চলতি মাসেই মুখ্যমন্ত্রীর হাতে উদ্বোধন হবে হিঙ্গলগঞ্জের বনবিবি মন্দিরের
নিজস্ব প্রতিনিধি: ডাঙায় বাঘ আর জলে কুমিরের সঙ্গে বরাবর লড়াই সুন্দরবনবাসীর। আর সেই লড়াই থেকে বাঁচতে এলাকার মানুষের সহায় বনবিবি(Goddess Bon Bibi)। সুন্দরবন(Sundarban) এলাকার মানুষ জীবিকার সন্ধানে জলে-জঙ্গলে যাওয়ার আগে বনবিবিকে পুজো দেন। কিন্তু সেই বনবিবির মন্দিরই দীর্ঘদিন বেহাল অবস্থায় পড়েছিল উত্তর ২৪ পরগনা(North 24 Pargana) জেলার বসিরহাট মহকুমার(Basirhat Sub Division) হিঙ্গলগঞ্জ ব্লকের(Hingalganj Block) কালীতলা গ্রাম পঞ্চায়েতের সামশেরনগরে। কুঁকড়েখালি জঙ্গল ও নদীর পাশে গড়ে ওঠা এই মন্দিরের দুরাবস্থা নজরে এসেছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee)। অবশেষে রাজ্য সরকারের ২ কোটি টাকারও বেশি আর্থিক সাহায্যে সেই মন্দির নতুন করে ফের গড়ে তোলা হয়েছে ওই একই জায়গাতে। সেই নবনির্মিত মন্দিরের উদ্বোধন চলতি মাসেই হতে চলেছে মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে।
২০২২-এর নভেম্বর মাসে হিঙ্গলগঞ্জের সামশেরনগরের কালীতলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সময় স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি ছিল, বনবিবির এই মাটির কাঁচা থানটিকে যেন পাকা করা হয়। আর সেই দাবি মতো থানটি নতুনভাবে সাজানোর পরিকল্পনা হয়। Plan ও DPR পেশ করার পর মেলে অনুমোদনও। ওই বছরই ২৯ নভেম্বর বনবিবি থানটির শিলান্যাস করেন মুখ্যমন্ত্রী। মন্দির নতুন করে তৈরির পাশাপাশি জেলা পরিষদের তরফে এলাকার প্রায় ১২ কিমি রাস্তা নতুন করে সংস্কার হয়েছে। মন্দির তৈরি হয়েছে শ্বেতপাথর দিয়ে। মন্দিরের চারিপাশে দেওয়া হয়েছে পাঁচিল। আর মন্দিরের ভিতর ও বাইরে বসেছে পর্যাপ্ত আলো। মন্দির তৈরির জন্য পূর্তদপ্তরের পক্ষ থেকে ৭৮ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। আর রাস্তা সংস্কারের জন্য ১ কোটি ২৩ লক্ষ টাকা ব্যয় করেছে জেলা পরিষদ।
এই প্রসঙ্গে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা অশোকনগরের তৃণমূল বিধায়ক নারায়ণ গোস্বামী জানিয়েছেন, ‘একেবারেই বেহাল অবস্থায় পড়েছিল হিঙ্গলগঞ্জের বনবিবি মন্দির। মুখ্যমন্ত্রী সেই মন্দিরে পুজো দিয়ে এর সংস্কারের আশ্বাস দেন। কথা রেখেছেন তিনি। দুই কোটির বেশি টাকা খরচ করে মন্দির ও এলাকার উন্নয়ন হয়েছে। ডিসেম্বর মাসেই নতুনভাবে সজ্জিত এই মন্দিরের উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং। এখন সেই দিনটির অপেক্ষাতেই রয়েছে সুন্দরবনের মানুষ। এই বনবিবির থান সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক অনন্য ক্ষেত্র। হিন্দু-মুসলমান ধর্ম নির্বিশেষে মানুষ এখানে পুজো দেয়। রাস্তাঘাটের আমূল পরিবর্তন করা হয়েছে। প্রতিশ্রুতি পূরণের অপর নাম মমতা বন্দ্যোপাধায়। সম্ভবত উনি ভার্চুয়ালি এটির উদ্বোধন করবেন। এই মন্দিরটি বিশেষ আবেগের। এটি নতুন করে সেজে ওঠায় মানুষ এখানে আসা শুরু করেছেন। এলাকার আর্থ সামাজিক উন্নয়ন হবে বলেও আমাদের বিশ্বাস।’