মানহানির মামলায় ৫০ লক্ষ টাকা জরিমানা সাকেতের, রায় দিল্লি হাইকোর্টের
নিজস্ব প্রতিনিধি: বড়সড় বিপাকে পড়ে গেলেন বাংলার শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের(TMC) জাতীয় মুখপাত্র(National Spoke Person) এবং দলের রাজ্যসভার সাংসদ(Rajyasabha MP) সাকেত গোখেল(Saket Gokhale)। এদিন অর্থাৎ সোমবার দিল্লি হাইকোর্ট(Delhi High Court) তাঁকে একটি মানহানির মামলায়(Defamation Case) দোষী সাব্যস্ত করে ৫০ লক্ষ টাকার জরিমানা(50 Lakh Rupees Fine) ধার্য করেছে। সেই সঙ্গে সোশ্যাল মিডিয়ার পাশাপাশি একটি সর্বভারতীয় বহুল প্রচারিত সংবাদপত্রে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে নির্দেশ দিয়েছে। প্রাক্তন কূটনীতিক লক্ষ্মী পুরী সাকেতের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছিলেন। লক্ষ্মী পুরী শুধু আমলাই নন, কেন্দ্রীয় পেট্রলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীর স্ত্রীও। স্বাভাবিক ভাবেই এই ঘটনায় রাজনীতিও এখন জড়িয়ে গিয়েছে। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে দিল্লি হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা যাবে কিনা তা নিয়ে আইনি পরামর্শ নিচ্ছেন সাকেত।
জানা গিয়েছে, রাষ্ট্রসঙ্ঘে নিযুক্ত ভারতের প্রাক্তন অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি-জেনারেল লক্ষ্মী পুরী সম্পর্কে ট্যুইট করেছিলেন সাকেত। ২০২১ সালের ১৩ জুন এবং ২৬ জুন সাকেত তাঁকে নিয়ে ট্যুইটে অভিযোগ করেন, লক্ষ্মী পুরী আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিহীন রোজগারে সুইৎজারল্যান্ডে জমিবাড়ি কিনেছেন। সাকেত ওই ট্যুইটে লক্ষ্মী পুরীর স্বামী কেন্দ্রীয় পেট্রলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরীর নামও যুক্ত করেন। সাকেতের সেই অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁর বিরুদ্ধে দিল্লি হাইকোর্টে মানহানির মামলা করেন লক্ষ্মী পুরী। আদালতে তিনি জানান, সাকেত গোখেলের অভিযোগ ভিত্তিহীন। এতে তাঁর মানহানি হয়েছে, তাঁর নামে সমাজে মিথ্যা অপবাদ ছড়ানোর চেষ্টা করেছেন সাকেত। একই সঙ্গে তিনি জানান, রাষ্ট্রসংঘের বাণিজ্য সংক্রান্ত সম্মেলনে ভারত সরকার তাঁকে মোতায়েন করেছিল। সেই সূত্রে সুইৎজারল্যান্ডে ছিলেন তিনি। তাই সাকেত যে ট্যুইট করেছেন তা ‘অবমাননাকর’।
আদালতে লক্ষ্মী পুরীর আইনজীবী সওয়াল করে বলেছিলেন, ‘লক্ষ্মী পুরী কোনও জনপ্রতিনিধি নন। ফলে তাঁর সহমতি ছাড়া তাঁর ব্যক্তিগত লেনদেন খতিয়ে দেখা যেতে পারে না।’ পালটা সাকেতের আইনজীবী সওয়াল করেন, ‘প্রকাশ্য জীবনে রয়েছেন এমন যে কারও সম্পত্তি নিয়ে যে কোনও নাগরিক প্রশ্ন তুলতে পারেন।’ যদিও আদালত সাকেতের আইনজীবীর মতকে প্রধান্য দেননি। তারপরেই আদালত সাকেতকে দোষী সাব্যস্ত করে ৫০ লক্ষ টাকার মানহানির ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে আদালত জানিয়েছে, সাকেতকে সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখিত ভাবে ক্ষমা চাইতে হবে এবং সেই পোস্ট পরবর্তী ৬ মাস তাঁর পেজে বা হ্যান্ডেলে রাখতে হবে। সেই সঙ্গে আগামী ৮ সপ্তাহের মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠিত সর্বভারতীয় সংবাদপত্রে ক্ষমা চাইতে হবে।