কোভিড সময়কালে দেশের অর্থনীতি নিয়ে একে অপরকে নিশানা বাইডেন-ট্রাম্পের
নিজস্ব প্রতিনিধি: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম বিতর্কে বাইডেন ও ট্রাম্পের মুখোমুখি। ২৭ জুন CNN আটলান্টা স্টুডিওতে রাত নয়টার বিতর্কে জো বাইডেন এবং ডোনাল্ড ট্রাম্পের চার বছর পর পুনর্মিলন ঘটল। যদিও তাঁদের এই পুনর্মিলন বন্ধুত্বপূর্ণ নয়। তবে এই বিতর্কে দুজনের ভেতরের খারাপ দিকগুলো বেরিয়ে আসবে সেটাই ধারণা ছিল সকলের। তাই হয়েছে। কারণ ট্রাম্প কখনই ২০২০ সালের নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে নিজের পরাজয় স্বীকার করতে পারেননি। এই ঘটনায় ট্রাম্পের সমর্থকরা ইউএস ক্যাপিটলে আক্রমণও চালিয়েছিল। এছাড়া তিনি তার প্রতিপক্ষের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিতেও অস্বীকার করেছিলেন। যার ফলে যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্য ভেঙে গিয়েছিল।
এ বছর আবারও প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুখোমুখি হচ্ছেন তারা। তাই এই নির্বাচনের প্রচার শুরুর পর প্রথমবার টিভি চ্যানেলে বিতর্কের মুখোমুখি হলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন ও বর্তমান রাষ্ট্রপতি। যা দেখতে লাখো আমেরিকান টেলিভিশনের সামনে বসেছেন। এদিন বিতর্ক অনুষ্ঠানের শুরুতেই, দু'জন ঠিক ২০২০ এর মতো হাত মেলাননি। বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ডানদিকে, এবং প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিতর্কের সময় বামদিকে ছিলেন। প্রথমেই কোভিড সময়কালীন দেশের অর্থনীতি নিয়ে বাইডেন এবং ট্রাম্প একে অপরকে নিশানা করেছেন। করোনা সময়ে মার্কিন অর্থনীতিতে মুদ্রাস্ফীতি সংক্রান্ত প্রশ্ন দিয়ে তাঁদের মধ্যে বিতর্ক শুরু হয়। বাইডেন ট্রাম্পের COVID-19 মহামারী পরিচালনা এবং পরবর্তীকালে অর্থনৈতিক মন্দার সমালোচনা করেছেন। এরপর বাইডেনের দাবির প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ট্রাম্প জোর দিয়ে বলেন যে, তিনি তার মেয়াদে মহামারী পরিচালনা করার জন্য "খুব খারাপ কাজ" করেছেন। বাইডেন আরও দাবি করেন যে, তাঁর সময়কাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতির ব্যপক উন্নতি হয়েছিল। কারণ আগে দেশটির মুদ্রাস্ফীতির হার অনেক বেশি ছিল। আর করোনার সময়েও দেশের সার্বিক অর্থনীতিকে জোরালোভাবে ধরে রেখেছেন তাঁরা। এই কারণে তিনি প্রশংসার যোগ্য।
এর প্রতিক্রিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “দেশ হিসেবে আমরা আর সম্মানিত নই। তারা আমাদের নেতৃত্বকে সম্মান করে না। আমরা একটি তৃতীয় বিশ্বের জাতির মতো। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে অনুসরণ করার চেষ্টা করা, সে যা করেছে তার সবই, আমরা তৃতীয় বিশ্বের জাতির মতো হয়ে গেছি।" ট্রাম্প অবশ্য এ ধরনের বিতর্ক পাত্তা দেননি। ট্রাম্প জানায়, মহামারির আগে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে উত্তম ছিল। তিনি দেশকে অর্থনৈতিক দিকে এতটাই সবল করেছেন যে, যাতে করে দেশে কখনই অর্থনৈতিক ধস না নামে। এদিন বাইডেন মহিলাদের গর্ভপাত নিয়েও ট্রাম্পকে আক্রমণ করেছেন, 'আপনি যা করেছেন তা একটি ভয়ঙ্কর জিনিস'। বাইডেন বলেছেন, রাজনীতি বিদদের মহিলাদের স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে কোনও ভূমিকা পালন করা উচিত নয়। এছাড়া দেশের কর, মুদ্রাস্ফীতি এবং চাকরির পতন নিয়ে বিতর্কে ট্রাম্প, বাইডেনকে বলেছেন, তিনি যে শুল্কের পরামর্শ দিয়েছিলেন তা খরচ বাড়াবে? বাইডেন দাবি করেন যে তিনি উত্তরাধিকারসূত্রে প্রায় কোনও মুদ্রাস্ফীতি পাননি। বাইডেন ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির শেষে অর্থনীতির পরিস্থিতির নিন্দা করেছিলেন, অর্থনীতির অবস্থাকে অশান্তির জন্য দায়ী করে এবং স্থিতিশীলতা ও পুনর্নির্মাণের তার প্রচেষ্টাকে তুলে ধরেছে। ট্রাম্প অর্থনীতি থেকে অভিবাসনের দিকে মনোনিবেশ করেছিলেন, যা দুর্বল বলে মনে করেছিল। এদিন তাদের বিতর্কের মূল টপিক ছিল অর্থনীতি ও অভিবাসন। প্রায় দেড় ঘণ্টা চলেছে এই বিতর্ক।