OthersWeb Stories
খেলা | অন্যান্যক্রিকেটফুটবল
ছবিঘরতৃণমূলে ফিরলেন অর্জুন সিংবাংলাদেশপ্রযুক্তি-বাণিজ্যদেশকলকাতাকৃষিকাজ
বিনোদন | ধারাবাহিকটলিউডবলিউডহলিউড
শিক্ষা - কর্মসংস্থান
শারদোৎসব | মহালয়াবনেদিবাড়ির পুজোপুজো ভ্রমণপুজো বাজারতাহাদের কথাতারাদের পুজোগ্রামবাংলার পুজোআজকের দশভূজা
লাইফস্টাইলরাশিফলরান্নাবান্না
রাজ্য | হুগলিহাওড়ামুর্শিদাবাদমালদহবীরভূমবাঁকুড়াপূর্ব মেদিনীপুরপূর্ব বর্ধমানপুরুলিয়াপশ্চিম মেদিনীপুরপশ্চিম বর্ধমাননদিয়াদার্জিলিংদক্ষিণ দিনাজপুরদক্ষিণ চব্বিশ পরগনাঝাড়গ্রামজলপাইগুড়িকোচবিহারকালিম্পংউত্তর দিনাজপুরউত্তর চব্বিশ পরগনাআলিপুরদুয়ার
বিবিধ | আনন্দময়ী
আন্তর্জাতিককরোনাএকুশে জুলাইআলোকপাতঅন্য খবর

শুভেন্দু আগ বাড়িয়ে মন্তব্য না করলেই পারতেন, মানছেন পদ্ম নেতারাও

বঙ্গ বিজেপির অন্দরে শুভেন্দুর মন্তব্য নিয়ে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। তাঁর বোমা ফাটার মন্তব্য আগাম না এলেই ভাল হতো বলে মানছেন তাঁরা।
09:51 AM Apr 23, 2024 IST | Koushik Dey Sarkar
Courtesy - Google

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজনীতিতে বিরোধীপক্ষকে চ্যালেঞ্জ ছোঁড়া, দেখে নেওয়ার হুমকি ধমকি লেগেই থাকে। কিন্তু তা বলে হাজার হাজার মানুষের চাকরির সঙ্গে জড়িত মামলার রায় আদালত কী দিতে চলেছে, সেটা কী আগাম ইঙ্গিত দিয়ে বলে উচিত? কিংবা সেই বিষয়টি কী রাজনীতির হাতিয়ার করে তোলা উচিত? গতকাল কলকাতা হাইকোর্টের(Calcutta High Court) স্পেশ্যাল ডিভিশন বেঞ্চ কলমের এক খোঁচায় বাংলার(Bengal) বুকে প্রায় ২৬ হাজার মানুষের চাকরি কেড়ে নিয়েছে। সেই ঘটনার ২ দিন আগে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী(Suvendu Adhikari) সরাসরি মন্তব্য করেছিলেন, সপ্তাহের শুরুতেই বোমা ফাটতে চলেছে। গতকালের রায়ের পরে তিনি জানিয়েছেন, তিনি এই রায় সম্পর্কে কিছু বলতে চাননি। কিন্তু ঘটনা হচ্ছে, খোদ বঙ্গ বিজেপির(BJP) অন্দরে শুভেন্দুর মন্তব্য নিয়ে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। পদ্ম নেতারা প্রকাশ্যে এই নিয়ে মুখ না খুললেও একান্তে তাঁরা মানছেন যে, শুভেন্দু এই ইস্যুতে আগাম মুখ খুলে কিছু না বললেই পারতেন।

ক্ষোভের কারণ কী? বাংলার প্রায় সবাই মনে করছেন, কলকাতা হাইকোর্টের রায় সরাসরি লোকসভা নির্বাচনে(Loksabha Election 2024) বাংলার বুকে বড়সড় প্রভাব ফেলতে চলেছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে থাকা বাম-কংগ্রেস-বিজেপি একযোগে দাবি করছে, এই রায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে। রাজ্যের দুর্নীতিবাজ সরকারের বিরুদ্ধে আদালতের এই রায় আমজনতাকে বাধ্য করবে তৃণমূলের বিকল্প বেছে নিতে। কিন্তু সত্যিই কী তাই! প্রকাশ্যে দাবি করা আর চার দেওয়ালে অন্দরে আলোচনা করার মধ্যে অনেক ফারাক থাকে। কেননা চার দেওয়ালের মধ্যে এমন কথাও আলোচনায় উঠে আসে যা প্রকাশ্যে বলা যায় না। বাম থেকে কংগ্রেস মায় বিজেপির নেতারাও প্রকাশ্যে যে দাবিই করে চলুন না কেন, চার দেওয়ালের অন্দরে তাঁরা স্বীকার করছেন, এই রায় ভালোর চেয়ে মন্দ বেশি করেছে। একই সঙ্গে শুভেন্দুর মন্তব্য গোটা বিষয়টিকে স্পর্শকাতর পর্যায়ে নিয়ে চলে গিয়েছে। কেননা এটা পরিষ্কার ২৬ হাজার মানুষের সবাই দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি পাননি। প্রায় ১৫ হাজার মানুষের চাকরি হয়েছিল ৪টি প্যানেলের মাধ্যমে তাঁদের যোগ্যতার ভিত্তিতে। বাকি ১০ হাজার জন দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু কে দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি পেয়েছে আর কে পায়নি সেটা খুঁজে দেখা সম্ভব নয় বলে সবার চাকরি কেড়ে নেওয়া কখনই সুবিচার হতে পারে না।

