'আমি বিধ্বস্ত', নিকিতার গান শুনতে এসে মৃত্যু ৪ ছাত্রের, শোকপ্রকাশ গায়িকার
নিজস্ব প্রতিনিধি: এবার চেন্নাইয়ের অগস্ট মাসে এ আর রহমানের কনসার্টের পুনরাবৃত্তি হল কেরলের কোচি ইউনিভার্সিটিতে। গত সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে চেন্নাইয়ে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত এ আর রহমানের কনসার্ট ঘিরে এখনও আতঙ্ক বর্তমান সেদিনের দর্শকদের মনে। কারণ সেদিন কনসার্টের আয়োজকদের ভুল ব্যবস্থাপনার জন্যে শতাধিক মানুষ পদদলিত হয়ে গুরুতর আহত হন। বেশ কিছু অল্প বয়সী যুবতীদের শ্লীলতাহানি করা হয়, অনেক শিশু হারিয়ে যায় ভিড়ের ঠেলায়। এই ঘটনায় প্রশাসকের উপরেও রীতিমতো নিরাপত্তার প্রশ্ন উঠেছিল। যদিও পুলিশ লাগাম ছাড়া ভিড় নিয়ন্ত্রিণে তৎপর ছিল। কিন্তু এই ঘটনায় কোনও হতাহতের খবর মেলেনি। কিন্তু এবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হল, কোচি ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজিতে। গতকাল সন্ধ্যায় ছিল বিশ্ব বিদ্যালয়ের প্রাঙ্গণে বলিউডের জনপ্রিয় প্লেব্যাক সিঙ্গার নিকিতা গান্ধীর কনসার্ট। আর সেখানেই লাগামছাড়া ভিড়ের দাপটে পদদলিত হয়ে মারা যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ ছাত্র এবং আহত হন ৬৪ জনেরও বেশি। জানা গিয়েছে, প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে ছাত্ররা সব একই জায়গায় সমবেত হয়, যার ফলে লাগামছাড়া ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাঁধ ভাঙে।
এদিন অনুষ্ঠানের শিরোনামে ছিলেন গায়িকা নিকিতা গান্ধী।তাঁর কনসার্টে এমনি ভয়ঙ্কর ঘটনা শুনে তিনিও ভেঙে পড়েছেন এবং বিধ্বস্ত হয়েছেন। ৪ জন ছাত্রের মৃত্যুর খবর জানা মাত্রই এদিন নিকিতা ইনস্টাগ্রামে বলেন, "আজ সন্ধ্যায় কোচিতে যা ঘটেছে তাতে আমার হৃদয় ভেঙে পড়েছিল এবং বিধ্বস্ত হয়েছি আমি। আমি পারফরম্যান্সের জন্য ভেন্যুতে যাওয়ার আগেই এমন দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা আমাকে নিরাশ করেছে। এই গভীর শোক প্রকাশ করার জন্য কোনও শব্দ সম্ভবত যথেষ্ট নয়। আমি ছাত্রদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানাই।" 'বুর্জ খলিফা', 'কাফিরানা' এবং 'নাজা'র মতো একাধিক সুপারহিট গানের জন্যে বিখ্যাত নিকিতা গান্ধী। সলমান খানের সর্বশেষ ছবি 'টাইগার 3'-এর বেশিরভাগ গান তিনি গেয়েছেন। এদিকে পুলিশ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কোচির কাছে কোচিন ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (CUSAT) খোলা আকাশের অডিটোরিয়ামে গায়ক মঞ্চে আসার ঠিক আগেই পদদলিত হয়ে মারা যান ৪ জন শিক্ষার্থী। এদিন গায়িকার কনসার্ট শুরু হওয়ার আগে সবকিছু ঠিকই ছিল। কিন্তু বৃষ্টি শুরু হলে পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর মোড় নেয়।
বাইরে অপেক্ষমাণ লোকেরা আশ্রয় নিতে অডিটোরিয়ামে ছুটে যায়, এতেই ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তাতেই পদদলিত হয়ে কিছু শিক্ষার্থী পিছলে পড়ে যায়। অন্যদিকে এডিজিপি এমআর অজিত কুমার বলেছেন, "এটি ইউনিভার্সিটির বার্ষিক উৎসব ছিল, এবং ব্রোশিওর থেকে, এটি ২৪ নভেম্বর থেকে ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত চলছিল। সংগীত অনুষ্ঠানে ১,০০০ থেকে ১৫০০ লোকের ধারণক্ষমতার আয়োজন করা হয়েছিল। তাই এদিন এটি আংশিকভাবে ভরা ছিল। কিন্তু যখন হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়, ছাত্ররা সিঁড়ির দিকে ছুটে যেতেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।” রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জের মতে, দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে সহ চার শিক্ষার্থী মারা গিয়েছে এবং ৬০ জনেরও বেশি কালামাসেরি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চিকিৎসাধীন। মিসেস জর্জ আরও বলেছেন, আরও চার শিক্ষার্থীর অবস্থা আশঙ্কাজনক।