For the best experience, open
https://m.eimuhurte.com
on your mobile browser.
OthersWeb Stories খেলা ছবিঘরতৃণমূলে ফিরলেন অর্জুন সিংবাংলাদেশপ্রযুক্তি-বাণিজ্যদেশকলকাতাকৃষিকাজ বিনোদন শিক্ষা - কর্মসংস্থান শারদোৎসব লাইফস্টাইলরাশিফলরান্নাবান্না রাজ্য বিবিধ আন্তর্জাতিককরোনাএকুশে জুলাইআলোকপাতঅন্য খবর
Advertisement

‘দিদি বাঁচান, খুন করে দেবে বলে গিয়েছে’, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি প্রৌঢ় দম্পতির

গণপিটুনির হাত থেকে বাঁচার জন্য প্রৌঢ় দম্পতি চিঠি দিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। ঘটনার জেরে নড়চড়ে বসেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ প্রশাসনও।
12:28 PM Jul 05, 2024 IST | Koushik Dey Sarkar
‘দিদি বাঁচান  খুন করে দেবে বলে গিয়েছে’  মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি প্রৌঢ় দম্পতির
Courtesy - Facebook and Google
Advertisement

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যজুড়ে যত্রতত্র গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলেছে। সব ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে নিছক সন্দেহের জেরে এবং গুজবের জেরে এই সব গণপিটুনির(Mob Lynching) ঘটনা ঘটছে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) রাজ্য তথা সবকটি জেলা প্রশাসনকে কড়া বার্তা দিয়েছেন এই সব ঘটনায় যেন বিন্দুমাত্র ছাড় না দেওয়া হয় অভিযুক্তদের। যত দ্রুত সম্ভব তাদের ধরে যেন আদালতে তোলা হয় বিচারের জন্য। এর পাশাপাশি নিহতদের পরিবারকে এককালীন ২ লক্ষ টাকা এবং পরিবারের একজন সদস্যকে রাজ্য পুলিশের স্পেশ্যাল হোমগার্ডের চাকরি দেওয়ার ঘোষণাও করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে। সব থেকে বড় কথা, এত ঘোষণার পরেও ছবিতে সেভাবে বদল আসছে না। কমছে না গণপিটুনির ঘটনা। এবার পূর্ব বর্ধমান(Purba Burdwan) জেলার এক প্রৌঢ় দম্পতি মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হলেন সেই গণপিটুনির হাত থেকে বাঁচার জন্য। চিঠি দিলেন তাঁরা রাজ্যের মানবিক মুখ্যমন্ত্রীকে। ঘটনার জেরে নড়চড়ে বসেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার পুলিশ প্রশাসনও।

Advertisement

জানা গিয়েছে, যে প্রৌঢ় দম্পতি মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি(Letter to Chief Minister) দিয়েছেন তাঁদের নাম শেখ বোরহান আলি এবং সাহানারা বিবি। বাড়ি পূর্ব বর্ধমান জেলার দক্ষিণ সদর মহকুমার জামালপুর(Jamalpur) থানা এলাকার কুবাজপুর গ্রামে। তাঁদের সঙ্গেই থাকেন তাঁদের বড় ছেলে বসির আলিও। মূলত কৃষিকাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করে পরিবারটি। অভিযোগ, বসিরের বিবাহ সংক্রান্ত জটিলতা নিয়ে একটি বিচারাধীন মামলার বিচার করতে সালিশি সভা ডেকেছিলেন এলাকার তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি শেখ আজাদ রহমান। গত ১৪ জুন চকদিঘির তৃণমূল পার্টি অফিসে ডাকা ওই সালিশি সভায় উপস্থিত থাকতে বলা হয় ওই দম্পতি ও তাঁদের পুত্র বসিরকে। কিন্তু প্রাণের ভয়েই সভায় না যাওয়ার মনস্থির করে পরিবারটি। বদলে জামালপুর থানায় তারা বিষয়টি নিয়ে অভিযোগ দায়ের করে। সেই দিন, অর্থাৎ ১৪ তারিখ রাতেই রহমানের শাগরেদরা ওই দম্পতির বাড়িতে চড়াও হন বলে অভিযোগ। প্রৌঢ় দম্পতির পাশাপাশি তাঁদের বড় ছেলেকেও ব্যাপক মারধর করা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে জামালপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায় এবং বসিরকে বর্ধমান হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়।

