কুয়েতের অগ্নিকাণ্ডে নিহত শ্রমিক-পরিবারকে বাড়ি দেওয়ার আশ্বাস কেরল সরকারের
নিজস্ব প্রতিনিধি: কুয়েতের মাঙ্গাফ শহরে শ্রমিক আবাসনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ৪৫ ভারতীয় শ্রমিক প্রাণ হারিয়েছেন। তার মধ্যে ২৪ জন কেরলের বাসিন্দা। ভয়াবহ আগুনে মৃতদেহগুলি এতটাই ঝলসে এবং পুড়ে গিয়েছে। তাই অধিকাংশকেই চেনা সুবিধার্থে ডিএনএ পরীক্ষা করানো হয়েছে। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ৪৯ জনের মধ্যে ৪৫ জন ভারতীয় এবং তিন জন ফিলিপাইনসের। ইতিমধ্যেই নিহত ভারতীয় শ্রমিকদের দেশে ফেরানো হয়েছে এবং তাদের মৃতদেহ পরিবারকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। অগ্নিকাণ্ডে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়া শ্রমিকদের নিথর দেহ দেশে ফিরিয়ে এসেছে দু দিন পরেই। এছাড়াও কুয়েতের নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে এককালীন পাঁচ লক্ষ টাকা করেও আর্থিক সাহায্যের ঘোষণা করেছে কেরল সরকার। এদিকে নিহত শ্রমিকদের মধ্যে একজন বিনয় থমাস। শোনা গিয়েছে, রবিবার লাইফ মিশন হাউজিং স্কিমের অধীনে কুয়েতে নিহত বিনয় থমাসের পরিবারকে একটি আবাসন নির্মাণ করে দেওয়ার আশ্বাস দিল কেরল সরকার।
বিনয়ের পরিবার একটি উন্নত বাড়ির শখ ছিল অনেকদিন। সেই কারণে বিদেশে টাকা রোজগারে গিয়েছিলেন বিনয় থমাস। কিন্তু স্বপ্ন আর পূরণ হলনা। পরিবারের স্বপ্ন পূরণ করার বদলে তাঁর মরদেহ পৌঁছয় তাঁর বাড়িতে। তাই রবিবার বিনয়ের পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে তাঁদের সরকারের তরফ থেকে বাড়ি গড়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে এলেন কেরলের রাজস্ব মন্ত্রী কে রাজন এবং সামাজিক বিচার মন্ত্রী আর বিন্ধু। উভয় মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন যে, সরকার থমাসের পরিবারের যত্ন নেবে এবং বিভিন্ন সরকারি সুযোগ দেবে। যদিও বহুদিন আগেই বিনয়ের পরিবার লাইফ মিশন প্রকল্পের অধীনে একটি বাড়ির জন্যে আবেদন করেছিলেন, সেটাই শীঘ্রই বরাদ্দ করার আশ্বাস দিয়েছেন দুই মন্ত্রী। এছাড়াও বিনয়ের ছেলেকেও সরকারি চাকরি dear প্রতিশ্রুতি দিলেন কেরল সরকার।
উল্লেখ্য, গত ১২ জানুয়ারি বুধবার স্থানীয় সময় সকাল ছটার সময়ে দক্ষিণ কুয়েতের মাঙ্গাফ শহরে একটি শ্রমিক আবাসনের একতলায় অবস্থিত রান্নাঘরে থাকা সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুন ধরে যায়। নিমিষেই আগুন ছড়িয়ে পড়ে ভবনটির বিভিন্ন তলায়। বহুতল ভবনটিতে থাকা শ্রমিকরা আটকে পড়েন। অগ্নিকাণ্ডের খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছয় দমকলের একাধিক ইঞ্জিন ও বিশাল পুলিশ বাহিনী। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ শুরু করেন উদ্ধারকারীরা। ভবনের ভিতর থেকে অগ্নিদগ্ধদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। প্রথমে ৩৫ জনের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছিল। পরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও ১৪ জন মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত ভারতীয় শ্রমিকদের অধিকাংশই কেরলের বাসিন্দা ছিলেন।