বাংলাকে নিয়ে সঙ্ঘের নয়া পরিকল্পনা, শুভেন্দুর পদে আসতে পারেন দিলীপ
নিজস্ব প্রতিনিধি: দাবি ছিল উনিশের ফলকে ছাপিয়ে যাবে। ১৮টি আসনই ধরে রেখে নতুন আরও বেশ কিছু আসন পেয়ে যাবে দল। দেখা গেল, নতুন ২টি আসন দখল করা গেলেও গতবারের জেতা ৮টি আসন হাতছাড়া হয়েছে। এদিকে বছর ২ বাদেই রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন। সেই ভোটের দিকে লক্ষ্য রেখেই এবার বাংলাকে(Bengal) নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে বিজেপির আঁতুড়ঘর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ বা RSS। বঙ্গ বিজেপি(BJP) সূত্রে জানা গিয়েছে, লোকসভা নির্বাচনে বাংলার বুকে বিজেপির বেহাল দশা দেখে সঙ্ঘ থেকে বেশ কিছু বড় পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। সেই সব পরিকল্পনার অন্যতম হল শুভেন্দু অধিকারীর(Suvendu Adhikari) ডানা ছাঁটা। তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে রাজ্যের বিরোধী দলনেতার পদ থেকে। পরিবর্তে সেই পদে আনা হবে দলের প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষকে(Dilip Ghosh)। তবে তার জন্য দিলীপকেও বিধানসভার উপনির্বাচনে জয়ী হতে হবে।
সূত্রের দাবি, এবার রাজ্যের ৩৪টি আসনেই নিজের পছন্দের প্রার্থীদের পদ্ম প্রতীক পাইয়ে দিয়েছিলেন শুভেন্দু। কিন্তু সেই ৩৪ জনের মধ্যে মাত্র ৭জন জিতেছেন, বাকিরা হেরেছেন। এখন আদি বিজেপি নেতাকর্মীদের দাবি, বাংলায় দলের চরম বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ বিরোধী দলনেতা। তাঁর পরামর্শ মেনে নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বঙ্গ-বিরোধী একের পর এক সিদ্ধান্ত। আর সেই সিদ্ধান্তে যতটা না তৃণমূলকে চাপে ফেলা গিয়েছে, তার চেয়ে আমজনতার কাছে বিজেপির প্রতিহিংসার রাজনীতি আরও প্রকট হয়েছে। বস্তুত সেই কারণেই সাধারণ মানুষের ক্ষোভের ঝড়ে বাংলায় উড়ে গিয়েছে বিজেপি। শুভেন্দু বিরোধী দলনেতার দায়িত্বে আসার পর অমিত শাহের আশীর্বাদে ক্ষমতাশালী হয়ে বাংলার আদি বিজেপি নেতাদের কোণঠাসা করে দিয়েছিলেন। একুশের ভোটের পরই শুভেন্দুর প্রস্তাব মেনে বঙ্গ বিজেপির ‘সফলতম’ সভাপতি দিলীপকে সরিয়ে সুকান্ত মজুমদারকে দায়িত্বে আনা হয়। তারপর থেকে রাজ্যে যতগুলি বিধানসভার উপনির্বাচন ও লোকসভা ভোট হয়েছিল তার প্রত্যেকটিই মুখ থুবড়ে পড়েছে বিজেপি। এবারেও সেই হারের ধারাবাহিকতাই বজায় থাকল। আর তারপরে পরেই শুভেন্দুকে নিয়ে নতুন করে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে সঙ্ঘের এ রাজ্যের শাখা।
সূত্রে জানা গিয়েছে, সঙ্ঘ চাইছে মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে প্রার্থী হোন দিলীপ। একুশের ভোটে মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছিলেন তৃণমূলের প্রার্থী তথা অভিনেত্রী জুন মালিয়া। সেই জুনকেই মেদিনীপুর লোকভা কেন্দ্রে প্রার্থী করে এবার বাজিমাত করেছে তৃণমূল। যেহেতু জুন এখন সাংসদ, তাই তাঁকে ইস্তফা দিতে হবে বিধায়িকা পদ থেকে। তার জেরে আগামী ৬ মাসের মধ্যে সেখানে উপনির্বাচন হবে। সঙ্ঘ চাইছে, সেই নির্বাচনেই বিজেপির হয়ে সেখানে লড়াই করুন দিলীপ। কেননা, লোকসভা নির্বাচনে মেদিনীপুরের কেন্দ্র থেকে জুন জয়ী হলেও মেদিনীপুর শহরে এগিয়ে গিয়েছে বিজেপি। গ্রামীণ এলাকায় অবশ্য তৃণমূল এগিয়ে থেকেছে। কিন্তু দিলীপ প্রার্থী হলে মেদিনীপুর বিধানসভা কেন্দ্রের উপনির্বাচন নিঃসন্দেহে বাড়তি আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। যদিও সেই নির্বাচনে দিলীপকে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রার্থী করতে না চাইলে বা প্রার্থী করলেও দিলীপ জিততে না পারলে শুভেন্দুই হয়তো বিরোধী দলনেতার পদে থেকে যেতে পারেন।