মাথা উঁচু করে সংসদে ফিরছেন মহুয়া, ‘আমাকে দমানো যাবে না’, দিলেন বার্তা
নিজস্ব প্রতিনিধি: তাঁর সাংসদ পদ খারিজের পরে পরেই তিনি বার্তা দিয়েছিলেন, তিনি ফিরবেন। মাথা উঁচু করেই ফিরবেন। সঙ্গে এটাও জানিয়েছিলেন, ‘আগামী ৩০ বছর সংসদের ভিতরে-বাইরে লড়ব আমি। আমাকে ইডি বা সিবিআই দিয়ে দমিয়ে রাখা যাবে না।’ কথা রেখেছেন তিনি। বিজেপি(BJP) আর মোদি বাহিনী পারেনি তাঁকে দমিয়ে দিতে। তিনি জিতেছেন, আর মাথা উঁচু করেই আগামিকাল অর্থাৎ মঙ্গলবার ২৪ জুন তিনি পা রাখতে চলেছেন সংসদের(Parliament) অন্দরে। এদিন ঠিক সেই ঐতিহাসিক প্রত্যাবর্তনের আগে তিনি দিলেন বার্তা বিরোধী শিবিরকে লক্ষ্য করেই। জানালেন, ‘৮ ডিসেম্বর যখন আমাকে অবৈধ ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছিল এবং সংসদে আমাকে আমার বক্তব্য বলতেও দেওয়া হয়নি, তখন আমি সংসদের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, মাথা উঁচু করে লোকসভায় ফিরব। আমাকে ইডি-সিবিআই দিয়ে ভয় দেখিয়ে দমানো বা হারানো যাবে না। আমি এবং আমরা সেটা করে দেখিয়েছি।’ তিনি মহুয়া মৈত্র(Mohua Moitra)। বাংলার মাটিতে কৃষ্ণনগর লোকসভা(Krishnanagar Constituency) কেন্দ্র থেকে জেতা তৃণমূলের বীর সাংসদ(TMC MP)।
সংসদে প্রত্যাবর্তনের আগে বিজেপিকে বার্তা দিয়ে মহুয়া জানিয়েছেন, ‘আমরা ২৩৪ জন এখন লোকসভায় আছি। উল্টো দিকে, বিজেপি একক সংখ্যাগরিষ্ঠতায় যেতে তো পারেইনি, বিভিন্ন দলের সাহায্য নিয়ে নরেন্দ্র মোদি একটি পঙ্গু সরকারের প্রধানমন্ত্রী হয়ে বসেছেন! ওর অব কি বার ৪০০ পার স্লোগানের এই হাল দেখার পরেও উনি প্রধানমন্ত্রী কী করে হলেন, সেটাই আশ্চর্যের। আমরা সকলে মিলে ২৩৪। বিজেপি একা ২৪০! মাত্র ছ’টা আসনের তফাত। ফলে এ বার সব কিছু আর অত সহজে হবে না।’ ওয়াকিবহাল মহলও মনে করছে, এবারের লোকসভায় বিরোধীরা আগের চেয়ে আরও বেশি ‘দাপট’ নিয়ে সরকারের মোকাবিলা করবে।একই সঙ্গে তাঁদের ফের মহুয়া সুনামির মুখোমুখিও হতে হবে। হয়তো বিজেপির বিরুদ্ধে মহুয়া আগের থেকেও বেশি সরব হবেন। সংসদে নিজের এই প্রত্যাবর্তন নিয়ে মহুয়া যেমন আত্মবিশ্বাসী ছিলেন, তেমনই তাঁর দলও তাঁর প্রতি আস্থা রেখেছিল। আস্থা রেখেছিলেন খোদ তৃণমূলের সর্বময় নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। মহুয়ার সাংসদ পদ খারিজের পরে পরেই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন কৃষ্ণনগর থেকেই ফের তৃণমূলের প্রার্থী হচ্ছেন মহুয়া। সেই হিসাবে মহুয়ার নামই তৃণমূল প্রার্থীদের মধ্যে সবার আগে ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছিল।
সেই সঙ্গে মমতা এটাও জানিয়েছিলেন, ‘মহুয়ার সাংসদ পদ কেড়ে বিজেপির কোনও লাভ নেই। কয়েক মাস পরেই তো ভোট! মহুয়া তো আবার জিতবে, আবার ফিরবে! মহুয়াকে ওরা ভয় পায়। ও বিজেপির ঘুম উড়িয়ে দিয়েছিল। তাই ওকে তাড়িয়ে দিয়েছে। কিন্তু ও আবার ফিরবে।’ তৃণমূল নেত্রীর সেই বিশ্বাসের মর্যাদা দিয়েছেন কৃষ্ণনগর লোকসভা কেন্দ্রের ভোটাররা। মর্যাদা রেখেছেন খোদ মহুয়াও। সব থেকে বড় কথা মহুয়া যাতে সংসদে ফিরতে না পারেন তার জন্য বিজেপি চেষ্টার কোনও কসুর রাখেনি। কৃষ্ণনগরের রাজবধূ অমৃতা রায়কে দলের প্রার্থী হিসাবে তুলে ধরার পাশাপাশি মহুয়ার বিরুদ্ধে অমৃতার হয়ে প্রচারে আসেন খোদ নরেন্দ্র মোদি। তাও একবার নয়, দু-দুবার। কিন্তু তাতেও মহুয়ার জয়ে ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি বিজেপি। মহুয়া জিতেছেন ৫৬ হাজার ভোটের ব্যবধানে। পেয়েছেন প্রদত্ত ভোটের ৪৪ শতাংশেরও বেশি ভোট। আগামিকাল তিনি দ্বিতীয়বারের জন্য শপথ নিতে চলেছেন সংসদে। আর সেটাও চুপ করে দেখতে হবে মোদি বাহিনীকে।