Advertisement

ওই ঘটনার পরেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে থানা কোনও পদক্ষেপ না করায় আতঙ্কে ঘর ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নেন তিন জনেই। সেখান থেকেই মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন ওই প্রৌঢ়। সেখানে তাঁরা লিখেছেন, ‘এলাকার তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতির ডাকা সালিশি সভায় না যাওয়ায় তাঁর শাগরেদরা বাড়িতে এসে মারধর করেছেন আমাদের। এমনকি, খুনের হুমকিও দিয়ে গিয়েছেন।’ প্রাণের ভয়ে তাঁদের গবাদি পশু, ক্ষেত-খামার ফেলে পালিয়ে আসতে হয়েছে অন্যত্র। ‘রহমানের শাগরেদরা এ-ও জানিয়ে যায় যে, আমরা যদি আজাদ রহমানের বিচার সভায় হাজির না হই, তবে ওরা আমাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করে, বাড়ি জ্বালিয়ে দেবে। এমনকি, আমাদের প্রাণে মেরে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেয় ওরা। লাঠিসোঁটা এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে রহমানের ১২ জন শাগরেদ এবং আরও অনেকে বাড়িতে এসে হাজির হয়। তারা বলতে থাকে, আমরা শাসকের হয়ে শাসন করতে এসেছি। আমাদের বাঁচান দিদি।’ মুখ্যম্নত্রীকে লেখা একই চিঠি ‘লিখিত অভিযোগ’ হিসাবে তাঁরা পাঠিয়েছেন রাজ্য পুলিশের ডিজি, জেলার পুলিশ সুপার এবং জেলাশাসককে।

যদিও ঘটনায় অভিযুক্ত তৃণমূলের চকদিঘির অঞ্চল সভাপতি আজাদ জানিয়েছেন, ‘বসির আলির পরিবারকে আমি চিনি। তাঁদের যে মামলার বিচার আদালতে চলছে, তার বিচারের জন্য আমি কোনও বিচার সভা বা সালিশি সভা ডাকিনি। তবে খোঁজ নিয়ে জানতে পেরেছি, বসিরের পরিবারের সঙ্গে যে ঘটনা ঘটছে, তা গ্রাম্য বিবাদজনিত ঘটনা। ওই ঘটনার সঙ্গে ইচ্ছাকৃত ভাবে আমার নাম জড়ানো হয়েছে।’ ঘটনা প্রসঙ্গে পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূলের সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ও জানিয়েছেন, ‘এমন কোনও ঘটনা ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। তবে আমি খোঁজখবর নিয়ে দেখব। অভিযোগ সত্য হলে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।’ জেলা পুলিশ সুপার আমন দীপ জানিয়েছেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ অর্থাৎ যে ঘটনার কথা নেতা অস্বীকার করছেন, সেই ঘটনার কথা স্বীকার করছেন জেলার পুলিশ সুপার। চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রীকে ওই দম্পতি এটাও জানিয়েছেন যে, প্রশাসন তাঁদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা না করলে তাঁদের আর বাড়ি ফেরা হবে না। দম্পতির পুত্র বসির জানিয়েছেন, ‘ভবঘুরে হয়ে অর্ধাহারে, অনাহারে দিন কাটছে আমাদের। বাবা অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মায়েরও শরীর ভাল যাচ্ছে না। চাষের জমির ফসল জমিতে পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে। এ ক্ষতি কোনও ভাবেই পূরণ হওয়ার নয়।’ বসির এটাও জানিয়েছেন, এমন চলতে থাকলে তাঁদের সপরিবার আত্মহত্যা করা ছাড়া আর কোন উপায় থাকবে না।  

Advertisement
Tags :
Advertisement