‘শান্তনু ঠাকুর বিজেপির ক্ষমতা দেখিয়ে আমাদের বের করে দিয়েছে’, আক্রমণ শুরু মধুপর্ণার
নিজস্ব প্রতিনিধি: সকালেই ঘোষিত হয়েছে নাম। আর দুপুরেই শুরু প্রতিপক্ষকে আক্রমণ। আর সেই প্রতিপক্ষও যে সে কেউ নয়। এলাকার বিজেপি সাংসদ(BJP MP), কেন্দ্রের জাহাজ প্রতিমন্ত্রী(Union Minister of State for Ministry of Ports Shipping and Waterways), নিজের জ্যাঠতুতো দাদা শান্তনু ঠাকুর(Shantanu Thakur)। যাকে নিশানা বানাতে রাজ্যের শাসক দলও বার দুয়েক ভাবে, তাঁকে অবলীলায় নিশানা বানিয়ে দিল একটা বাচ্চা মেয়ে, যে কিনা এই প্রথম রাজনীতির ময়দানে পা রাখছে, এই প্রথম ভোটের লড়াইয়ে নামছে। রাজ্যের শাসক দলের প্রার্থী হয়েই সে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়ে দিল, ‘শান্তনু ঠাকুর বিজেপির ক্ষমতা দেখিয়ে আমাদের বের করে দিয়েছে। আসুক আক্রমণ। রাজনীতিতে যখন নেমেছি তখন লড়াই তো করে যেতেই হবে। লড়াই চলতে থাকবে। মতুয়াদের লড়াই এটা।’ বক্তা রাজ্যের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ মহকুমার বাগদা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী মধুপর্ণা ঠাকুর(Madhuparna Thakur)। এই মধুপর্ণার ঠাকুমা হলেন মতুয়া সমাজের বড়মা বীণাপানি দেবী(Binapani Debi)। বাবা কপিলকৃষ্ণ ঠাকুর ছিলেন বনগাঁর তৃণমূল সাংসদ। মা মমতাবালা ঠাকুর(Mamatabala Thakur) ছিলেন সেই কেন্দ্রেরই তৃণমূল সাংসদ এবং এখন যিনি ওই দলেরই রাজ্যসভার সাংসদ।
এদিন মধুপর্ণা রাজ্যের এক বেসরকারি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘রাজনীতি আমাদের ধমনীতে। দাদুর আমল থেকে এটা চলে আসছে। আমার মা একজন রাজ্যসভার সাংসদ। মা আমার শক্তি। মাকে দেখেই রাজনীতিতে নামা। আমার নাম ঘোষণা হতেই নানাদিক থেকে আক্রমণ আসছে। আসুক আক্রমণ। মায়ের পরামর্শ পেয়েছি। সেই ভাবেই চলবো। রাজনীতিতে যখন নেমেছি তখন লড়াই তো করে যেতেই হবে। লড়াই চলতে থাকবে। মতুয়াদের লড়াই এটা। বড় মায়ের ঘরের দখল নিয়ে ঝামেলা হয়েছে। ওটা পরিবারের সমস্যা ছিল। রাজনীতির বিষয় ছিল না। কিন্তু, শান্তনু ঠাকুর বিজেপির ক্ষমতা দেখিয়ে আমাদের বের করে দিয়েছে। সিএএ নিয়ে ওরা ভুল বোঝাচ্ছে। আমরা সবাই চাই আমাদের নিঃশর্ত নাগরিকত্ব দেওয়া হোক। আমি মতুয়াদের জন্য, বাগদার মানুষের জন্য কিছু করতে চাই। ওদের জন্য কিছু করতে পারলে ঠাকুরবাড়ির নাম হবে। আমার দাদুর নাম হবে। সে কারণেই ওদের জন্য কিছু করতে চাই। তাহলেই আমাদের বাড়ির নাম হবে।’
কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বাগদা বিধানসভা কেন্দ্রে কার্যত উপনির্বাচন হচ্ছে লোকসভা নির্বাচনের প্রেক্ষাপটের ওপর দাঁড়িয়ে। সেখানে শান্তনু ঠাকুর তাঁদের প্রবল প্রতিপক্ষ। তারওপর বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্র ধরে রাখার পাশাপাশি বাগদা থেকে লিড তুলে বেশ আত্মবিশ্বাসী বিজেপি। এই অবস্থায় মধুপর্ণা কী পারবে, আদৌ লড়াই দিতে? প্রশ্ন ঘুরছে মতুয়াগড়ে। রাজনৈতিক মহল বলছে, মধুপর্ণা যদি জিততে পারে তাহলে সেই হয়তো হবে বিধানসভার কনিষ্ঠতম সদস্য। কিন্তু জিততে কী পারবে? বিজেপির দাবি, তাঁরা বাগদা আসন ধরে রাখবে। জয় সম্ভব নয় জেনেই বিশ্বজিৎ দাস আর ভোটে দাঁড়াতে চাইছে না। একতা বাচ্চা মেয়েকে মাঠে নামিয়ে দিয়ে পালয়ে বেড়াচ্ছে। আর তৃণমূলের দাবি, লোকসভা নির্বাচন আর একটা বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন এক প্রেক্ষাপটে হয় না। তাই লোকসভার হিসাব মিলবে না বিধানসভার উপনির্বাচনে। জিতবে মধুপর্ণাই। যদিও এটা কোনও পক্ষই অস্বীকার করছে না যে, আদতে মধুপর্ণা লড়াই করত্বে নামছে দাদা শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধেই।