নবদ্বীপে একরত্তি প্রিয়াঙ্কার মুখে হাসি ফোটালো 'এই মুহূর্তে '
নিজস্ব প্রতিনিধি,নবদ্বীপ: ' এই মুহূর্তের' তৎপরতায় এবং রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের বিশেষ সহযোগিতায় মুখে হাসি ফুটেছে নবদ্বীপের প্রিয়াঙ্কার। কারণ তাকে আর রাস্তায় ল্যাম্পপোস্টের আলোয় বসে আঁকিবুকি কাটতে হবে না। সবার মত তাদের ঘরেও জ্বলছে আলো, ঘুরছে পাখা। এবার প্রিয়াঙ্কা স্বপ্ন দেখছে স্কুল যাওয়ার। অসুস্থ বাবা আর্জি জানিয়েছে আমজনতার কাছে তাদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য। নবদ্বীপে চার নম্বর ওয়ার্ডে প্রিয়াঙ্কার বাড়িতে রবিবার সন্ধ্যার মধ্যে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস(Minister Arup Biswas)। প্রিয়াঙ্কার মুকবধির মা আর অসুস্থ বাবা দুজনেই তাদের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের কাছে।মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল কোনও মানুষের বাড়ি যেন অন্ধকার না থাকে, তার জন্য বিদ্যুৎ দপ্তর সদা সচেষ্ট। মাননীয় মন্ত্রী শ্রী অরূপ বিশ্বাস সবাইকে অনুরোধ করেছেন এরকম ঘটনার খবর যদি কারও কাছে থাকে তাহলে তা অবিলম্বে তাকে জানানোর জন্য। চলুন এবার দেখে নেওয়া যাক কি ঘটেছিল নবদ্বীপের চার নম্বর ওয়ার্ডে।
ফিরে দেখা ............. একেই কি বলে প্রদীপের নিচে অন্ধকার? কিন্তু না এই প্রশ্নবাণ গুলিকে ধুলিস্যাৎ করে দিয়েছেন রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী(Power Minister)। এই মুহূর্তের কাছে এই সংবাদটি আসার পর সেটিকে প্রকাশ করার আগে রাজ্যের বিদ্যুৎ দপ্তরের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছিল যদি ওই একরত্তি মেয়েটির বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়া যায়। এই মুহূর্তের সেই অনুরোধে সাড়া দেয় বিদ্যুৎ দফতর। রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের নির্দেশে রবিবার রাতের মধ্যে ওই বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। অতি দ্রুত এই মহৎ কাজ সম্পন্ন করার জন্য রাজ্যের বিদ্যুৎ দপ্তরকে সাধুবাদ জানায় এই মুহূর্তে (Ei Muhurte)।
এবার আসা যাক ঘটনাটা কি ঘটেছিল সেই তথ্যে। এই মুহূর্তের সাংবাদিক সুব্রত রায়ের কাছে একটি প্রতিবেদন আসে তা হল--- চারিদিকে আলোর রোশনাইয়ের বিপ্রতীপে এখনও হতদরিদ্র একটি পরিবারের বাড়িতে পৌঁছায়নি বিদ্যুতের আলো। অগত্যা পড়াশোনার জন্য রাস্তার আলোকেই বেছে নিতে হল নবদ্বীপের ছোট্ট একটি মেয়েকে। নটা বছর পার করে ১০ বছরে পা দিয়ে এখনও বিদ্যালয়ের মুখ দেখেনি প্রিয়াঙ্কা। মূক ও বধির মাকে সঙ্গে নিয়ে রাস্তার আলোকে সে বেছে নিল পঠন পাঠনের স্থান হিসেবে। পথের ধারে রাস্তার আলোতেই খাতা কলম নিয়ে চলছে আঁকি বুকি।
ঘড়ির কাঁটা তখন এগারোটা ছুঁই ছুঁই। প্রিয়াঙ্কা নির্বিকারভাবে এক মনে খাতায় এঁকে চলেছে বিভিন্ন ড্রইং। এমনই এক করুণ দৃশ্য চোখে পড়ল চৈতন্যভূমি নবদ্বীপের ব্যস্ততম এলাকা হীরালাল পাল রোডে(Hiralal Pal Road)। এ হেন পরিস্থিতিতে পড়াশোনার ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই। দুমুঠো অন্ন যোগাতে মায়ের সঙ্গে সকাল সকাল বেরিয়ে পড়তে হয় এই নবদ্বীপ ধাম শহরের বিভিন্ন প্রান্তে। সারাদিন চেয়ে চিন্তে যা জোটে, তাতেই চলে তিন জনের সংসার। আর আঁকিবুকি? রাস্তার আলোতেই কি শেষ হয়ে যাবে এই বাচ্চা মেয়েটির ভবিষ্যৎ? কিন্তু সেই মেয়েটিকে অন্ধকারে হারিয়ে যেতে দিল না রাজ্যের বিদ্যুৎ দফতর। সাংবাদিকতায় দীর্ঘদিন যুক্ত থাকা, সুব্রত রায় আগাম খবরটি করে সমালোচনার ঝড় না তুলে রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের দৃষ্টিগোচর করে সেই বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছানোর পর সংবাদটি প্রকাশ করে। উদ্দেশ্য ছিল চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে সঠিক দায়িত্ব পালন করার। আশা করি পাঠকরা এই প্রতিবেদন পড়ে একজন ক্ষুদ্র সাংবাদিক হিসেবে সঠিক দায়িত্ব পালন করেছি কিনা তা জানাবেন। আগামী জীবনে ছোট্ট প্রিয়াংকার জন্য রইল এই মুহূর্তের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা।