হাথরসকাণ্ডে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১২১, সুপ্রিম কোর্টে দায়ের জনস্বার্থ মামলা
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: উত্তরপ্রদেশের হাথরসে ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পদপিষ্টের ঘটনায় মৃতের সংখ্যা লাইয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। ইতিমধ্যেই মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২১। পুলিশের তরফে সৎসঙ্গের আয়োজকদের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হলেও তাতে নাম নেই স্বঘোষিত ধর্মগুরু ভোলে বাবা নারায়ণ সাকার হরির। মঙ্গলবার রাতে ভোলে বাবার আশ্রম ঘিরে রেখেছিল পুলিশ। যদিও বুধবার সকালে আশ্রম থেকে খালি হাতেই ফিরেছে যোগি রাজ্যের উর্দিধারীরা।
অন্যদিকে হাথরসকাণ্ডে আদালতের নজরদারির দাবি জানিয়ে এদিন সকালেই সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হয়েছে জনস্বার্থ মামলা। আবেদনকারীর তরফে শীর্ষ আদালতে আর্জি জানানো হয়েছে, যেভাবে পূণ্যের খোঁজে গিয়ে শতাধিক পূণ্যলোভাতুরকে প্রাণ হারাতে হয়েছে তা নিয়ে রাজ্য সরকারের জবাব তলব করা হোক। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টেরই কোনও অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিকে নেতৃত্বে বিশেষ তদন্তকারী কমিটি গঠন হোক। সেই সঙ্গে ভবিষ্যতে যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে তার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হোক।
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার হাথরসের রতিভানপুরের মুঘলাগড়ি গ্রামে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলছিল। অনুষ্ঠানের আয়োজক ছিলেন নারায়ণ সাকার ওরফে ‘ভোলে বাবা’ নামে স্বঘোষিত এক ধর্মীয় গুরু। সকাল ১১টা থেকে দুপুর ৩টে পর্যন্ত সৎসঙ্গের আয়োজন করা হয়েছিল। সৎসঙ্গের জন্য যে মণ্ডপ বাঁধা হয়েছিল, তা ব্যারিকেড দিয়ে ঘেরা ছিল। প্রচণ্ড আর্দ্রতা এবং গরমের কারণে সকলেই হাঁসফাঁস করছিলেন। ফলে অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরেই হাজির পুণ্যার্থীরা হুড়মুড়িয়ে মাঠের বাইরে বেরনোর চেষ্টা করেন। আর তাতেই বিপত্তি ঘটে। প্রবেশ এবং বহির্গমনের জন্য যে গেট তৈরি হয়েছিল, সেটিও অত্যন্ত সংকীর্ণ হওয়ার কারণে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। অনেকেই হুড়োহুড়িতে মাটিতে পড়ে যান। আর মাটিতে পড়ে যাওয়া পুণ্যার্থীদের মাড়িয়ে যান বাকিরা। অনেকে পদপিষ্ট হয়ে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। আহতদের উদ্ধার করে প্রথমে সিকন্দরারাউ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, আহতদের নিয়ে গেলেও সেখানে চিকিৎসা করার মতো পর্যাপ্ত চিকিৎসক ছিল না। হাসপাতালে মাত্র এক জন চিকিৎসক ছিলেন। ফলে চিকিৎসার গাফিলতির কারণে অনেকেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। ভয়াবহ দুর্ঘটনার পর দেড় ঘণ্টা কেটে গেলেও প্রশাসনের কোনও আধিকারিককে ঘটনাস্থলে দেখা যায়নি।