচ মুক্ত রাজ্য হিসেবে ঘোষণা করেছে। কিন্তু সেই সঙ্গে এটাও সত্যি যে এ রাজ্যে প্রতি বছরই বাড়ছে জনসংখ্যা। তৈরি হচ্ছে নয়া বাসস্থান। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শৌচাগারের প্রয়োজনীয়তা। কিন্তু সেই পরিমাণ শৌচাগার তৈরি হচ্ছে না। এই খামতি আগেই চোখে পড়েছে রাজ্যের। আর তাই এবারে এই লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।
নবান্ন সূত্রের খবর, এখন রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের অধীনে রয়েছে ১২ লক্ষ ৫ হাজার ৮৪৬টি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী। মোট সদস্য সংখ্যা ১ কোটি ২২ লক্ষ ৭৬৪। এদেরকেই প্রকৃত উপভোক্তা বাছাই করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে কাজ শুরু করে সম্পূর্ণ করা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপের সময়সীমাও বেঁধে অদেওয়া হয়েছে। আগামিকাল অর্থাৎ ২৮ জুন এই বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের সব Block Development Officer বা BDO-রা নিজ নিজ ব্লকের স্বনির্ভর গোষ্ঠীর নেত্রীদের নিয়ে বৈঠক করবেন। ১ থেকে ৭ জুলাই গোষ্ঠীর সদস্যদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা সেরে নেবেন নেত্রীরা। জেনে নেওয়া হবে, কার কার বাড়িতে শৌচাগারের প্রয়োজন রয়েছে। তার ভিত্তিতে তৈরি হবে প্রাথমিক উপভোক্তা তালিকা। ৮ জুলাইয়ের মধ্যে সেই তালিকা জমা পড়বে BDO-র কাছে। এরপর BDO-র অধীনস্থ একটি দল সেই তালিকা ধরে শৌচাগার না থাকা বাড়িগুলিতে গিয়ে সরেজমিনে পরিস্থিতি যাচাই করবেন। তার ভিত্তিতে চূড়ান্ত তালিকা তৈরি করে ৯ থেকে ১২ জুলাইয়ের মধ্যে BDO-রা তা আপলোড করবেন রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের Rural Sanitation Portal-এ। তারপরেই সরাসরি উপভোক্তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পৌঁছবে ১২ হাজার টাকা। এই কাজের জন্য ১৫ আগস্ট স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির হাতে শংসাপত্র তুলে দেবেন জেলাশাসকরা।