কেন্দ্রের রিপোর্টেই ফাঁস বাংলাকে নিয়ে গেরুয়ার মিথ্যা প্রচার
নিজস্ব প্রতিনিধি: বাংলা(Bengal) ও বাঙালিকে নিয়ে বিজেপির(BJP) বিদ্বেষ যে বিশাল পর্যায়ের সেটা নানা সময়ে নানান ঘটনায় সামনে চলে এসেছে। সেই কারণেই উনিশের লোকসভা ভোটে বাংলার মাটিতে বিজেপি ঐতিহাসিক সাফল্যের মুখ দেখলেও একুশের বিধানসভা নির্বাচনে সেই সাফল্য তাঁরা আর ধরে রাখতে পারেনি। উনিশের ভোটে বাংলার ১৮টি লোকসভা কেন্দ্র দখল করার পাশাপাশি ১৩৬টি বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁরা লিড তুলেছিল। পেয়েছিল ৪০ শতাংশেরও বেশি ভোট। কিন্তু একুশের বিধানসভা নির্বাচনে তাঁরা পেয়েছিল মাত্র ৭৭টি আসন। সেই সঙ্গে ভোট প্রাপ্তির হার কমে দাঁড়িয়েছিল ৩৮ শতাংশে। তারপরেও গেরুয়ায় ব্রিগেড বাংলা ও বাঙালিকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়াতে বিদ্বেষ ছড়ানোর কাজ বন্ধ করেনি। বরঞ্চ তা বেড়েছে বহুগুণে। গতবছরের শেষের দিকে সোস্যাল মিডিয়াতে ঘুরেছিল, দেশের সব থেকে নোংরা শহরগুলির মধ্যে রয়েছে বাংলার ৪-৫টি শহর। সেই সময়েই রাজ্য সরকার তার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল। এখন কেন্দ্র সরকার(Narendra Modi Government) জানাচ্ছে, অম্রুত প্রকল্পের(Amrut Project) অধীন দেশের যে সব পুরসভাকে নিকাশি, পানীয় জল সরবরাহ সহ একাধিক ক্ষেত্রে সব থেকে ভালো কাজ করার জন্য পুরস্কৃত করতে চলেছে মোদি সরকার তার মধ্যে আছে বাংলার ১১টি পুরসভা। আর এই তথ্যই বলে দিচ্ছে আগের দাবি কতখানি বাংলা ও বাঙালি বিদ্বেষের ওপর দাঁড়িয়ে ছিল।
আগামী ৫ মার্চ দিল্লিতে কেন্দ্র সরকার বাংলার যে ১১টি পুরসভার হাতে পুরস্কার তুলে দিতে চলেছে সেগুলি হল উত্তরবঙ্গের শিলিগুড়ি পুরনিগম, দক্ষিণবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসত, ভাটপাড়া, উত্তর ব্যারাকপুর ও দক্ষিণ দমদম পুরসভা, হুগলি জেলার উত্তরপাড়া ও চাঁপদানি পুরসভা, হাওড়া জেলার হাওড়া পুরনিগম ও উলুবেড়িয়া পুরসভা, নদিয়া জেলার নবদ্বীপ ও কল্যানী পুরসভা। এই পুরসভাগুলির হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। জানা গিয়েছে, দেশের সমস্ত পুরসভা এবং শহরে নিকাশি ব্যবস্থা থেকে শুরু করে অন্যান্য নাগরিক পরিষেবাকে ঘিরে একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছিল কেন্দ্র। তিনমাস ধরে চলে সেই প্রতিযোগিতা। প্রথমে পুরসভাগুলির কাজ সংক্রান্ত তথ্য অনলাইনের মাধ্যমে জমা দিতে হয়েছে পুরসভার অম্রুত শাখার আধিকারিকদের। সেই তথ্য যাচাই করে বাছাই করা পুরসভা এলাকার পরিদর্শনে এসেছিলেন কেন্দ্রের প্রতিনিধিরা। সরাসরি সেখানকার বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। খতিয়ে দেখেন নাগরিক পরিষেবা সংক্রান্ত নানান খুঁটিনাটি। তার পরেই রাজ্যের ১১টি পুরসভাকে পুরস্কৃত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আর তারপরেই প্রশ্ন উঠছে, এখন কেন্দ্র সরকার যে তথ্য তুলে ধরছে তা যদি সঠিক হয় তাহলে দেশের সব থেকে নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন পুরসভার মধ্যে কী করে থাকে পুরস্কার পেতে চলা একাধিক পুরসভা। হাওড়া শহরকে(Howrah City) দেশের অন্যতম নোংরা আর অপরিচ্ছন্ন পুরসভা হিসাবে তুলে ধরা হয়েছিল গতবছরের শেষ দিকে। রীতিমত সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে চলেছিল সেই প্রচার। চতুর্দিকে বাংলা আর বাঙালির নামে কুৎসা রটানো হচ্ছিল। অথচ এখন খোদ কেন্দ্র সরকার তার উল্টো তথ্য তুলে ধরছে। যা কার্যত চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, গেরুয়া শিবিরের তরফেই সোশ্যাল মিডিয়াতে ভুল ও মিথ্যা তথ্য তুলে ধরে বাংলা ও বাঙালিকে বদনাম করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে গেরুয়া ব্রিগেড। ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, পদ্মশিবির হাজার চেষ্টা, হাজার বঞ্চনা, হাজার বদনাম করার পরেও বাংলার ক্ষমতা দখল করতে পারেনি। বরঞ্চ যত সময় গড়াচ্ছে ততই বাংলার বুকে বিজেপির পায়ের নীচের মাটি আলগা হচ্ছে। তাই এখন বাংলা আর বাঙালিকে নিয়ে অপপ্রচার, কুৎসা, বদনাম ছড়ানো ভিন্ন কোনও রাস্তা নেই পদ্মশিবিরের।