মিঠুনকেও এবার ‘গদ্দার’ তকমা দিলেন মমতা
নিজস্ব প্রতিনিধি: আপনি ভাল অভিনেতা(Actor) হতেই পারেন। কিন্তু রাজনীতির(Politics) ময়দানে নামলে তখন আর প্রশংসা নয়, ধেয়ে আসে আক্রমণ। মিঠুন চক্রবর্তীরও(Mithun Chakrabarty) এখন কার্যত সেই একই দশা। জীবনের প্রথম দিকের বাম, তারপর তৃণমূল(TMC) হয়ে তিনি এখন হয়েছেন রাম। তিনিই এখন বাংলার বুকে তো বটেই দেশের মধ্যেও বিজেপির(BJP) অন্যতম তারকা প্রচারক। এবারেও মানে ২৪’র ভোটযুদ্ধেও তিনি নেমে পড়েছেন বিজেপির হয়ে প্রচার করতে। পদ্মশিবির থেকে তাঁকে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে উত্তরবঙ্গে। আর সেই উত্তরবঙ্গ থেকেই এদিন অর্থাৎ বৃহস্পতবার ১৮ এপ্রিল তাঁকে ‘গদ্দার’, ‘দো-আঁশলা’ বলে আক্রমণ শানলেন বাংলার অগ্নিকন্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। তৃণমূল নেত্রী চট করে কারোর নাম নিয়ে আক্রমণ করেন না। কিন্তু এদিন তিনি উত্তরবঙ্গের উত্তর দিনাজপুর জেলার ইসলামপুর থেকে মিঠুনকে নাম নিয়েই আক্রমণ করেছেন। এদিন ইসলামপুরে রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণীর হয়ে সভা করেন মমতা। সেই সভা থেকেই তিনি নিশানা বানান মিঠুনকে।
ঠিক কী বলেছেন মমতা মিঠুনকে নিয়ে? এদিনের সভা থেকে মমতা বলেন, ‘বিজেপি এখন জেতার জন্য ফিল্মস্টার থেকে মিনিস্টার সবাইকে আনছে ভোট করাতে। এই যে মিঠুন চক্রবর্তীও এসেছে প্রচার করতে। এই মিঠুনকেই আমি রাজ্যসভার এমপি করেছিলাম। তখন জানতাম না ও বাংলার আরও একটা বড় গদ্দার। আরএসএস অফিসে গিয়ে মাথা নীচু করে দিয়ে এসেছিল, শুধু নিজের ছেলেকে বাঁচানোর জন্য। মনে পড়ে, ওঁর ছেলেকে ধরেছিল, বিয়ের পিঁড়িতে হানা দিয়েছিল। ভয়ে আরএসএস অফিসে চলে গিয়েছিল। নিজের ছেলেকে বাঁচাতে গদ্দার চলে গেল আরএসএস অফিসে গিয়ে বলছে, আমি বিজেপির সেবক আছি। যারা দো আঁশলা, যাদের আদর্শ নেই, তাঁদের আমি মানুষ বলে মনে করি না। ও এত বড় গদ্দার আমি জানতাম না।’ মিঠুনকে নিয়ে মমতা এর আগে কোনওদিন এভাবে নাম নিয়ে আক্রমণ করেননি। তৃণমূলের তরফে এর আগে অবশ্য একাধিকবার মিঠুনকে আক্রমণ করা হয়েছে, মিঠুনও প্রতি আক্রমণ করেছেন। কিন্তু মমতার এই প্রথম মিঠুনের নাম নিয়ে আক্রমণ শানলেন।
তবে ঘটনা হচ্ছে, মিঠুনের দলবদলকে মমতা খারাপ চোখে দেখছেন। কিন্তু যে সভা থেকে তিনি এই আক্রমণ শানিয়েছেন, সেই সভা যে প্রার্থীর জন্য, তাঁর দলবদলকে তৃণমূলনেত্রী খারাপ বলে মনে করছেন না। রায়গঞ্জের তৃণমূল প্রার্থী কৃষ্ণ কল্যাণী পেশায় ব্যবসায়ী। একসময় তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হিসাবেই পরিচিত ছিলেন। কিন্তু সূত্রের দাবি, ভোটে লড়াই করার জন্য একাধিববার জোড়াফুল শিবিরে দরবার করেছিলেন কৃষ্ণ। কিন্তু না পেয়ে শেষে একুশের ভোটের আগে যোগ দেন বিজেপিতে। টিকিটও পেয়ে যান। রায়গঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্র থেকেই তিনি বিজেপির প্রার্থী হন। জিতেও যান। তারপরেই ফিরে আসেন তৃণমূলে। আর এবার তো তিনি তৃণমূলের প্রার্থী, তাও আবার লোকসভার নির্বাচনে, রায়গঞ্জ থেকেই। যদিও গায়ে তাঁর লেগে রয়েছে দলবদলুর তকমা। তাঁর দলবদল যদি দোষের না হয়, তাহলে তা মিঠুনের ক্ষেত্রে হবে কেন, প্রশ্ন ওয়াকিবহাল মহলের।