হকার সমস্যার সমাধানে আগামিকাল নবান্নে বৈঠক ডাকলেন মমতা
নিজস্ব প্রতিনিধি: সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন তিনি আগেই। এবার শুধু হয়ে গিয়েছে কাজ। কিন্তু তাতে কী সমস্যার সমাধান হবে? যাদের তিনি সরাতে বলেছিলেন, তাঁরাই রয়ে গিয়েছে বহাল তবিয়তে, আর যাদের সরাতে বলেননি তাঁদেরই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কার্যত বেছে বেছে বাঙালি বিক্রেতাদের তুলে দেওয়া হয়েছে আর রেখে দেওয়া হয়েছে ভিন রাজ্যের হিন্দিভাষী বিক্রতাদের। এই পরেই আগামিকাল নবান্নের(Nabanna) সভাঘরে কলকাতা(Kolkata) সহ রাজ্যের সব জেলার বুকে থাকা হকার সমস্যার(Hawkers Problem) সমাধানে বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। বৈঠকে থাকবেন রাজ্যের সব জেলার জেলা শাসক ও পুলিশ সুপারদের পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের কমিশনার এবং কলকাতার মেয়র। রাজ্যের সব থানার পুলিশ আধিকারিকেরা ভার্চুয়াল ভাবে বৈঠকে যোগ দেবেন। বৈঠক শুরু হবে বেলা ১২টা থেকে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কড়া নির্দেশের পরে এদিন থেকেই রাজ্যজুড়ে শুরু হয়ে গিয়েছে সরকারি জায়গা জবরদখল করে থাকা হকারদের উচ্ছেদ অভিযান। এদিন রাজ্যের একাধিক পুরসভা এলাকায় সেই অভিযান চালানো হয়। বাদ নেই শহর কলকাতাও। শহরের নানা প্রান্তে চলছে বুলডোজার। চিড়িয়াখানার সামনে থেকে ট্রায়াঙ্গুলার পার্ক, যদুবাবুর বাজার সর্বত্র বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে ঝুপড়ি দোকান। আর তার জেরে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন হকাররা। তাঁদের প্রশ্ন তাঁদের এই দোকানই তাঁদের রুটি রুজি জোগায়। দোকান ভেঙে দিলে চলবে কী ভাবে। আবার সল্টলেকের মতো জায়গায় দেখা যাচ্ছে, বাঙালি বিক্রেতাদের তুলে দিয়ে অবাঙালি হিন্দি বিক্রেতাদের রেখে দেওয়া হয়েছে। এই সব খবর মানবিক মুখ্যমন্ত্রীর কানে যেতে বেশি সময় লাগেনি। আর তারপরে পরেই আগামিকাল নবান্নের সভাঘরে হকার সমস্যার সমাধানে বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী।
আগামিকালের বৈঠলে রাজ্যের প্রতিটি জেলার জেলাশাসক, পুলিশ সুপারদের ছাড়াও ডাকা হচ্ছে রাজ্যের সব পুরসভার চেয়ারম্যান এবং পুরনিগমের মেয়র ও সচিবদের। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনে ২ দিন আগে থেকেই এলাকা এলাকায় ঘুরে পুলিশ কর্তারা দোকান সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেন। সল্টলেকের কলেজ মোড় থেকে শুরু করে গোদরেজ ওয়াটার সাইট পর্যন্ত, আলিপুর, গড়িয়াহাট চত্বর সব চষে বেড়ান পুলিশ কর্তারা। দোকানদারকে সতর্ক করা হয়। দোকান সরিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু তা না হওয়ায় একদিনের মধ্যেই বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয়।
একাধিক ক্ষেত্রে দেখা যায়, পুলিশ কর্তাদের পায়ে পড়েই কান্নায় ভেঙে পড়ছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অধিকাংশেরই বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা এখানে ব্যবসা করে আসছেন। সল্টলেকের খাবারের দোকান প্রতি দিন প্রচুর মানুষ খাবার খান, গড়িয়াহাটেও তাই, সেক্ষেত্রে এক লহমায় তাঁদের রুজি রুটি বন্ধ হয়ে গেল! পরিবার নিয়ে পথে বসতে হবে তাঁদের। শহরের বুকে এত হকার যাবে কোথায়? সে প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে। সোমবার নবান্নের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী পরামর্শ দিয়েছিলেন, যেন একটা জায়গায় ‘ফুড পার্ক’ তৈরি করে দেওয়া হয়। বৃহস্পতিবারের বৈঠকে হকারদের নিয়ে বড় কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় কিনা, সেটাই দেখার।