বিজেপিকে ধাক্কা দিয়ে মেচ সম্প্রদায়ের ঘোষণা, সমর্থন তৃণমূলকে
নিজস্ব প্রতিনিধি: ৩ জেলায় ছড়িয়ে আছেন দেড় লক্ষ ভোটার(One and Half Lakhs Voters) যাদের সবাই মেচ সম্প্রদায়ভুক্ত। উনিশের লোকসভা নির্বাচনে এদের সমর্থন আদায় করতে সক্ষম হয়েছিল বিজেপি(BJP)। তাঁদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল যে, উত্তরবঙ্গের পাহাড় ও ডুয়ার্সে মেচ ভাষায় চলা স্কুলগুলিকে সরকারিভাবে নথিভুক্ত করা হবে এবং মেচ উন্নয়ন বোর্ড গঠনের পাশাপাশি তাঁদের জাতিগত শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রক্রিয়ার সরলীকরণ করা হবে। কিন্তু বিগত ৫ বছরে এই সব দাবির ১টিও পূরণ করেনি কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদির সরকার। সেই বিশ্বাসভঙ্গের জেরে এবার উত্তরবঙ্গের মেচ সম্প্রদায়ের(Mech Tribe) তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, ২৪’র ভোটে(Loksabha Election 2024) তাঁরা আর বিজেপিকে সমর্থন করছেন না। তাঁদের সমর্থন থাকবে তৃণমূলের(TMC) দিকে। প্রসঙ্গত উত্তরবঙ্গে যে দেড় লক্ষ মেচ সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষ বা ভোটার রয়েছেন তাঁদের মধ্যে দার্জিলিং জেলায় বসবাস করেন প্রায় ১১ হাজার জন। জলপাইগুড়ি জেলায় ৩৫ হাজার জন এবং বাকিরা আলিপুরদুয়ার জেলার বাসিন্দা। স্বাভাবিক ভাবেই এই একটি সম্প্রদায়ের সমর্থন ৩টি লোকসভা কেন্দ্রের ফলাফলের ওপরেই প্রভাব ফেলতে চলছে।
জানান মেচ সম্প্রদায়ের অন্যতম নেতা দিলা শৈব্য জানিয়েছেন, বিজেপি তাঁদের যে কথা দিয়েছিল, সেই কথা তাঁরা রাখেনি। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা ব্যক্তিগত উদ্যোগে ১৩০টি প্রাথমিক স্কুল চালাচ্ছেন। সেখানে মেচ ভাষায় পঠনপাঠন হয়। স্কুলগুলিকে সরকারিভাবে নথিভুক্ত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল বিজেপি যা নিয়ে বিগত ৫ বছরে কেন্দ্র সরকার কিছুই করেনি। মেচ উন্নয়ন বোর্ড গঠনের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, সেই নিয়েও কিছু হয়নি। সব থেকে বড় কথা, মেচ সম্প্রদায়ের জাতিগত শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রক্রিয়ার সরলীকরণের যে দাবি বিজেপিকে জানানো হয়েছিল, সেই নিয়েও কেন্দ্র কিছুই করেনি। উনিশের ভোটের আগে এই সব দাবি পূরণের ব্যাপারে বিজেপি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেই মতো তাঁরা গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে সমর্থন জানিয়েছিলেন। কিন্তু ভোটে জেতার পর বিজেপি তাঁদের দেওয়া কোনও প্রতিশ্রুতিই বজায় রাখেনি। তাই তাঁরা এবার তৃণমূলকে সমর্থনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
প্রশ্ন শুধুমাত্র তৃণমূলকেই সমর্থন কেন? এউ উত্তরে দিলা শৈব্য জানিয়েছেন, ‘আমাদের সঙ্গে পাহাড়ের নেতা অনীত থাপার বৈঠক হয়েছে। তিনি মেচদের দাবির বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে তুলে ধরার আশ্বাস দিয়েছেন। আমাদের বিশ্বাস, মুখ্যমন্ত্রী এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নেবেন। তাই তৃণমূলকে সমর্থন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee) ক্ষমতায় আসার পর পাহাড় সহ এই অঞ্চলে বিভিন্ন জনজাতির জন্য একের পর এক উন্নয়ন বোর্ড গঠন করেছেন। মেচ সম্প্রদায়ের দাবির কথা তাঁর কানে এতদিন কেউ পৌঁছে দেননি। আমরা এবার আশাবাদী। তাই তৃণমূলকে সমর্থন জানাচ্ছি।’ এই ঘটনা প্রসঙ্গে দার্জিলিং জেলা(সমতল) তৃণমূলের সভানেত্রী পাপিয়া ঘোষ জানিয়েছেন, ‘বিজেপি মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় এসেছে। মানুষ সেটা বুঝতে পেরেছে। মেচরা সমর্থন জানানোয় ওদের স্বাগত।’