Rath Yatra 2024: কেন ১৫ দিন ধরে অসুস্থ থাকেন জগন্নাথদেব?
নিজস্ব প্রতিনিধি: সারাবছর ভক্ত সমাগম। তারই মাঝে শ্রীক্ষেত্রনিবাসী খাদ্যরসিক জগন্নাথ মহাপ্রভুর চলতে থাকে দিনে ৫৬ রকমের খাবারের পদ। দাদা বলভদ্র ও বোন সুভদ্রাকে নিয়ে তিনি রোজ ভোরে গানবাজনা শুনে ঘুম থেকে উঠে পড়েন। তারপর চলে তাঁদের মুখ ধোয়ার পর্ব ও দর্পণ স্নান। এরপর নিয়ম মেনে শুরু হয়ে যায় আহারপর্ব।
কথিত আছে, একবার মাধবদাস নামে মহাপ্রভুর এক একনিষ্ঠ ভক্ত খুব জ্বরে পড়েছিল। কিন্তু, মাধবদাসের সেবা করার জন্য কেউই ছিলনা। তাই, ভক্তের কষ্ট মহাপ্রভু সহ্য করতে না পেরে তিনি নিজেই ভক্তের সেবায় নিয়োজিত হয়েছিলেন। ভক্ত মাধবদাস ভগবানের সেবায় শীঘ্র সুস্থ হয়ে ওঠে কিন্তু, মধবদাসের অসুস্থতার আরও ১৫ দিন বাকি ছিল। তাই মহাপ্রভু ভক্তের অসুস্থতা নিজে গ্রহণ করেছিলেন। সেই দিনটি ছিল জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমা। মহাপ্রভু শ্রীমন্দির গিয়ে ১০৮ কলসি জলে স্নান করে প্রবল জ্বরে কাবু হয়ে পড়েন এবং নিজেই নির্জনে নিভৃতে বসবাস শুরু করেন। একে বলা হয় আনাসার।
সেই রীতি মেনেই প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ পূর্ণিমা তিথিতে মহাপ্রভু জগন্নাথ, বলরাম ও সুভদ্রাকে শ্রীমন্দির থেকে বাইরে এনে ১০৮ ঘড়া জলে স্নান করানোর প্রথা রয়েছে। প্রচলিত বিশ্বাস অনুযায়ী স্নান করার পর জগন্নাথ বলভদ্র ও সুভদ্রার জ্বর আসে। এরপর ১৫ দিন বন্ধ থাকে শ্রীমন্দিরের গর্ভগৃহের দরজা। এই সময় কোন দর্শনার্থী মহাপ্রভুকে দর্শন করতে পারেনা। কথিত আছে এই সময় মন্দিরে পূজাপাঠও বন্ধ থাকে ও তাঁদের অনেক ওষুধ দেওয়া হয়। প্রবল অসুস্থতার জন্য এই ১৫ দিন ভগবানকে ৫৬ ভোগ না দিয়ে শুধু সাধারণ ভোগই নিবেদন করা হয়।
এই ১৫ দিন লেপ কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে থাকেন জগন্নাথদেব। করা হয় তাঁর অঙ্গরাগ। ভেষজ রঙ দিয়ে রাঙানো হয় জগন্নাথ মহাপ্রভুকে। কবিরাজের পাঁচন খেয়ে জ্বর ছাড়লে হয় নবযৌবন উৎসব। এই ১৫ দিন অসুস্থতার মধ্যে কাটিয়ে মহাপ্রভু জগন্নাথের ভাই বোনকে নিয়ে সাত দিনের জন্য মাসির বাড়ি বেড়িয়ে আসাই হল রথযাত্রা, যা আষাঢ় মাসের শুক্লা দ্বিতীয়া তিথিতে পালিত হয়।