নির্দিষ্ট সময়ে জেলা প্রশাসনকে গ্রামোন্নয়নে খরচের হিসেব দিতে নির্দেশ মুখ্যমন্ত্রীর
নিজস্ব প্রতিনিধি: রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার উন্নয়ন(Rural Development) এবং আমজনতার মধ্যে পঞ্চায়েতী রাজের সুফল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যেই দেশে পঞ্চায়েত ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। কোনও রাজ্যে এই ব্যবস্থায় ৪টি স্তর রয়েছে, কোথাও ২টি স্তর আবার কোথাও বা রয়েছে ৩টি স্তর। বাংলার(Bengal) বুকে রয়েছে ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা(Three Tier Panchayati Raj)। এই ব্যবস্থায় সর্বোচ্চ স্তরে বা জেলা স্তরে রয়েছে জেলা পরিষদ, মধ্যম স্তর বা ব্লক স্তরে রয়েছে পঞ্চায়েত সমিতি এবং নিম্ন স্তর বা গ্রাম স্তরে রয়েছে গ্রাম পঞ্চায়েত। ২০১১ সালে রাজ্যের বুকে অবসান ঘটেছে ৩৪ বছরের বাম শাসনের। তারপর থেকে ক্ষমতায় আসা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের(Mamata Banerjee) সরকার রাজ্যের গ্রামীণ এলাকার এবং সেখানকার মানুষজনের উন্নয়নে সব থেকে বেশি জোর দিয়েছে। সেই সূত্রেই রাজ্যে প্রায় ৭০টির কাছাকাছি জনপরিষেবামূলক আর্থসামাজিক প্রকল্পও(Socio-Economic Projects) চালু করা হয়েছে। সেই সব পরিষেবা তৃণমূল স্তর পর্যন্ত পৌঁছাছে কিনা এবং বরাদ্দকৃত অর্থ নির্দিষ্ট সময়ে খরচ হচ্ছে কিনা সেটা জানতেই এবার নতুন এক নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, রাজ্যের সব জেলা প্রশাসনকে গ্রামোন্নয়নে খরচের হিসেব দিতে হবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই।
নবান্নের আধিকারিকদের দাবি, রাজ্যের অনুমোদিত পরিষেবা গ্রামীণ মানুষের কাছে আদৌ পৌঁছল কি না, তা মোটামুটিভাবে প্রতিফলিত হয় জেলা পরিষদ এবং পঞ্চায়েত সমিতির দেওয়া আয়-ব্যয়ের হিসেবে। তাই এবার থেকে বরাদ্দ অর্থ নির্দিষ্ট সময়ে খরচ করার হিসেব পাওয়া যাচ্ছে কিনা, তার ওপর নজর রাখবে রাজ্য প্রশাসন। গ্রামবাংলায় তৃণমূল স্তর পর্যন্ত পরিষেবা পৌঁছে দিতেই মুখ্যমন্ত্রীর এই কঠোরতা। সাম্প্রতিক একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের পোর্টালের মাধ্যমে আয়-ব্যয়ের হিসেব দেওয়ার ক্ষেত্রে জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতি মিলিয়ে রাজ্যের মোট ২৬টি বোর্ড যথেষ্ট পিছিয়ে রয়েছে। এই রিপোর্ট পেয়েই নড়েচড়ে বসেছে রাজ্য প্রশাসন। জনকল্যাণের লক্ষ্যে নেওয়া প্রকল্প যথাসময়ে শেষ করে হিসেব পেশ নিশ্চিত করতেই তলব করা হয়েছে ২৬টি জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির আধিকারিকদের। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হবে, পোর্টালে হিসেব পেশ না করার কারণ কী। ভবিষ্যতেও এই ধরনের গাফিলতি এড়াতে তাঁদের কী করণীয়, আধিকারিকদের সেটাও বোঝানো হবে।
নবান্নের আধিকারিকদের দাবি, রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য স্বচ্ছতা বজায় রেখে যথাসময়ে প্রতিটি প্রকল্পের কাজ শেষ করা। সেই লক্ষ্যেই এই উদ্যোগ গ্রহণ। রাজ্যের নিয়ম সম্পর্কে পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষ অবগত থাকবে, সেটাই প্রত্যাশিত। কয়েক বছর যাবৎ রাজ্য পঞ্চায়েত দফতরের পোর্টালের মাধ্যমে জেলা পরিষদ এবং পঞ্চায়েত সমিতির সারা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসেব পেশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ছোট থেকে বড় সমস্ত খরচই তুলতে হয় এই পোর্টালে। সেই পোর্টালে হিসেব তোলার বিষয়ে সম্প্রতি একটি সমীক্ষা করা হয়। তার রিপোর্টে Poor Performing হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ৩টি জেলা পরিষদ এবং ১২টি জেলার মোট ২৩টি পঞ্চায়েত সমিতিকে। তাই জেলা পরিষদের ও পঞ্চায়েত সমিতির আধিকারিকদের তলব করা হয়েছে। আগামী ২৫ জুন দুপুরে বিধাননগরে মৃত্তিকা ভবনে পঞ্চায়েত দফতরের অফিসে সেই বৈঠক হবে।