অবৈধ গর্ভপাতের দরুণ মৃত্যু গৃহবধূর, গ্রেফতার হাতুড়ে ডাক্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি: ওষুধের দোকানের আড়ালে বেআইনি গর্ভপাত(Illegal Abortion) করিয়ে তিনি মোটা টাকা আয় করত বিজেপির এক নেতা তথা হাতুড়ে ডাক্তার(Quack Doctor)। কিন্তু শেষ রক্ষা হল না। গতকাল ছিল আন্তর্জাতিক নারী দিবস। সেইদিনই ওই হাতুড়ে ডাক্তারের হাতে প্রাণ হারিয়েছেন বাংলার এক গৃহবধূ। আর সেই ঘটনার জেরেই পুলিশের হাতে গ্রেফতার(Arrest) হয়েছে বিজেপির সেই হাতুড়ে ডাক্তার। নাম তার মনোজ বিশ্বাস। ঘটনায় গ্রেফতার হয়েছে এক দালালও। তার নাম দিলীপ দেবনাথ। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগনা(North 24 Pargana) জেলার বারাসত সদর মহকুমার অশোকনগর(Ashoknagar) থানা এলাকায়। অশোকনগর ৩ নম্বর রেলগেট এলাকায় মনোজের ওষুধের দোকান। সেখানেই সে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ ভাবে গর্ভপাতের ব্যবসা চালিয়ে আসছিল। এবার তা পড়েছে পুলিশের নজরে। মৃতা গৃহবধূর নাম টুকি বিশ্বাস(৩৫)। তাঁর বাড়ি অশোকনগর থানার শ্রীনগর এলাকায়। মনোজ এলাকায় বিজেপি(BJP) নেতা বলেই বেশি পরিচিত বলে স্থানীয়দের দাবি।
জানা গিয়েছে, ওষুধের দোকানের আড়ালে বেআইনি গর্ভপাত করিয়ে তিনি মোটা টাকা কামাতো মনোজ। সেই কাজে তাকে সাহায্য করত দিলীপ। এই দিলীপের মাধ্যমেই টুকির সঙ্গে মনোজের যোগাযোগ হয়েছিল। শুক্রবার দুপুরে দিলীপই টুকিকে মনোজের ওষুধের দোকানে নিয়ে এসেছিল। একেবারে পরিকাঠামোহীন সেই ‘চেম্বারে’ গর্ভপাত করানোর সময়েই মৃত্যু হয় টুকির। এই ঘটনাকে চেপে রাখারই চেষ্টা করেছিল মনোজ আর দিলীপ। কিন্তু স্থানীয় বাসিন্দারা ঘটনাটি জানতে পেরে যান। তাঁরাই মনোজের ওষুধের দোকান ঘিরে রাখেন যাতে কোনও ভাবেই সেখান থেকে টুকির দেহ কেউ পাচার করতে না পারে। একই সঙ্গে তাঁরা খবর দেয় স্থানীয় থানাতেও। সেখান থেকে পুলিশ এসে টুনির দেহ উদ্ধার করে তা অশোকনগর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেই সঙ্গে গ্রেফতার করা হয় মনোজ আর দিলীপকেও।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অবৈধ কাজের অভিযোগে হাতুড়ে ডাক্তার মনোজকে এর আগেও পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। কিন্তু কোনও এক জাদুমন্ত্রে সে ছাড়াও পেয়ে যায়। শুধু তাই নয়, রীতিমত এলাকায় সে দাপটের সঙ্গে বিজেপি করতে শুরু করে দিয়েছিল। বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়ার দায়িত্বে ছিল সে। তবে একার জোরে মনোজ জেল থেকে ছাড়া পায়নি। স্থানীয় বাসিন্দাদের বিশ্বাস এই অবৈধ ভাবে গর্ভপাত করানোর পিছনে কোনও বড় চক্র জড়িত। তারাউ মনোজকে ছাড়িয়েছিল। তাই তাঁরা চান এই ঘটনায় যারা জড়িত পুলিশ দ্রুত তাদের খুঁজে বের করে আদালতের কাঠগড়ায় তুলুক ও তাদের জন্য কঠোর সাজা হয়। ঘটনা হচ্ছে, মনোজ ধরা পড়তেই হাবড়া-অশোকনগর এলাকায় মনোজ বিশ্বাস নামে তাঁদের নাকি কোনও নেতাই নেই। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতাদের দাবি, মনোজ বিশ্বাস বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়ার দায়িত্বে(Social Media Handler) ছিল।