নদিয়ার শান্তিপুর কালনা ঘাট সংলগ্ন ভাগীরথীর পাড়ে হল দন্ড মহোৎসব
নিজস্ব প্রতিনিধি,শান্তিপুর: মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যের পার্ষদ রঘুনাথ দাস গোস্বামীকে শাস্তি দিয়েছিলেন নিত্যানন্দ প্রভু। সেই শাস্তি অনুসারে নিত্যানন্দ প্রভু কয়েক হাজার ভক্তকে চিড়া-দধি ভোজন করাতে রঘুনাথকে নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেদিনের সেই শাস্তি পরবর্তীকালে হয়ে ওঠে এক মহোৎসব। যা আজ ৫০০ বছর অতিক্রান্ত হয়েছে।সেরকমই এই উৎসব পানিহাটিতে হয়ে আসলেও এখন নদিয়া জেলার অনেক জায়গাতেই হয়ে আসছে, তেমনি নদিয়ার (Nadia)শান্তিপুর কালনা ঘাট সংলগ্ন এলাকায় ভাগীরথীর পাড়ে অনুষ্ঠিত হল দন্ড মহোৎসব(Dando Mahatsov) ।
প্রায় ২০০ জন ভক্তকে দেওয়া হলো প্রসাদ। তবে কি এই দন্ড মহোৎসব? এর পেছনে রয়েছে এক ইতিহাস আজ থেকে ৫০০ বছর আগের কাহিনি। দিনটি ছিল আজকের দিন। ১৫ই জুন। হুগলি জেলার অন্তর্গত শ্রীকৃষ্ণপুরের জমিদার শ্রীগোবর্ধন মজুমদার। যার সেইসময়ে মাসিক আয় ছিল বিশ লক্ষ স্বর্ণ মুদ্রা। তাঁর একমাত্র পুত্র হলেন শ্রীচৈতন্য পার্ষদ রঘুনাথদাস গোস্বামী।সব ঠিক ঠাকই চলছিল। কিন্তু আচমকা একদিন ঘটে গেল সেই অনভিপ্রেত ঘটনা। শ্রী নিত্যানন্দ প্রভুর আশীর্বাদ না নিয়ে রঘুনাথ সেদিন শ্রী চৈতন্য মহাপ্রভুর কৃপাশীষ লাভ করার চেষ্টা করেছিলেন। এ কথা জানা মাত্রই বিরাগভাজন হন তিনি নিত্যানন্দ প্রভুর। তিনি রঘুনাথকে এজন্য শাস্তি দেবার সিদ্ধান্ত নেন।
রঘুনাথকে(Raghunath) জানিয়ে দেন- তোমাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে। প্রস্তুত হও। রঘুনাথ হাসি মুখে নত মস্তকে শাস্তি মাথা পেতে নেন। তখন শ্রী নিত্যানন্দ প্রভু বলেন- ‘রঘুনাথ, তোমাকে শ্রী শ্রী নিত্যানন্দ-গৌরাঙ্গের ভক্তদের চিড়া-দধি ভোজন করাতে হবে। এটাই হল তোমার দন্ড। আনন্দের সঙ্গে রঘুনাথ সেদিন এই দন্ড গ্রহণ করেছিলেন।”এই অনুষ্ঠানের মতোই এখন এই দন্ড মহৎসবের উৎসব নদীয়ায় হওয়াতে পানিহাটির মেলায় অনেকেই না গিয়ে কাছাকাছি এই উৎসবে মিলিত হচ্ছেন। তাতে করে দন্ড মহতসব এখন মিলন উৎসবে পরিণত হতে চলেছে নদিয়া জুড়ে।