মোদির সভা আরামবাগে, তবুও এগিয়ে থাকবে তৃণমূলই
নিজস্ব প্রতিনিধি: দোরগড়ায় কড়া নাড়ছে লোকসভা নির্বাচন(General Election 2024)। সেই নির্বাচনেই লক্ষ্য, ‘আপকে বার ৪০০ পার’। ঘোষণা খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির(Narendra Modi)। সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য বাংলা থেকে আবার ৩৫টি আসন দখলের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সেই সূত্রেই আগামী ১ মার্চ থেকে বাংলায় সভা করা শুরু করতে চলছেন প্রধানমন্ত্রী। সেটাও আবার শুরু হচ্ছে আরামবাগ লোকসভা(Aarambag Constituency) কেন্দ্র থেকে যেখানে বিজেপি উনিশের ভোটে হেরেছিল ১১৪২ ভোটে। সেই সভা ঘিরে বিজেপির(BJP) অন্দরে এখন সাজ সাজ রব। জনসভার সম্ভাব্য স্থান হিসেবে কালীপুরকে বেছে নেওয়া হয়েছে। কিন্তু তৃণমূলের(TMC) দাবি, খোদ প্রধানমন্ত্রী এসে সভা করলেও ২৪’র ভোটে আরামবাগ নিজেদের দখলেই রাখবে জোড়াফুল শিবির। সমীক্ষাও সেই হিসাবই তুলে ধরছে। নেপথ্যে থাকছে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোণা বিধানসভা কেন্দ্র যা এই লোকসভার অন্তর্গত।
আরামবাগে প্রধানমন্ত্রীর সভা হবে, এটা শুনেই উচ্ছ্বসিত বিজেপির নেতাকর্মীরা। বিজেপির আরামবাগ সংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষ জানিয়েছেন, ‘রাজ্য থেকে আমায় এই কর্মসূচির কথা জানানো হয়েছে। আমরা এই সভার প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছি। পশ্চিমবঙ্গে সীমাহীন দুর্নীতি হয়েছে। সকলেই তৃণমূলের থেকে মুক্তি পেতে চাইছে। গত লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল প্রশাসনকে কাজে লাগিয়ে চুরি করে আমাদের ক্যান্ডিডেটকে হারিয়েছিল। এবারের ভোটে আমরা যে জিতব সেই বিষয়ে ১০০ শতাংশ নিশ্চিত।’ ঘটনা হচ্ছে উনিশের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ১ হাজারের সামান্য কিছু ব্যবধানে ভোটে হেরেছিল ঠিকই, কিন্তু একুশের ভোটে এই লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা আরামবাগ, গোঘাট, খানাকুল ও পুরশুড়া বিধানসভা বিজেপি দখল নিলেও পঞ্চায়েত ভোটে সেই সাফল্য তাঁরা আর ধরে রাখতে পারেনি। আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে থাকা চন্দ্রকোণার ২টি ব্লকে, গোঘাটের ২টি ব্লকে, আরামবাগ ও পুরশুড়া ব্লকে ও খানাকুলের ১টি ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতি গিয়েছে তৃণমূলের দখলে। শুধুমাত্র খানাকুলের ১টি ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতি রয়েছে বিজেপির দখলে। আবার আরামবাগ, চন্দ্রকোণা, ক্ষীরপাই ও রামজীবনপুর পুরসভাও রয়েছে তৃণমূলের দখলে। এই অবস্থায় বিজেপি কীভাবে আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্র দখল করবে, তা নিয়ে প্রশ্ন ঘুরছে বিজেপিরও অন্দরে।
একই সঙ্গে সামনে এসেছে একটি স্মীক্ষার রিপোর্টও। তাতে দাবি করা হয়েছে গোঘাট, খানাকুল, পুরশুড়া ও আরামবাগ এই ৪টি বিধানসভা কেন্দ্রেও ২৪’র ভোটে লিড পাবে বিজেপি। গোঘাট ও আরামবাগ থেকে ৫ হাজার কে ১০ হাজার ভোটের লিড পাবে বিজেপি। পুরশুড়া থেকে ১৫ হাজার ও খানাকুল থেকে ২০ হাজার ভোটের লিড পাবে পদ্মশিবির। সব মিলিয়ে ৪৫ হাজার ভোটের লিড মিলবে ওই ৪ বিধানসভা কেন্দ্র থেকে। কিন্তু বাকি ৩টি বিধানসভা কেন্দ্রে লিড পাবে তৃণমূল। এর মধ্যে তারকেশ্বর ও হরিপাল থেকে ১৫ হাজার করে ৩০ হাজার ভোটের লিড পাবে জোড়াফুল। চন্দ্রকোণা থেকে মিলবে ২০ হাজার ভোটের লিড। সব মিলিয়ে ৩টি বিধানসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পাবে ৫৫ হাজার ভোটের লিড। তাই প্রায় ১০ হাজার ভোটের লিড নিয়েই আরামবাগ লোকসভা কেন্দ্র ধরে রেখে শেষ হাসি হাসবে জোড়াফুল শিবিরই। আর তাই মোদির সভা নিয়ে বিন্দুমাত্র উদ্বিগ্ন নয় আরামবাগের জোড়াফুল শিবির। তাঁদের বরঞ্চ দাবি, যে বামেদের ভোট পেয়ে বিজেপির এই বাড়বাড়ন্ত তাঁরাই এবার থাবা বসাবে পদ্মের ভোটে। তাই প্রধানমন্ত্রী আরামবাগে ১টা কেন ১০০টা সভা করলেও হারবে সেই বিজেপিই।