‘চু কিত কিত কিত কিত কিত’ করে মোদিকে সংসদে দাঁড়িয়ে তীব্র কটাক্ষ কল্যাণের
নিজস্ব প্রতিনিধি: ভোটের আগে প্রশ্ন উঠেছিল শ্রীরামপুরে(Sreerampur Constituency) কল্যাণই কেন? আর কী কেউ নেই? দিদির কী আর কারোর ওপর কোনও আস্থা নেই! কিন্তু দিদি কেন এখনও কল্যাণেই আস্থা রেখেছেন সেটা এবার গোটা দেশকে দেখিয়ে দিলেন খোদ কল্যাণ। আর দেখালেন কোথায়, না দেশের সংসদ(Parliament) ভবনের নিম্নকক্ষ লোকসভার অধিবেশন কক্ষে। কার্যত সেখানে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি(Narendra Modi) আর বিজেপিকে(BJP) তীব্র কটাক্ষ হেনে বাংলার শ্রীরামপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত তৃণমূল সাংসদ(TMC MP) কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়(Kalyan Banerjee) তাঁর জাত চিনিয়ে দিলেন। এমনভাবে কটাক্ষ হানলেন যা দেখে হাসিতে ফেটে পড়ল গোটা সংসদ ভবন। হাসলেন খোদ স্পিকারও। তিনি না পারলেন কল্যাণকে থামাতে, না পারলেন তাঁকে বাধা দিতে। কল্যাণ দেখিয়ে দিলেন কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) এখনও তাঁর ওপর আস্থা রেখেছেন। কেননা তিনি যা পারেন, সেটা যে আর কেউ করে দেখাতে পারেন না। তা সে দেশের উপরাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধেই হোক কী প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে।
অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনে শ্রীরামপুর থেকে জিতে এবার সংসদ ভবনে শপথগ্রহণের সময়ে চণ্ডীস্তোত্র পাঠ করেছিলেন কল্যাণ। বাংলার বিজেপি সাংসদদের উদ্দেশে বিবিধ টিকাটিপ্পনিতে সে দিনও সংসদে নজর কেড়েছিলেন তিনি। কিন্তু এদিন সংসদের প্রথম বক্তৃতায় কল্যাণ যা করলেন, তাতে তৃণমূলের মহুয়া মৈত্র, সায়নী ঘোষ, সাজদা আহমেদরা তো বটেই, ভিন্রাজ্যের সাংসদেরাও হেসে গড়িয়ে পড়লেন। কল্যাণের বক্তৃতার অংশবিশেষ সমাজমাধ্যমে ভাইরাল হতে শুরু করেছে দুপুর থেকেই। যেখানে মোদি আর বিজেপিকে উদ্দেশ্য করে কল্যাণকে বলতে শোনা যাচ্ছে, ‘বলেছিল, এ বার ৪০০ পার! খেলা শুরু হয়ে গিয়েছিল। খেলা তো অনেক রকম হয়। চু কিতকিতটাও একটা খেলা। চু কিতকিতে চু ধরা ছিল ৪০০তে । তার পর কিতকিতকিতকিতকিতকিতকিতকিতকিত...কত হল? ২৪০!’ কল্যাণ যখন ‘কিতকিত’ বলতে বলতে দু’হাত ওপর থেকে নীচের দিকে নামাচ্ছেন, তখন দেখা যায় হাসির রোল উঠেছে সংসদে।
কল্যাণ যখন অন্য সাংসদদের দিকে তাকিয়ে তাঁর কথা বলছেন, তখন স্পিকার ওম বিড়লা বলেন, চেয়ারের উদ্দেশে বক্তৃতা করতে। তা শুনে আবার শুরু করেন কল্যাণ। স্পিকারের উদ্দেশে কল্যাণ বলেন, ‘‘স্যর, আমি তো আপনাকেই দেখছি। অন্য কাউকে দেখছি না। আপনার থেকে বেশি স্মার্ট এখানে কেউ নেই। ভাল অভিনেত্রীও এসেছেন। কিন্তু তাঁকে দেখছি না, আপনাকেই দেখছি।’ এ কথা শুনে তৃণমূলের অভিনেত্রী সাংসদ জুন মালিয়া, শতাব্দী রায়েরাও হাসতে থাকেন। অনেকের মতে, কল্যাণ ভাল অভিনেত্রী বলতে হিমাচল প্রদেশের মাণ্ডী থেকে বিজেপির টিকিটে জয়ী কঙ্গনা রানাউতকে ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন। নিজের বক্তৃতায় নির্বাচন কমিশনকেও তীব্র আক্রমণ করেন কল্যাণ। সংসদে শ্রীরামপুরের সাংসদ বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন অনেক সময়ে বিজেপি নেতাদের কথায় কাজ করেছে।’ তাঁর আরও বক্তব্য, সাত, আট বা দশ হাজারের মতো অল্প ভোটে যে সব আসন বিজেপি জিতেছে, সেগুলি সম্ভব হয়েছে নির্বাচন কমিশনের বদান্যতায়।