রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে মন্ত্রীদের জনসংযোগ বাড়াতে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
নিজস্ব প্রতিনিধি: একটা ভোট হয়ে গিয়েছে, আর একটা ভোট ২ বছর বাদেই দোরে কড়া নাড়া শুরু করে দেবে। সেই ভোটের মুখোমুখি হতে হবে রাজ্যের বুকে ১৫ বছর ক্ষমতায় থাকার পরে। মানে ভোটে নামতে হবে ১৫ বছরের অভাব, অভিযোগ, ক্ষোভ এবং প্রতিষ্ঠান বিরোধিতাকে সঙ্গে নিয়ে। একথা সত্য, সদ্য সদ্য হয়ে যাওয়া লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিরোধীদের পায়ের তলা থেকে মাটি আরও সরে গিয়েছে। শক্ত হয়েছে শাসকের পায়ের তলার মাটি। আসন কমেছে বিরোধীদের। আসন বেড়েছে শাসকের। তবুও ২ বছর বাদেই দোরে এসে কড়া নাড়বে বিধানসভা নির্বাচন(West Bengal Assembly Election 2026)। আর তাই এখন থেকেই রাজ্যের মন্ত্রীদের(State Ministers) জনসংযোগ(Public Relations) বাড়তে নির্দেশ দিয়ে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) সর্বোচ্চ নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। এদিন অর্থাৎ বুধবার নবান্নে(Nabanna) বসেছিল রাজ্য মন্ত্রিসভার(Cabinet Meeting) বৈঠক। আর সেই বৈঠকেই রাজ্যের মন্ত্রীদের এই নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্ন সূত্রে এমনটাই জানা গিয়েছে।
লোকসভা নির্বাচনে দেখা গিয়েছে রাজ্যের ২৯৪টি আসনের মধ্যে ৯০টি আসনে এগিয়ে আছে বিজেপি। তার মধ্যে আবার রাজ্যের বেশিরভাগ মন্ত্রীদেরই বিধানসভা কেন্দ্র রয়েছে। আছে শাসক দলের বেশ কিছু হেভিওয়েট নেতা তথা বিধায়কদের কেন্দ্রও। বিজেপির পাশাপাশি কংগ্রেস এগিয়ে আছে রাজ্যের ১১টি বিধানসভা কেন্দ্রে এবং বামেরা ১টি বিধানসভা কেন্দ্রে। বাকি ১৯২টি কেন্দ্রে এগিয়ে আছে তৃণমূল। রাজ্যে ক্ষমতা দখলের জন্য প্রয়োজন ১৪৮জন বিধায়কের সমর্থন। সেই হিসাবে এখনও তৃণমূল অনেকটাই এগিয়ে আছে। উনিশের ভোটেও দেখা গিয়েছিল এর থেকেও কম বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে থেকেও তৃণমূলকে ২১৫টি আসন দখল করতে। সেই হিসাবে ২৬’র বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূল হয়তো ২৫০টি আসন জয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েই ভোট ময়দানে অবতীর্ণ হবে। তবে সেই লক্ষ্য পূরণ হোক বা না হোক, মূল লক্ষ্য থাকবে বিজেপিকে বাংলার মাটিতে যতটা সম্ভব কম আসনে বেঁধে রাখতে। সেই সঙ্গে বামেদেরও প্রত্যাবর্তন ঠেকানো।
আর সেই লক্ষ্যপূরণের জন্য এদিন মুখ্যমন্ত্রী দলের মন্ত্রীদের জনসংযোগ বাড়াতে নির্দেশ দিয়েছেন। অনেকেই ভেবেছিলেন, এবারে লোকসভা নির্বাচনের পরে পরে মুখ্যমন্ত্রী হয়তো রাজ্য মন্ত্রিসভায় রদবদল করতে পারেন। পুরাতন কিছু মুখ বাদ দিয়ে নতুন কিছু মুখ তুলে আনতে পারেন। কারও কারও ডানা ছাঁটতে পারেন, কারও কারও দফতর বদলে দিতে পারেন। কারও হাতে বাড়তি দায়িত্ব যাবে, কারও বা হাত থেকে দফতর কেড়ে নেওয়া হতে পারে। কিন্তু নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী এখনই সেই পথে হাঁটতে চাইছেন না। মন্ত্রীদের কাজের পর্যালোচনা হবে ঠিকই, কিন্তু রদবদল এখনই নয়। সম্ভবত পুজোর আগে পরে করে সেই রদবদল হতে পারে। কিন্তু মন্ত্রীকে সংগঠনের কাজে নামানো হবে, কাউকে বা সংগঠন থেকে মন্ত্রিসভায় আনা হতে পারে। তবে সবটাই আপাতত ভাবনাচিন্তার স্তরে। এখনই যেটা করতে হবে সেটা হল বিভিন্ন উৎসবকে আঁকড়ে ধরে রাজ্যের মন্ত্রীদের নিজ নিজ এলাকায় ও জেলায় জনসংযোগে জোর দিতে হবে। যেতে হবে মানুষের কাছে। শুনতে হবে তাঁদের অভাব-অভিযোগ। সেই সব অভাব-অভিযোগের মীমাংসাও করতে হবে যত দ্রুত তা করা সম্ভব সেই ভিত্তিতে।