শুভেন্দুর মন্তব্যের সঙ্গে আদালতের রায়ের কাকতালীয় যোগ ফুটে উঠেছে বলে অনেকে যে দাবি করছেন, তা কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। খোদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পর্যন্ত এই কারণে গতকাল থেকেই আদালতের রায় ও শুভেন্দুর মন্তব্যকে একযোগে হাতিয়ার করে আক্রমণ শানিয়ে যাচ্ছেন, প্রশ্ন তুলে চলেছেন। আদালত রায় দেওয়ার আগে কীভাবে শুভেন্দু জানলেন যে বোম ফাটতে চলেছে তা নিয়ে প্রশ্ন নানা মহলেই আছে। শুধু তাই নয়, এই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টের আবেদনেও তুলে ধরতে চলেছে রাজ্য সরকার ও চাকরিহারারা। বস্তুত, অনেকেই মনে করছেন, কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে অনেক নিরাপরাধ মানুষের জীবনে বড় শাস্তির খাঁড়া নেমে এসেছে। তাঁরা বিনা দোষে শাস্তি পেতে চলেছেন। তাঁদের জীবন, কেরিয়ার, ঘর-সংসার সব ভেসে যেতে বসেছে। সামাজিক সম্মাণহানিও হতে চলেছে। কারণ সবাই দুর্নীতির মাধ্যমে চাকরি পাননি। অথচ আদালত সকলের চাকরি কেড়ে নিয়েছে। আর এই জায়গাতেই অনেকে মনে করছেন, শুভেন্দুর মন্তব্য এবং আদালতের রায় ব্যুমেরাং হতে চলেছে বিজেপির কাছে এই বাংলার বুকে, লোকসভা নির্বাচনে। কেননা আমজানতার মনে হতেই পারে, বিজেপি বাংলায় আর কোনও ভোটে জিততে পারছে না বলেই, এখন ষড়যন্ত্র করে হাজার হাজার মানুষের চাকরি কেড়ে নিয়ে তাঁদের পেটে, রুজি রোজগারে ধাক্কা দিয়ে সবখ শেখাতে চাইছে। শুভেন্দু আগ বাড়িয়ে মন্তব্য যেন আদালতের রায়ের সঙ্গে বিজেপির যোগসূত্রের সম্পর্কই তুলে ধরছে।

তৃণমূল কার্যত গতকাল থেকেই শুভেন্দুর মন্তব্যকে হাতিয়ার করে আদালতের রায়কে কার্যত গেরুয়া শিবিরের বাংলা ও বাঙালি বিরোধী ষড়যন্ত্র হিসাবে তুলে ধরছে। সোশ্যাল মিডিয়াতে সেই ভাবেই প্রচার শুরু হয়ে গিয়েছে। কেন্দ্রে সরকার আগে থেকেই বাংলায় ১০০ দিনের কাজের টাকা, আবাসের টাকা, রাস্তার টাকা, স্বাস্থ্য মিশনের টাকা আটকে তাঁদের বাংলা বিরোধী মনোভাব সবার কাছে পরিষ্কার করে দিয়েছে। এখন শুভেন্দু যতই বলুন, তিনি আদালতের রায় নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি, কেন্দ্র সরকার ও বিজেপির পূর্ববর্তী ওই সব সিদ্ধান্ত ও পদক্ষেপের দরুন তা কেউ বিশ্বাসও করবে না। সবাই তৃণমূলের কথাই বিশ্বাস করবে। আর সেটাই এখন ভয় পাচ্ছেন বাংলার গেরুয়া নেতারা। তাঁরা একান্তে স্বীকার করছেন, শুভেন্দু আগ বাড়িয়ে কিছু না বললে, আদালতের রায় নিরপেক্ষ হিসাবেই উঠে আসতো। সবাই এই রায়কে দুর্নীতির বিরুদ্ধে বড় পদক্ষেপ হিসাবেই গ্রহণ করতো। কিন্তু শুভেন্দুর রায়ের দরুণ সেই রায় এখন রাজনীতির হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। সুপ্রিম কোর্টে চাকরিহারা, রাজ্য সরকার, স্কুল সার্ভিস কমিশন ও মধ্যশিক্ষা পর্যদ যে আবেদন জানাতে চলেছে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে সেখানে শুভেন্দুর মন্তব্য বড় ভূমিকা নিতে চলেছে।

Tags :
bengalBJPCalcutta High CourtLoksabha Election 2024Suvendu Adhikari
Next Article